31 C
আবহাওয়া
১:৫৫ পূর্বাহ্ণ - মে ১৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রাবিতে মশক নিধনে উদ্যোগ নেই; প্রচার-প্রচারণা দিয়েই ডেঙ্গু প্রতিরোধ

রাবিতে মশক নিধনে উদ্যোগ নেই; প্রচার-প্রচারণা দিয়েই ডেঙ্গু প্রতিরোধ

রাবিতে মশক নিধনে উদ্যোগ নেই; প্রচার-প্রচারণা দিয়েই ডেঙ্গু প্রতিরোধ

।। সৈয়দ সাকিব ।।

বিএনএ, রাবি: রাজশাহী এখন ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’। প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গণমাধ্যম সূত্রে খবর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, ডেঙ্গু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে রাজশাহী নগরী দ্বিগুণেরও বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি জোরালো কোনো পদক্ষেপ। শুধু প্রচার-প্রচারণার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে কর্তৃপক্ষ। মশক নিধনে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্যাম্পাসে মশার উপদ্রব বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েকগুণ। ফলে ডেঙ্গু ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধ একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আবাসিক হলসমূহ ও ক্যাম্পাসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং মশার বিস্তার রোধে যত্র-তত্র জমে থাকা পানি নিষ্কাশন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে জানা গেছে, সেই সভায় ক্যাম্পাসের মশক নিধনে কোনো আলোচনা হয়নি।

ডেঙ্গু প্রতিরোধ সভায় উপস্থিত থাকা ফার্মেসি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আজিজ আবদুর রহমান এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “সভায় মশক নিধনের বিষয়ে কথা হয়নি। সভাটা ছিলো মূলত ডেঙ্গু সচেতনতার জন্য। আমরা সেখানে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য যে বিষয়গুলো দরকার সেই তথ্যগুলো উপস্থাপন করেছি। তবে জানতে পেরেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিটি করপোরেশনের সাথে কোনো একটা চুক্তি করেছে ফোগার মেশিন নিয়ে। সভাটিতে মূলত প্রচার সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা হয়েছিল।”

এদিকে, গত ১৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ব্যানার বানিয়ে ও লিফলেট বিতরণের ব্যবস্থাসহ ক্যাম্পাসে ৩/৪ জায়গায় বড় স্ট্যান্ড ব্যানার স্থাপন করে ডেঙ্গু সচেতনতা বৃদ্ধির কথা। সেখানেও মশক নিধনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরেনি রাবি প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, বর্তমানে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করছে কিন্তু আমাদের প্রশাসন মশক নিধনে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিকেল থেকে মশার উপদ্রব অপেক্ষাকৃত বেশি হয়। আবাসিক হলের রুমগুলোতে সন্ধ্যার পর কয়েল জ্বালিয়েও মশার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে পড়াশোনার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।

শফিকুল সিফাত নামে এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, “ব্যানার বানিয়েই শেষ। আসল কাজ কে করবে। মশা তো আর নিজে থেকে সুইসাইড করবেনা।”

আরেক শিক্ষার্থী একটু ব্যাঙ্গ করেই লিখেছেন, “হ্যা ব্যানার পড়ে মশা চলে যাবে! মশা তো এখানকার সরকারি চাকরিজীবী।”

“ডেঙ্গুমুক্ত ক্যাম্পাস চাই” কথাটি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আমান উল্লাহ খান বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ছোট্ট পরিসরে প্রায় ৩৫ হাজারের শিক্ষার্থীর চলাফেরা। বিশেষ করে যারা হলে থাকে তারা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। প্রশাসনের উচিৎ শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে নিয়ম করে ক্যাম্পাসে মশক নিধনের ক্যাম্পেইন বাড়ানো। ড্রেন বা যেখানে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা জমে আছে সেসব জায়গায় মশক নিধনের দায়িত্ব প্রশাসনের আছে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, “ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা সর্বোচ্চ সচেতন রয়েছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন হলের সামনে, ভবনগুলোর সামনে ব্যানার, শিক্ষার্থীদের মাঝে লিফলেট বিতরণসহ ক্যাম্পাসে সর্বত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। মশক নিধনেও সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা সিটি করপোরেশনের সাথে কথা বলেছি যেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সিটি করপোরেশনের মধ্যে। খুব দ্রুতই ফগার মেশিন দিয়ে ক্যাম্পাসে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।”

উল্লেখ্য, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে কেনা হয়েছিল দুটি ফগার মেশিন। কিন্তু মশক নিধনে সেই মেশিনের কোনো কার্যক্রম দেখা যায় না।

বিএনএনিউজ/বিএম/ হাসনাহেনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ