38 C
আবহাওয়া
৫:৩৮ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » জিয়ার আমলে অভ্যুত্থান-হত্যার খতিয়ান দিলেন জয়

জিয়ার আমলে অভ্যুত্থান-হত্যার খতিয়ান দিলেন জয়

জিয়া

বিএনএ ডেস্ক: সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের আমলে সামরিক বাহিনীতে ২৬টির মতো অভ্যুত্থান আর তাতে আড়াই হাজারের মতো সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার তথ্য দিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে এক ফেইসবুক পোস্টে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা এসব ঘটনা তুলে ধরে তার তদন্তের উপর জোর দিয়ে বলেন, ওই সব ঘটনার প্রমাণ লুকাতে নথিও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে তথ্য মিলেছে।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্ট্যাটাস তুলে ধরা হলো-

জয় লিখেছেন, জিয়াউর রহমানের আমলে (১৯৭৫-৮১) দেশে ২৬টির মতো সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছিল বলে বিভিন্ন ভাষ্যে জানা যায়। কেউ কেউ বলেন সংখ্যাটি ২১। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর। এই অভ্যুত্থানটি সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি তথ্য জানা যায়। বাকিগুলো ধোঁয়াশার আড়ালে।

১৯৭৭ সালের অক্টোবরের অভ্যুত্থানে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছিলেন শতাধিক সেনা অফিসার। অনেকে নিহত হয়েছিলেন অভ্যুত্থান দমাতে গিয়ে। আবার বিচারের নামে মেরে ফেলা হয় কয়েকশ সেনাকে। সব মিলিয়ে মোট সংখ্যাটি আড়াই হাজারের মতো হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে জয় লিখেছেন, তাদের মধ্যে ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি সেনাকে ফাঁসি ও ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। বাকিদের মৃত্যুর কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। সেই সময় থেকে আজও তারা পরিবারের কাছে নিখোঁজ। জিয়াউর রহমানের আমলে সামরিক বাহিনীতে অভ্যুত্থানচেষ্টার ঘটনা ও মৃতের সংখ্যা মেলানো খুবই কঠিন। এ নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি।

প্রায় ৪৫ বছরের মাথায় এসে গত ১৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়ার আমলে নিহতদের তালিকা করার নির্দেশ দেন। তবে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এ রকম একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা কতটা কঠিন? এটি আদৌ কি সম্ভব? সেই সময়ের বেশির ভাগ প্রত্যক্ষদর্শী জীবিত নেই। আবার অনেক দালিলিক প্রমাণ নষ্ট করারও অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে গবেষণা প্রায় হয়নি বললেই চলে।

পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে নথি

ওই সময়ের নথি পুড়িয়ে ফেলার কথা তুলে ধরে জয় লিখেছেন, এ বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান করেছেন সাংবাদিক ও গবেষক জায়েদুল আহসান পিন্টু। তিনি বলেন, এটা খুব কঠিন কাজ। তবে অসম্ভব নয়। হয়ত এখনও ব্যক্তিগতভাবে কিছু দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যাবে। কিছু ঘটনার সাক্ষী ও স্বজন এখনও বেঁচে আছেন। দ্রুত কাজ শুরু করলে হয়ত এখনও সত্যের খুব কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব। তবে দেরি করলে বা আরও ১০ বছর পর করলে কিছুই মিলবে না।

জায়েদুল আহসানের ভাষ্যে জয় লিখেছেন, ‘কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, ওই ৫ বছরে কমপক্ষে ১৯টি অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছিল। তবে নিহতের সংখ্যা কারও কাছে এককভাবে নাই। হয়ত বিচ্ছিন্নভাবে আছে। যত দ্রুত সম্ভব একটি তথ্যানুসন্ধানী কমিশন গঠন করা দরকার। যে কমিশন ওই সময়কালের হত্যা, হত্যাকাণ্ড, নির্বিচার হত্যা, বিনা বিচারে হত্যা এবং বিচারের নামে প্রহসনের ট্রাইব্যুনালে হত্যা বা ফাঁসি– এসব কিছুর তথ্য সংগ্রহ করবে। তথ্য সংগ্রহের উপায় হলো দলিল-দস্তাবেজ বা মৌখিক সাক্ষ্য গ্রহণ।’

তবে দলিল-দস্তাবেজ জিয়া ও এরশাদ দুই আমলেই নষ্ট করে ফেলা হয়েছে দাবি করে জায়েদুল বলছেন, এখনও ব্যক্তিগত পর্যায়ে কারও কারও কাছে থাকতে পারে। সেগুলো আহ্বান করা ও সেই সময়ের মানুষের সাক্ষ্য গ্রহণ করা যেতে পারে।

জায়েদুল আহসানের মতে, এই কমিশন দুভাবে গঠিত হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি বা সাবেক প্রধান বিচারপতি হতে পারেন এটির প্রধান। তার সঙ্গে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক ও গবেষক থাকতে পারেন। আবার সংসদীয় কমিটিও হতে পারে।

এই তথ্যানুন্ধানী কমিশনকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন করার প্রয়োজন মনে করেন জায়েদুল, যাতে তথ্য চেয়ে তারা যে কাউকে তলব করতে বা সমন জারি করতে পারে। তিনি যদি প্রধানমন্ত্রী বা সেনাপ্রধানও হন, তবু কমিশনে এসে তথ্য দিতে বাধ্য থাকেন।

লেখক ও সাংবাদিক আনোয়ার কবিরকে উদ্ধৃত করে জয় লিখেছেন, জিয়ার আমলে সশস্ত্র বাহিনীতে চলা হত্যা, গণহত্যা, গণফাঁসি নিয়ে তথ্যানুসন্ধানী কমিশন গঠনের জন্য অনেক দিন ধরেই কথা হচ্ছে। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রথম এই কমিশন গঠনের দাবি ওঠে জাতীয় সংসদে। এরপর নানা সময়ে আমার বই ধরে সংসদে বিভিন্ন সংসদ সদস্য দাবি তুলেছেন। কিন্তু কমিশন গঠন হয় না, তথ্যের সন্ধানও হয় না। প্রাণ হারানো সেনার তালিকাও হয় না।

বিএনএনিউজ২৪/এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ