24 C
আবহাওয়া
১:৪৮ পূর্বাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দেশে ৩১ বছরে ৯২টি ট্রেন দুর্ঘটনা

দেশে ৩১ বছরে ৯২টি ট্রেন দুর্ঘটনা


বিএনএ, ঢাকা : রাজধানীসহ দেশে গত ৩১ বছরে বিভিন্ন কারণে ছোট বড় ৯২টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ট্রেনের ভয়াবহ ও নির্মমতা দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৪১২ জন এবং আহত ১ হাজার ৩৯ জন। সারাদেশে রেলপথ ৩০১৮ কিঃমিঃ। এই রেলপথে ১৯৮৯ সাল থেকে ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ট্রেনের চালক ও গেটম্যানদের অসাবধানের কারণে একের পর এক ঘটনা ঘটছে বলে রেল ভবনে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অভিযোগ। দায়ীত্বে অবহেলার জন্য অনেকেই চাকরী হারিয়েছেন আবার অনেকেই সাময়ীক ভাবে বরখাস্ত হন।

রেল ভবনের একটি সুত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা গুলো হলো-

১৯৮৯ সালের ১৫ জানুয়ারি টঙ্গীর কাছে মাজুখানে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৭০ জন যাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরও ৪০০ জন। এছাড়া ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের কাছাকাছি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। এতে ১৩ জন নিহত ও ২০০ জন আহত হয় । ১৯৮৩ সালের ২২ মার্চ ঈশ্বরদীর কাছে একটা রেল সেতু দিয়ে চলার সময় ভেঙে পড়ে এবং পরপর কয়েকটি স্পান ভেঙে যায়। কয়েকটি বগি নিচে শুকনা জায়গায় পড়ে এ দুর্ঘটনায় ৬০ জন যাত্রী নিহত হন। ১৯৮৫ সালের ১৩ জানুয়ারি খুলনা থেকে পার্বতীপুরগামী সীমান্ত এক্সপ্রেসের কোচে আগুন ধরে যায়। এতে ২৭ জন যাত্রী নিহত এবং ৩৭ জন আহত হন। ১৯৮৬ সালের ১৫ মার্চ সর্বহারার নাশকতায় ভেড়ামারার কাছে ট্রেন লাইনচ্যুত হয় এবং নদীতে পড়ে যায়। এ ঘটনায় ২৫ জন যাত্রী নিহত ও ৪৫ জন আহত হন। ১৯৯৫ সালের ১৩ জানুয়ারি রাত সোয়া ৯টায় গোয়ালন্দ থেকে পার্বতীপুরগামী ৫১১ নম্বর লোকাল ট্রেনটি হিলি রেলস্টেশনের ১ নম্বর লাইনে এসে দাঁড়ায়। এর কিছুক্ষণ পর সৈয়দপুর থেকে খুলনাগামী ৭৪৮ নম্বর আন্তনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি একই লাইনে ঢুকে পড়ে। এ সময় ভয়াবহ মুখোমুখি সংঘর্ষে গোয়ালন্দ লোকাল ট্রেনের ইঞ্জিনসহ দুটি বগি আন্তনগর ট্রেনের উপর উঠে যায়। এতে দুটি ট্রেনের অর্ধশতাধিক যাত্রী নিহত হয়। আহত হয় দুই শতাধিক।

নরসিংদীতে দুটি ঘটনায় ২০১০ সালে চট্টগ্রামগামী আন্তনগর ‘মহানগর গোধূলি’ ও ঢাকাগামী মেইল ‘চট্টলা’ ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় দুটি ট্রেনের ইঞ্জিন দুমড়ে-মুচড়ে যায়। চট্টলা ট্রেনের একটি বগি মহানগর ট্রেনের ইঞ্জিনের উপর উঠে যায়। এ দুর্ঘটনায় চালকসহ মোট ১২ জন নিহত হন। এর পর ২০১৬ সালে নরসিংদীর আরশীনগর এলাকায় ভুল সিগন্যালের কারণে লাইনচ্যুত হয় তিতাস কমিউটার ট্রেনের ইঞ্জিন। ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাচ্ছিল। এতে দুই জন নিহত ও ১০ আহত হন।

২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ৫ জন নিহত হন। কমিউটার ট্রেনটি জামালপুর থেকে ঢাকা আসচ্ছিল। টঙ্গী এসেই ঘটে যত বিপত্তি। ট্রেনের ৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। টঙ্গীর নতুনবাজার এলাকায় ঢাকা-জয়দেবপুর রেললাইনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় প্রায় অর্ধশতাধিক। একই বছরে ঢাকা কমলাপুর ৮ নাম্বার প্লাটফর্ম থেকে নারায়ণগঞ্জ গামী ট্রেন কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় আইসিডির ভিতরে কন্টেইনারের সাথে দূর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহত হয় ৬ জন। ২০১৯ সালের ২৩ জুন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। উপজেলার বরমচাল রেলক্রসিং এলাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের ৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে খালে ছিটকে পড়ে। এ ঘটনায় ৬ জন নিহত হন। নিহতের মধ্যে ৩ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ ছিল। সেদিন গভীর রাত কুলাউড়ার বরমচাল স্টেশনের পাশে ঢাকাগামী উপবনের বগি ছিটকে পড়ে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলার কসবা উপজেলায় দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত হন। ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর রাত পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শতাধিক যাত্রী আহত হয়। সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস এক নম্বর লাইনে ঢুকছিল। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথাকে আউটারে থাকার সিগন্যাল দেয়া হয়। চালক সিগন্যাল অমান্য করে মূল লাইনে ঢুকে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে ৮০টি ট্রেন দূর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হয় ৮ জন এবং আহত হয়েছে চারজন। চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর জয়পুরহাট জেলায় ট্রেনের সাথে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে বাসের ১২ যাত্রী নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় আহত আর ৩ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হতাহতরা সবাই বাসের যাত্রী ছিলেন। তবে ট্রেন যাত্রীরা অক্ষত রয়েছে। এ ছাড়াও রাজধানীসহ দেশে কোন না কোন জায়গায় প্রতিদিনই ট্রেনের ধাক্কা বা কাটা পড়ে ১/২জন মারা যাচ্ছে।

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) এডিজি (অপারেশন) সরদার শাহাদত আলীর কাছে ট্রেন দুর্ঘটনা এবং লাইনচ্যুত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি এডমিন ক্যাডারের লোক তাছাড়া পদোন্নতি পেয়ে কিছু দিন হলো আমি এখানে এসেছি। এডিজি অপারেশনের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
বিএনএনিউজ/আজিজুল/জেবি

Loading


শিরোনাম বিএনএ