31 C
আবহাওয়া
২:৪৪ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বসন্তের টানে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল

বসন্তের টানে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল


বিএনএ, কক্সবাজার: দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত বসন্তের রঙে ভালোবাসা যেন রঙিন হয়ে ওঠেছে। পারস্পারিক ভালোবাসার সংমিশ্রণে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গেও যেন চলছে ভালোবাসার মিতালী। পর্যটকদের পাশাপাশি সমুদ্র সৈকতে স্থানীয়রাও মেতেছেন বসন্ত আর ভালোবাসার আনন্দে।

প্রিয়জনের সাথে বিশেষ মুহূর্ত কাটাতে সৈকতে ভিড় করেছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। বসন্ত ও ভালবাসা দিবসে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দারুণ খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। টুরিস্ট পুলিশ পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় কাজ করছেন।

পর্যটন সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে সাগরের নীল জলরাশি ও প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন লক্ষাধিক পর্যটক। কেউ প্রিয়জনের সঙ্গে, কেউ বাবা-মা আর কেউবা প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে ছুটে এসেছেন বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র নগরী কক্সবাজার। সৈকতের বালিয়াড়িতে বসে সময় কাটানো, সমুদ্র স্নান, বিকেলে প্রিয়জনের পাশে দাঁড়িয়ে সুর্যাস্ত অবলোকনসহ প্রিয়সব মুহূর্ত যেন রঙিন হয়ে উঠেছে ভালোবাসা আর বাসন্তীর রঙে।

রাজশাহী থেকে ঘুরতে আসা বিল্লাল উদ্দিন ভালোবাসার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, একসঙ্গে ভালোবাসার আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া। হাতে হাত রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়া। বালিয়াড়িতে বসে ভালবাসার কথা বলা আর সেটি যদি হয় এই সমুদ্র সৈকত। তাহলে তো আর কথাই নেই।

ঢাকা থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক মিজান মিয়া জানান, প্রতিবছর শীত মৌসুমে সমুদ্র সৈকতে প্রায় বন্ধু-বান্ধবরা বেড়াতে আসেন। কিন্তু কর্মব্যস্ততার কারণে সৈকতে খুব একটা আসা হয় না। তাই এ ধরনের বিশেষ দিনগুলোতে অন্তত সৈকতের নরম বালু আর লোনাজলে পা ভেজানোর জন্য চলে আসি। চারিদিকে যেন ভালোবাসার রঙ লেগে আছে। আসলেই ভালো লাগছে।

ঢাকা উত্তরা থেকে আসা লতিফ ও মিনা দম্পতি বলেন, আজ ভালোবাসা দিবস এবং বসন্তের প্রথম দিন। কিন্তু আমাদের জন্য এই দিনটি আরো স্পেশাল। কারণ তিনবছর আগে এইদিনেই আমাদের বিয়ে হয়েছিল। তাই বিশেষ দিনে প্রিয়জনের সঙ্গে বিশেষ একটি জায়গায় ঘুরে বেড়ানো, সময় কাটানো আসলেই আমার কাছে অন্যরকম অনুভূতি। সত্যি খুব ভালো লাগছে।

ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে সময় কাটানো, আড্ডা দেওয়া, ঘুরে বেড়ানো আসলেই বিষয়টি খুবই আনন্দের। আর জায়গাটি যদি হয় এই সমুদ্র সৈকতের মতো সুন্দর, তাহলে বুঝতেই পারছেন অনুভূতিটা কেমন হবে এভাবেই বলছিলেন ঢাকার সাভার থেকে আসা পর্যটক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

তবে ভালোবাসা দিবসটিকে ঘিরে স্থানীয় যুবক সাইদ আনোয়ার বলছেন ভিন্ন কথা। তার মতে, কক্সবাজারে ভালোবাসা দিবসের নামে বহিরাগত রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক এনজিওকর্মীরা বেআইনি যৌনতায় তৎপর রয়েছে। স্থানীয়দের মাঝে এই দিবসটিকে ঘিরে তেমন সাড়া লক্ষ করা না গেলেও প্রভাব ফেলেছে সামাজিক জীবনাচরণে। পিতামাতা বা পারিবারিক সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকায় এনজিওকর্মীরা এমন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

এদিকে ভালোবাসা দিবস ও বসন্তকে ঘিরে কক্সবাজারের প্রায় চার শ’ হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসে পড়েছে বাড়তি চাপ। সব হোটেলেই ৮৫ ভাগেরও বেশি রুম আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। আবার কোনো কোনো হোটেলে বিশেষ এই দিন উপলক্ষে ৫০ শতাংশ ছাড়সহ পর্যটকদের জন্য রাখা হয়েছে নানা আয়োজন।

হোটেল ওয়ার্ল্ড বিচের পরিচালক শাহ নেওয়াজ জানান, এইদিনে পর্যটকদের জন্য ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বাড়তি সেবা নিশ্চিত করার বিষয়টিও আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।

পাঁচ তারকা মানের হোটেল কক্স টুডের ম্যানেজার আবু তালেব জানান, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে এবারে বেশ ভালোই সাড়া পড়েছে। পর্যটকদের বাড়তি সেবা দিতে আমাদেরও বিভিন্ন প্রস্তুতি ছিল। তবে করোনার কারণে এবারে বিশেষ কোনো কনসার্ট বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন নেই। তবুও আমরা আশা করছি ভ্রমণের আনন্দদায়ক এবং ভালো স্মৃতি নিয়েই পর্যটকেরা যেন ফিরতে পারবেন।

কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো: জিল্লুর রহমান বলেন, সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে সার্বক্ষণিক টুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। এছাড়া বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে এখানে লাখো পর্যটকের সমাগম হয়েছে। এ অবস্থায় পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে লাবনী, সুগন্ধা বিচসহ আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিশেষ দিনটিকে ঘিরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও সৈকতসহ আশপাশের এলাকায় পর্যটকদের আগমন ও স্থানীয়দের পদচারণা নিরাপদ করতে পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী পুলিশ কাজ করছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ( ডিসি) মো. শাহীন ইমরান বলেন, যেকোনো ধরনের অপ্রিয়কর পরিস্থিতি এড়াতে ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় সমুদ্র সৈকত এলাকায় ট্যুরিষ্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের টিম কাজ করছেন।

বিএনএ/ফরিদুল, এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ