36 C
আবহাওয়া
৯:২৯ অপরাহ্ণ - মে ২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯৬ (কক্সবাজার-৩)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯৬ (কক্সবাজার-৩)


বিএনএ, কক্সবাজার: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর । আজ থাকছে কক্সবাজার-৩ আসনের হালচাল।

কক্সবাজার-৩ আসনের হালচাল

কক্সবাজার-৩ সংসদীয় আসনটি দেশের পর্যটন শহর কক্সবাজারের সদর এবং রামু উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২৯৬ তম আসন।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৭ শত ৮২ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৬ হাজার ৩ শত ২২ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩২ হাজার ১ শত ৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির মোঃ খালেকুজ্জামান। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৩১ হাজার ১ শত ৯ ভোট ।

ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন : বিএনপির মো. খালেকুজ্জামানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি,ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এই নির্বাচনে বিএনপির মো. খালেকুজ্জামানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সপ্তম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির মো. খালেকুজ্জামান বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ১৩ হাজার ৯৮ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৪ শত ৫১ জন। নির্বাচনে বিএনপির মোঃ খালেকুজ্জামান বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬৯ হাজার ১ শত ১৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী । নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪১ হাজার ৪ শত ৫ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির মো. শহিদুজ্জামান বিজয়ী হন

২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৯০ হাজার ৯ শত ৭৮ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৯ শত ১৯ জন। নির্বাচনে বিএনপির মো. শহিদুজ্জামান বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ১৩ হাজার ৮ শত ৯৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৮ হাজার ৩ শত ১২ ভোট।

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে খালেকুজ্জামান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তার ভাই প্রকৌশলী শহীদুজ্জামান মোস্তাক চৌধুরীকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

নবম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির লুৎফর রহমান কাজল বিজয়ী হন

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ২৩ হাজার ৮ শত ৭২ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৭৭ হাজার ৭ শত ৪০ জন। নির্বাচনে বিএনপির লুৎফর রহমান কাজল বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ২৬ হাজার ৬ শত ৩০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সাইমুম সরওয়ার চৌধুরী কমল। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৮৫ হাজার ৬ শত ৮১ ভোট।

দশম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের সায়মুম সরওয়ার চৌধুরী কমল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সায়মুম সরওয়ার চৌধুরী কমল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে র্নিবাচনের দাবিতে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের সায়মুম সরওয়ার চৌধুরী কমল বিজয়ী হন

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৪ লাখ ১৪ হাজার ৯ শত ৩০ জন। ভোট প্রদান করেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৯ শত ৭৯ জন।

নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৫ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সায়মুম সরওয়ার চৌধুরী কমল, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির লুৎফর রহমান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মফিজুর রহমান, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোহাম্মদ আমিন, টেলিভিশন প্রতীকে বিএনএফ এর মোঃ হাছান প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সায়মুম সরওয়ার চৌধুরী কমল বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ৫৩ হাজার ৮ শত ২৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির লুৎফর রহমান। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান মাত্র ৮৬ হাজার ৭ শত ১৮ ভোট।

কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ষষ্ঠ,সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদে বিএনপি পঞ্চম,দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর কক্সবাজার-৩ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, কক্সবাজার-৩ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৫২.৯৫% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩০.২০%, বিএনপি ২৯.২৬%, জাতীয় পার্টি ০.৭৩%, জামায়াত ইসলামী ২৮.৩৫%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১১.৪৬% ভোট পায়।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৪.৮৩% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৫.৯৭%, বিএনপি ৪৩.৩৫%, জাতীয় পার্টি ৮.২৩%, জামায়াত ইসলামী ১৯.৩৮% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৩.০৭% ভোট পায়।
২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৪২.৫৯% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৬.৭১%, ৪ দলীয় জোট ৯১.৯১%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১.৩৮% ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৫.৭৬% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৩০.৮৫%, ৪ দলীয় জোট ৪৫.৫৯%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ২৩.৫৬% ভোট পায়।

কক্সবাজার-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের সায়মুম সরওয়ার চৌধুরী কমল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও মনোনয়ন চাইবেন। এই আসনে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১১ জন দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন।

সাবেক সাংসদ ও সাবেক জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান খান বাহাদুর মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, সোহেল সরওয়ার কাজল। প্রসঙ্গত কাজল ও কাবেরী বর্তমান সংসদ সদস্য কমলের ভাই-বোন।

এছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশী কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) সাবেক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ, কক্সবাজার জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন, কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কাইছারুল হক জুয়েল ও ব্যারিষ্টার মিজান সাঈদ।

বিএনপি গত ২৮ অক্টোবর থেকে লাগাতার হরতাল অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখান করে এক দফার আন্দোলন তথা শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অনড় রয়েছে। ফলে দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে স্থানীয় বিএনপির। নির্বাচনে গেল মনোনয়ন চাইবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল। তবে এবার তাঁকে ছাড় দিতে নারাজ সাবেক সংসদ সদস্য খালেকুজ্জামানের পরিবার। এই পরিবার থেকে বিএনপির তিনজন মনোনয়ন প্রত্যাশী আছেন। তাঁরা হলেন খালেকুজ্জামানেরছোট ভাই সাবেক সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান, স্ত্রী মারুফা জামান কলি এবং সন্তান তানসির জামান উৎস। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্না এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান ও মনোনয়ন চাইবেন।

এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী কক্সবাজার জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের পর্যটন বিষয়ক উপদেষ্টা মফিজুর রহমান এবং জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ তারেক।
জামায়াত ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আগে কক্সবাজার ৩ সংসদীয় আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে কক্সবাজার সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি শহীদুল আলম বাহাদুরকে এই আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে নিবন্ধন বাতিল হওয়া দলটি।

নির্বাচনী ভাবনায় সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, কক্সবাজারে তার মেয়াদে সরকারপ্রধান ও দলীয়প্রধান শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ কাজ সমাপ্তের পথে। বিশ্বের আইকনিক রেলস্টেশন ও রেল পথ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা। এখানে বেতার, টেলিভিশন, মেডিকেল কলেজ, বাঁকখালী নদীর ওপরে বড় বড় চারটি সেতু নির্মাণসহ প্রচুর উন্নয়নকাজ হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষের পাশে ছিলাম। করোনা পরিস্থিতিতেও সাধারণ মানুষের পাশে ছিলাম। এসব কারণে এ আসনে আবারও তিনি মনোনয়ন পাবেন এবং জয়ী হবেন বলে জানান।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন- ২০১৪ সালে তিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন; কিন্তু বিষয়টি গোপন ছিল। ভাইদের মানসিক চাপে মনোনয়ন গ্রহণ করতে যাননি বলে জানিয়ে বলেন কমল, কাজল বয়সে বড় হলেও জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে না। রাজনৈতিক দিক থেকে তিনিই এগিয়ে। কাবেরী আরও বলেন ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবার তাকে নিরাশ করবেন না।

কমলের অন্য ভাই রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল বলেন, ‘এলাকার মানুষ তাকে চায়। তাদের দাবি তিনি যেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন, তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তাকে মেনে নেবেন বলে জানান তিনি।

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক। বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি যোগ্য মনে করেন তাহলে মনোনয়ন দেবেন। মনোনয়ন পেলেও মানুষের পাশে থাকবেন, না পেলেও থাকবেন। তবে মনে করি সদর-রামু- ও ঈদগাঁও আসনের জন্য আমার স্বামী সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী যোগ্য।’

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর এবং রামু) আসনটি একক কোন রাজনৈতিক দলের ঘাটি নয়। ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন আওয়ামী লীগের মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী। ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মোঃ খালেকুজ্জামান, ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মোঃ শহিদুজ্জামান এবং ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির লুৎফর রহমান কাজল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেননি। ফলে আওয়ামী লীগের সায়মুম সরওয়ার চৌধুরী কমল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সংসদ সদস্য হন তিনি।

কক্সবাজার-৩ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি যেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রদূত প্রয়াত ওসমান সরওয়ার পরিবার নির্ভর। ওসমান সরওয়ারের মৃত্যুর পর তাদের পরিবারের একাধিক সদস্য সংসদ সদস্য হতে নির্বাচনের আগে প্রতিযোগীতায় নেমে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য ভাইবোনের মধ্যে পরস্পর বাকযুদ্ধ ভোটারদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও চা’ দোকানের আড্ডার খোরাক জোগাচ্ছে। তাদের পারিবারিক প্রতিযোগীতার বাহিরেও নৌকার মাঝি হতে চান অনেকে। তারা ঝোপ বুঝে কোপ মারার অপেক্ষায় রয়েছেন।
এই আসনে বিএনপি বেশ শক্তিশালী। তবে দলীয় কোন্দল রয়েছে। গত ১০ বছর ক্ষমতা বলয়ের বাহিরে থাকায় শক্তি-সার্মথ্য খর্ব হলেও তৃণমূল পর্যায়ে প্রচুর ভোট রয়েছে।

এই আসনে জামায়াত ইসলামীর ভোট ব্যাংক রয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্ট জামায়াত ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে। ফলে এই দলটি দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ নেই। সেই ক্ষেত্রে ভোট ব্যাংক বিএনপি তথা আওয়ামী লীগ বিরোধী বাক্সে যাবে। জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক তৎপরতা নেই বললেই চলে। তবে অঞ্চল ভিত্তিক কিছু ভোট রয়েছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে এবং বিএনপি অংশগ্রহণ করলে জাতীয় সংসদের ২৯৬তম সংসদীয় আসন (কক্সবাজার-৩) আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে হাড্ডাহাড়ি লড়াই হবে। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে খুব সহজে বিজয়ী হবে আওয়ামী লীগ এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনএ/ শাম্মী, রেহানা, এমএফ, ফরিদ, ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ