30 C
আবহাওয়া
৬:১৪ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ‘শিবির করিস’ বলে শিক্ষক পেটালেন এমপি

‘শিবির করিস’ বলে শিক্ষক পেটালেন এমপি

‘শিবির করিস’ বলে শিক্ষক পেটালেন এমপি

বিএনএ ডেস্ক: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের দুই সহকারী অধ্যাপককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের বিরুদ্ধে। আহত এক শিক্ষক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) বিকেলে কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছিত দুই শিক্ষক হলেন, কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন।

শিক্ষক পেটানোর ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় জেলাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে অন্য শিক্ষকরা আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে।

এবিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহাবুবুর রহমান।

অভিযোগে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার কলেজে প্রবেশ করে গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসাইনকে ‘তুই শিবির করিস’ বলে কানে-মুখে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। শিক্ষকদের কমন রুমে নানা রকম হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যান।

ন্যক্কারজনক এ ঘটনার সঙ্গে কলেজের নন-এমপিওভুক্ত বাংলা বিভাগের প্রভাষক সুব্রত ও অবসরপ্রাপ্ত উপধ্যাক্ষ মজিদ মন্ডল জড়িত বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সময় কলেজের দুই কর্মচারী তাপস ও সবুজ সহকারী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেনকে টানাহ্যাঁচড়া করেন। পরে বিকেল পর্যন্ত বহিরাগত ব্যক্তিরা দুদকের কিছু নথি হাতিয়ে নিতে কলেজের একটি কক্ষে তাকে আটকে রাখেন।

হয়রানির বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন জানান, তিনি নিজ বিভাগের জরুরি কাজ করছিলেন। এ সময় কিছু বহিরাগত দুষ্কৃতকারী ‘তুই শিবির করিস’ বলে তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। এতে তিনি কানে গুরুতর ব্যথা পান। এখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি।

সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান জানান, কলেজ থেকে সরকারি খাতা চুরির বিষয় নিয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশক্রমে একটি চুরির মামলা করা হয় আদালতে। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে। এ মামলার সাক্ষী হলেন গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন। এ কারণে তার ওপর ক্ষুব্ধ হয় আসামিরা। বহিরাগতদের ডেকে নিয়ে খাতা চুরি মামলার আসামি কারিগরি শাখার সাচিবিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রকিবুল ইসলাম মিল্টনসহ অন্যরা তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন।

মাহবুবুর রহমান জানান, কলেজের কাজে সহকারী অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেনকে সাময়িক ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। নন-এমপিও ৬১ নং সিরিয়ালধারী জুনিয়র প্রভাষক সুব্রত কুমার নন্দী ও খাতা চুরির মামলার আসামি সাবেক উপাধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মণ্ডল চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগে। এজন্য বহিরাগত, কলেজের স্টাফ সবুজ ও পিয়ন তাপসের সহায়তায় ত্রাস সৃষ্টিসহ সহকারী অধ্যাপক মোশাররফকে মারপিট করেন।

মারধরের শিকার অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হঠাৎ এসেই শিক্ষক রুমের সবাইকে বের করে দেন। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি আমাকে ‘তুই শিবির করিস’ বলে থাপ্পড় মারেন। পরপর তিনি ক্রমাগত ৫ থেকে ৬টি থাপ্পড় মারেন।

গায়ে হাত তোলার বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন বলেন, দুদকের একটি ফাইল হাতিয়ে নিতে প্রভাষক সুব্রত ও অবসরপ্রাপ্ত উপধ্যাক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল প্রথমে তাকে অপমান-অপদস্ত করে মারতে উদ্যত হন। কিন্তু এ ধরনের একটি সরকারি ডকুমেন্ট নিতে হলে কালীগঞ্জ ইউএনওর সম্মতি ছাড়া দেয়া যাবে না বলে তাদের জানানো হয়। সুবিধা করতে না পেরে পরে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে লাঞ্ছিত করে ছেড়ে দেয়ার কথা জানান মোশাররফ।

জেলা পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম জানান, কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের একটি ফাইল নিয়ে কয়েকজন শিক্ষকের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। তবে এখনো কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান পুলিশ সুপার।

বিএনএ/ এ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ