বিএনএ, রাঙামাটি: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও জমা নেওয়া শুরু হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ২৯৯ নং রাঙামাটি আসনের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রার্থী ইতোমধ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে। তবে সবার দৃষ্টি এখন কে হচ্ছেন আগামী সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ নং রাঙামাটি আসনের আওয়ামী লীগের নৌকার মাঝি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা, সাবেক জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের রাঙামাটি সভাপতি অমর কুমার দে, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার চাকমা। তবে আরও কয়েকজনের মনোনয়ন ফরম নেওয়ার খবর শোনা গেলেও তা কোন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মনোনয়ন নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে দীপংকর তালুকদার ১৯৯১ সাল থেকে দীর্ঘ বছর ধরে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আসছেন। তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মণিস্বপন দেওয়ান এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সমর্থিত প্রার্থী ঊষাতন তালুকদারের কাছে পরাজিত হন।
এবারে এই আসনে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী নিখিল কুমার চাকমা বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। তিনি ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং ২০২১ সালের জুলাই থেকে চলতি সালের জুন পর্যন্ত সচিব পদমর্যাদায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। গত জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। তবে সম্মেলনে তিনি দীর্ঘ বছর যাবৎ দলের সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারকে সমর্থন জানিয়ে সরে যান। এই দুই হেভিওয়েট নেতা ছাড়া বাকিরা বিভিন্ন সময়ে জেলার মধ্যে দলের ও দলের বাহিরে বিভিন্নস্থানে দায়িত্ব পালন করেন।
মনোনয়ন ফরম নেওয়া সাবেক জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের রাঙামাটি সভাপতি অমর কুমার দে বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করে আসছি দীর্ঘ বছর ধরে। তবে আমি দল থেকে বঞ্চিত একজন মানুষ। মনোনয়ন ফরমে যে তথ্য চেয়েছে আমি সব পূর্ণ করতে পেরেছি। আমার মনে হয় অন্য কেউ সবগুলো পূরণ করতে পারবে না। সেখানে ১৯৭১, ১৯৭৫ এবং ১৯৯০ সালে সংগ্রামে ভূমিকা কি ছিলো তা উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। আমি তৎকালীন দলের জন্য কি কি করেছি সবই উল্লেখ করেছি। কিন্তু অন্য কেউ এসবের অনেক কিছুই লেখতে পারবে না। বিরোধী দলে থাকাকালীন আমি ও আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর একাধিকবার হামলা হয়েছে। আমি নির্যাতিত একজন দলের কর্মী। তাই আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মূল্যায়ন করে মনোনয়ন দিবে।
আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, আমি মনোনয়ন ফরম নিয়েছি। তবে আর কেউ নিয়েছে কিনা জানি না। আশা করছি আমি দল থেকে মনোনয়ন পাব।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা বলেন, আমি দলের মনোনয়ন ফরম নিয়েছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনিই বিবেচনা করবেন কাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া যাবে। আমি দলের বাহিরের কেউ না, তাই দল যাকে মনোনয়ন দিবে এবং দল যা সিদ্ধান্ত নিবে আমি তা মাথা পেতে নিবো। দলের স্বার্থে আমি কাজ করে যাব।
আরও পড়ুন: নৌকা পাচ্ছেন কারা, জানা যাবে বৃহস্পতিবার
এ বিষয়ে জানার জন্য বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদারকে একাধিকবার মুঠোফোনে ও বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর বলেন, আমার দলের বর্তমান সভাপতি ও পাহাড়ি বাঙালির ঐক্যের প্রতীক দীপংকর তালুকদারের বিপরীতে কাউকে দেখছি না। আমরা জেলা আওয়ামী লীগ দীপংকর তালুকদারকে সর্মথন করে যাচ্ছি। আর তিনিই মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করছি।
বিএনএনিউজ/ কাইমুল ইসলাম ছোটন/ বিএম
