26 C
আবহাওয়া
৪:১৫ পূর্বাহ্ণ - মে ৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কত স্বপ্ন বোনা আর ভাঙ্গার সাক্ষী নীলদিঘী

কত স্বপ্ন বোনা আর ভাঙ্গার সাক্ষী নীলদিঘী

কত স্বপ্ন বোনা আর ভাঙার সাক্ষী নীলদিঘী

।। আব্দুল্লাহ আল মাহবুব শাফি ।।

বিএনএ, নোবিপ্রবি: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)। ১০১ একরের ক্যাম্পাস। এই ক্যাম্পাসেরই একটি বহুল পরিচিত জায়গা ‘নীলদিঘী’। নীলদিঘীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে রূপকথার কবি হয়ত নীলাদ্রি ওই মেঘের ভেলায় ভেসে ফিরে ফিরে আসতো এই নীল জলে স্নান করতে।

দিঘীর ধারে কাটানো প্রতিটা মুহূর্তই যেন এক একটা প্রেমের কাব্য হয়ে স্মৃতির পাতায় ঠাঁই করে নেয়। মন চাইলে প্রিয়জনকে বা প্রিয়জনদের নিয়ে দিঘীর ঘাটে পার করা যায় ভালোবাসার কিছু সময় কিংবা দিঘীর ধারে সরুপথ ধরে হেটে যাওয়া যায় মহাকালের পথে।

সারাদিনের ক্লাস, পড়াশোনা, পরীক্ষা শেষে একটু স্বস্তির জন্য শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে সবাই চলে আসে দিঘীর পাড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ কপোত-কপোতিদের প্রিয় জায়গা এই নীল দিঘী। দিঘীর ধারে একে অপরের পাশে বসে হয়ত অদেখা ভবিষ্যতের নানান স্বপ্ন বোনে তারা। দিঘীর পশ্চিম পাশের বাগানে প্রায়ই ছুটির দিনে চড়ুই ভাঁতির আয়োজন করে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আড্ডা, গান বাজনায় মুখরিত হয়ে উঠে নীলদিঘী। এছাড়াও দিঘীর পাড় ঘেঁষে রয়েছে নানান জাতের ফল গাছ। ফলের মৌসুমে শিক্ষার্থীদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায় গাছ থেকে পেয়ারা, জাম, লিচু, আম ও ডাব খাওয়া।

কত স্বপ্ন বোনা আর ভাঙার সাক্ষী নীলদিঘী
নীল দিঘীর পাড়ে চড়ুইভাতিতে মেতেছে শিক্ষার্থীরা

বন্ধুদের সাথে খুনসুঁটি থেকে শুরু করে চড়ুইভাঁতি, বারবিকিউ পার্টি, জন্মদিন উদযাপন সবকিছুই হয়ে থাকে ১০১ একরের এই ছোট্ট নীলদিঘীকে ঘিরে। শরতের আকাশের মিছিমিছি রোদ-বৃষ্টির খেলা উপভোগ করার আদর্শ স্থান নীলদিঘীর সৃজনঘাট, যেখানে শরতের মেঘের ওপর বসে কল্পনারাজ্যে হারিয়ে যাওয়া যায়। আবার, হরেকরকম বৃক্ষের ছায়াতল থেকে রোদ্রৌজ্জ্বল আকাশটা দেখতেও মন্দ লাগে না।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের যে কেউ বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেলে এই দিঘীর টানে হলেও ফিরে আসবে নোবিপ্রবির কাছে। ফিরে তাদের আসতে হয় কারণ কতো স্বপ্ন বোনা আর স্বপ্ন ভাঙ্গার সাক্ষী এই নীলদিঘী। কতই না স্মৃতি জড়িয়ে আছে নীলদিঘীর সারি সারি বেঞ্চগুলোতে! তাইতো নীলদিঘী শুধু দিঘী নয় যেন এক প্রেমের সিন্ধু।

শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী আলজকি হোসাইন বলেন, ‘এখানে স্বপ্ন বোনা চলে অবিরত। হেরে যাওয়ার গল্প ভুলে নতুন করে পথ চলতে শেখায় এই স্বপ্নভূমি। শিক্ষার্থীরা চায়ের আড্ডায় নীলদিঘীতে বসে গান বাঁধেন, ‘এইখানে, এই এখানটায় স্বপ্নভূমি গড়েছি, একটু একটু করে স্বপ্নের জাল বুনেছি। পাখি হয়ে ডানা মেলে উড়ে এসেছি, এখানটার রঙ নিয়ে প্রজাপতি সেজেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটোগ্রাফার আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘ছবি তোলার জন্য নীলদিঘী আদর্শ। এখানে ছবির ফ্রেমিং অন্য সব জায়গার থেকে তুলনামূলক ভিন্ন। শিক্ষার্থীরাও এই নীলদিঘীতে ছবি তুলতে খুবই পছন্দ করে। কোনো ব্যাচে শাড়ি- পাঞ্জাবি ডে থাকলে নীলদিঘী ওইদিন ওদের দখলে থাকবেই। এছাড়াও প্রতিদিন বিকেলবেলা ফুটবল খেলা শেষে শিক্ষার্থীরা নীলদিঘীতে ঝাঁপিয়ে পরে। বিকালের কপোত কপোতিদের খুনশুটি তো যেকোন সিঙ্গেলের মনে আগুন ছড়িয়ে দিতে বাধ্য করে।’

আরও পড়ুন: কমনওয়েলথ বৃত্তিতে মনোনীত ববির দুই শিক্ষক

বিএনএনিউজ/বিএম/ হাসনাহেনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ