বিএনএ, ঢাকা : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা আজ থেকে শুরু হয়েছে। বুধবার (১ নভেম্বর) থেকে পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সেই হিসাবে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। তাই সব প্রস্তুতি গুছিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচনের পরিবেশ অনুকূল বা প্রতিকূল থাকুক, আর কোনো অপশন নেই। সংবিধানে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আজ থেকেই ইসির সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, গাড়িচালক, নিরাপত্তা প্রহরীসহ সংশ্লিষ্টদের সব ছুটির দিনে অফিস করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাই তারা নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাপ্তাহিক এবং সরকারি ছুটি কোনোটাই ক্যট্যতে প্যরবেন না।
নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলেও সরকারি কর্মচারীদের প্রেষণে নিয়োগ করে নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয় তাদের। তাই সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গেও ইসি আজ বসছে। ১১টি আলোচ্যসূচিতে করণীয় নির্ধারণ করা হবে আন্তঃমন্ত্রণালয় এ বৈঠক।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে— ভোটকেন্দ্রের স্থাপনা মেরামত ও ভৌত অবকাঠামো সংস্কার; পার্বত্য বা দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারে নির্বাচনী মালামাল পরিবহন এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভোটকেন্দ্রে আনা-নেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ; নির্বাচনী প্রচার, উদ্বুদ্ধকরণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রচার মাধ্যম কর্তৃক ব্যবস্থা গ্রহণ; দেশি বা বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগে সহায়তা প্রদান; পোস্টাল ব্যালটে ভোটপ্রদানের বিষয়ে সহযোগিতা; নির্বাচনে শান্তিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ; ঋণ খেলাপি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, সংকলন ও প্রদান বিষয়ক কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত; নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন এবং মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শোডাউন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ; বার্ষিক ও পাবলিক পরীক্ষার সময়সূচি পর্যালোচনা; দৈনন্দিন আবহাওয়ার পূর্বাভাস সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা ও নির্বাচনী এলাকায় বিদ্যমান নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী অপসারণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, নভেম্বরের প্রথমার্ধেই তফসিল দেবে নির্বাচন কমিশন। আর ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই অনুষ্ঠিত হবে সংসদ নির্বাচন। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষের দিকে ঘোষণা করা হতে পারে তফসিল। তার আগে বাংলাদেশ টেলিভিশন সিইসি’র দেওয়া জাতির উদ্দেশে ভাষণ রেকর্ড করবে। আর এই ভাষণেই তিনি তফসিল দিয়ে দেবেন।
সবশেষ ২০২২ সালের হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন। আর নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন। এছাড়া হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৩৭ জন। তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভূক্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করায় এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তাই এবার ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষের সংখ্যা বাড়ছে পাঁচ শতাংশের মতো।
অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, সংসদ নির্বাচনের জন্য সব মিলিয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। এই ব্যয়ের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ রাখা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়, আর এক-তৃতীয়াংশ রাখা হয়েছে নির্বাচন পরিচালনার পেছনে। ৬৫ শতাংশ ব্যয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর পেছনে যাবে। আর পরিচালনা ব্যয় হবে ৩৫ শতাংশ।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম/ হ্যসন্যহেন্য