28 C
আবহাওয়া
৬:৪২ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ১৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে মিনুকে জেলে পাঠায় দুই দালাল

দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে মিনুকে জেলে পাঠায় দুই দালাল

দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে মিনুকে জেলে পাঠায় দুই দালাল

বিএনএ,চট্টগ্রাম: দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে মিনুকে কুলসুম সাজিয়ে আদালতে হাজির করেছে বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন কুলসুম আক্তার কুলসুমী। তাদের  এই কাজে যুক্ত থাকে মো. নুর আলম কাওয়াল (৪৮) ও মো. শাহাদাত হোসেন (৪২) নামে আরও দুই ব্যক্তি। রোববার (১ আগস্ট) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন।

রোববার (১ আগস্ট) ভোরে সীতাকুণ্ড থানার জঙ্গল সলিমপুর কালাপানিয়া দরবেশনগর এলাকা থেকে মো. নুর আলম কাওয়াল ও মো. শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে মো. শাহাদাত হোসেনকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে হাজির করা হলে আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ও  মো. নূর আলম কাওয়ালকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৯ জুলাই রাত ৩টায় ইপিজেড থানাধীন ২ নম্বর মাইলের মাথা কমিশনার গলি থেকে মর্জিনা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। মর্জিনার তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন কোতোয়ালী থানায় উপ-পরিদর্শক আকাশ মাহমুদ ফরিদ বাদি হয়ে কুলসুম ও মার্জিনা আক্তারসহ অজ্ঞাত একাধিক জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পুলিশ জানায়, রিমান্ডে থাকা আসামি কুলসুম আক্তার ও মর্জিনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, কুলসুম আক্তার হত্যা মামলায় ১ বছর ৪ মাস হাজত বাস শেষে জামিনে বের হয়ে দীর্ঘ ১০ বছর বিজ্ঞ আদালতে হাজিরা দেয়। পরে গত ৩০ নভেম্বর ২০১৭ এই মামলায় কুলসুম আক্তারর বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন সাজার আদেশ হওয়ার পরই বিষয়টি আসামি মর্জিনা বেগমের সাথে আলোচনা করেন এবং সাজা থেকে বাঁচার জন্য মর্জিনাকে সহযোগিতা করতে বলে সে। আসামি মর্জিনা বেগম কুলসুমকে যাবজ্জীবন সাজা থেকে বাঁচানোর জন্য কুলসুম সাজার বিষয়টি নিয়ে আসামি মো. শাহাদাত হোসেন (৪২) এর সাথে আলোচনা করেন। আসামি মো. শাহাদাত হোসেন কুলসুমকে বাঁচানোর জন্য মো. নুর আলম কাওয়াল (৪৮) এর সাথেও আলোচনা করে। আসামি মো. নুর আলম কাওয়াল ও মো. শাহাদাত হোসেন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কুলসুমের পরিবর্তে আরেক জনকে জেলখানায় পাঠাবে বলে মর্জিনাকে জানায়। কুলসুম বিষয়টি জানতে পেরে এক কথায় রাজি হয়ে যায়।

তাই মর্জিনা মিনুকে টাকার লোভ দেখিয়ে ও এক মাসের মধ্যে জামিন করিয়ে দিবে বলে তার সাথে চুক্তি করে। সেই অনুযায়ী গত ১২ জুন ২০১৮ মিনু কে কুলসুম সাজিয়ে মর্জিনা বেগমের সাথে আদালতে পাঠায়। হাজিরার দিনে আসামি মো. শাহাদাত হোসেন ও মর্জিনা বেগম মিনু কে আদালতে কুলসুম সাজিয়ে নিয়ে যায় এবং কুলসুম হিসেবে ডাক দেওয়ার সাথে সাথে মিনু হাজতে ঢুকে যায়। পরবর্তীতে মিনু জেলখানায় যাওয়ার পর আসামি শাহাদাত হোসেন ও নুর আলম কাওয়াল মর্জিনা বেগমের কাছ থেকে পাওনা টাকা চাইলে মর্জিনা ও কুলসুম আক্তার টাকা যোগাড় করতে না পারায় কাল ক্ষেপণ করতে থাকে। এ টাকার জন্য শাহাদাত ও নুর আলম কাওয়াল মর্জিনা এবং কুলসুম আক্তারকে বার বার চাপ প্রয়োগ করতে থাকে, টাকা দিতে না পারায় স্থানীয়ভাবে সালিশী বৈঠকও করেন। একপর্যায়ে মর্জিনা এবং কুলসুম টাকা দিতে না পেরে ইপিজেড এলাকায় নিজেদেরকে আত্মগোপন করে রাখে বলে জানান পুলিশ।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজামউদ্দিন বলেন, কোহিনুর আক্তারকে হত্যার দায়ে আদালত সাজা দিয়েছিলেন কুলসুম আক্তারকে। কুলসুম নিজেকে বাঁচাতে মর্জিনার সঙ্গে পরার্মশ করে। পরে মর্জিনা তাকে শাহাদাত ও কাওয়াল নামে দুইজনের সন্ধান দেয়।

ওসি নেজাম বলেন,  এই দুই দালাল দেড় লাখ টাকায় চুক্তি করে নিরপরাধ মিনু আক্তারকে মর্জিনার সাথে আদালতে পাঠায়। মিনু তাদের প্রতিবেশী হওয়ায় সরল বিশ্বাসে আসামিদের সাথে আদালতে যেতে রাজি হয়। মূল আসামি কুলসুমের বদলে তিন বছর জেল খাটে। আমরা দুই দালাল শাহাদাত ও কাওয়ালকে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছি। শাহাদাত হোসেনের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে হাজির করা হলে আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং কাওয়ালকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ