23 C
আবহাওয়া
১১:১২ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রাকসুর টাকা যাচ্ছে কোথায়?

রাকসুর টাকা যাচ্ছে কোথায়?


।। সৈয়দ সাকিব।।
বিএনএ, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) অচল রয়েছে ৩৩ বছর। নির্বাচন না হলেও একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতি বছর ছাত্র সংসদ ফি বাবদ নেওয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। আবাসিক হোক কিংবা অনাবাসিক, তাকে বাধ্যতামূলক ৩০ টাকা হারে দিতে হচ্ছে সংসদ ফি। প্রায় তিন যুগ ধরে রাকসু অচল থাকলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই খাতে ফি নেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

হিসেব কষে দেখা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে তার ৫ বছরের শিক্ষা জীবনে রাকসু বাবদ ফি দিতে হচ্ছে সর্বমোট ২২৫ টাকা। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ার ফলে, তৈরি হচ্ছে না রাকসু বডি। এতে করে নির্দিষ্ট ফি দিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি-নির্ধারণে তার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পারছে না।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাবিতে বর্তমানে নিয়মিত শিক্ষার্থী আছেন ২৬ হাজার ৩১৫ জন। ফলে প্রতি বছর রাকসু ও হল সংসদ ফান্ডে জমা হচ্ছে ১১ লাখ ৮৪ হাজার ১৭৫ টাকা। শিক্ষার্থী সংখ্যা কিছুটা কমিয়ে ধরলেও ৩৩ বছরে কেবল রাকসু ফান্ডেই জমা থাকার কথা প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা।

ছাত্র সংসদ ফি থেকে প্রাপ্ত এই মোটা অঙ্কের টাকা আসলে কোথায় যাচ্ছে?—এমন প্রশ্নের উত্তরে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ ড. মো. জাফর সাদিক জানান, “ছাত্র সংসদের টাকা ফান্ডেই জমা আছে। আমি জয়েন করার আগে একবার স্পোর্টস প্রোগ্রামের জন্য মনে হয় এখান থেকে খরচ করা হয়েছিল। এছাড়া আর কোনো খাতে রাকসুর টাকা খরচ হয়নি। রাকসু নির্বাচন যখন হবে, তখন নিয়মানুযায়ী যেভাবে টাকাটা খরচ হওয়ার কথা সেভাবেই হবে।”

নির্বাচন না দিয়ে ফি নেওয়া কতটা যৌক্তিক এমন প্রশ্নের জবাবে রাকসুর এই কোষাধ্যক্ষ বলেন, “আপনি এসব প্রশ্ন সভাপতিকে জিজ্ঞেস করেন; আমাকে নয়।”

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান রাকসু ফি নেওয়ার যৌক্তিকতা নেই উল্লখ করে বলেন, “যেটা ফাংশনাল না বছরের পর বছর ধরে, সেই খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নেওয়া হচ্ছে। নীতিগতভাবে তো নয়ই, আইনগতভাবেও এর কোনো যৌক্তিকতা থাকার কথা নয়। রাকসু যেহেতু ফাংশন করছে না, আমি মনে করি এই বাবদ ফি আদায় অবিলম্বে স্থগিত করা উচিত।”

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তর এ বিষয়ে বলেন, “আমরা সবার আগে চাই রাকসু নির্বাচন। রাকসু কার্যকর হলে, এই ফান্ডের অর্থ নিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ প্রশাসনের কাছে কৈফিয়ত চাইবে। তবে যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে রাকসু ফি সাময়িকভাবে স্থগিত করা যেতে পারে।”

রাকসু ফান্ডে বর্তমানে কত টাকা জমা আছে এবং কী খাতে এই টাকা খরচ হয় তা জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামাণিকের সাথে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ)। বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট অনুযায়ী অর্থ ও হিসাব সংক্রান্ত সার্বিক বিষয়ের তত্ত্বাবধানে থাকেন কোষাধ্যক্ষ। তবে তিনি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম সাঊদের কাছেও একই প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয় বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ)। তিনিও রাকসু ফি নেওয়ার যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, “রাকসু সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে রাকসুর সভাপতি অর্থাৎ উপাচার্য মহোদয়কেই জিজ্ঞেস করুন। এই বিষয়টি নিয়ে আমার জায়গা থেকে কোনো মন্তব্য দেওয়ার সুযোগ নেই।”

রাকসু সম্পর্কিত এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। উপাচার্য অফিসে সকল নিয়ম মেনেই দেখা করার সময় চায় বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ)। কিন্তু সেখান থেকে কোনো সাড়া পায়নি প্রতিবেদক।

পরবর্তীতে, মুঠোফোনে রাবি উপাচার্যের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তবে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য দিতে রাজি হননি।

বিএনএ/এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ