28 C
আবহাওয়া
২:৫০ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ডাকসুর দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মসূচি

ডাকসুর দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মসূচি


বিএনএ, ঢাবি: অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। রোববার (১২ মার্চ) ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

ছাত্র অধিকার পরিষদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ডাকসু ভবনের সামনে ছিল। কিন্তু সেখানে ছাত্রলীগের সশস্ত্র অবস্থানের অভিযোগ তুলে স্থান পরিবর্তন করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।

পরিষদের সদস্যরা জানান, রাজু ভাস্কর্যেও অবস্থান কর্মসূচির সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের ঘেরাও করে এবং কয়েকজন সদস্যকে হেনস্তা করে। পরবর্তীতে ছাত্র অধিকার পরিষদ একটি মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে গিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

এসময় ছাত্রলীগের হামলার উদ্দেশ্যে অবস্থানকে হীন কর্মকাণ্ড উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানান সংগঠনের সদস্যরা। ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা বলেন, আজকে প্রমাণিত হয়ে গেল ডাকসু কেন হয় না! ডাকসু হলে ছাত্রলীগ কোথাও জিততে পারবে না। লোক লজ্জায় মিডিয়ার সামনে তারা ডাকসু চায় বললেও ডাকসুর দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আগেই তারা ডাকসু ভবনের সামনে ক্রিকেট ব্যাট, স্টাম্প, লাঠি-সোঠা নিয়ে অবস্থান নেয়। আমরা অবস্থান পরিবর্তন করে রাজুতে দাঁড়ালে সেখানে এসে বাইকের হরেন বাজিয়ে, গিয়ার দিয়ে শব্দ দূষণ করে অশ্রাব্য কটুক্তি করে শ্লোগান দিয়ে বাধাগ্রস্ত করে তারা।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ সারাদেশের শিক্ষাঙ্গণকে র্যাগিং, সেক্সুয়াল হেরাসমেন্ট, ছিনতাই, চাঁদাবাজী সহ অপরাধ অপকর্মের ক্যান্সারে রুপান্তরিত করেছে। ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীরা যে তাদেরকে প্রত্যাক্ষাণ করেছে তা আরও সুস্পষ্ট হবে।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্র সংসদ নির্বাচন এজন্যই বন্ধ রেখেছে যেন ছাত্রলীগের মাধ্যমে একচ্ছত্রভাবে ক্ষমতাসীনদল ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ডাকসু হলে ক্ষমতাসীনদের প্রভাব ক্ষর্ব হবে। ভিসি মহোদয় বললেন, এখন ডাকসু হলে জাতীয় রাজনীতির প্রভাব পরবে। এটিত মাথা ব্যাথা হলে মাথা কেটে ফেলার মতো কথা।

বিন ইয়ামিন মোল্লা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ ডিসেম্বর পালন করা হয়, ২৬ মার্চ পালন করা হয়, জাতীয় রাজনীতির সকল ঘটনাই পালন করা হয়। তাহলে ডাকসু বন্ধ রেখে উনি কীসের প্রভাব থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মুক্ত রাখতে চাচ্ছেন? আজ ক্ষমতাসীনদের দলীয় কুপ্রভাবেই ডাকসু বন্ধ আছে এটাই সত্যি। তাই দলীয় রাজনীতির কুপ্রভাব থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মুক্ত রাখতে হলে, পেশিশক্তি ও কালো টাকার রাজনীতি মুক্ত শিক্ষাঙ্গন তৈরী করতে হলে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন হলে সেটিই জাতীয় রাজনীতিকে পথ দেখাবে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় দলীয় জাতীয় রাজনীতি ছাত্ররাজনীতিকে কলুষণ মুক্ত করবে সেই আশা আমরা ছাত্ররা করতে পাচ্ছি না। শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ডাকসু আদায় করতে ছাত্র অধিকার পরিষদ রক্ত দিতে প্রস্তুত আছে।

ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ডাকসু শিক্ষার্থীদের বৈধ প্লাটফর্ম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ক্ষমতাসীনদের যোগসাজশে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র ত্রাস বজায় রাখার উদ্দেশ্যে এই নির্বাচন বন্ধ রেখেছে। কারণ নির্বাচন হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে ভোট দেবে না। সারাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।

এসময় ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য যে বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে সবথেকে বড়ো বঞ্চিত অংশই হলো শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি সব নির্বাচন হয়, হয় না শুধু ডাকসু নির্বাচন। অথচ শিক্ষার্থীরা প্রতিবছরই ছাত্র সংসদের জন্য ফি দিচ্ছে। মনে রাখতে হবে, ডাকসু শিক্ষার্থীদের অধিকারের বিষয়, ঐচ্ছিক কিছু নয়। ডাকসু নির্বাচন না করাটা প্রশাসনের নৈতিক এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতা শুধু শিক্ষার্থীদেরই অবহেলিত রেখেছে। তাই আমাদের দাবি হচ্ছে, অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। যদি তা না হয়, তবে ছাত্রদের সাথে সর্বাত্মক আন্দোলন যাওয়া হবে। প্রয়োজনে আমরা আদালতের দারস্থ হবো।

কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক রাসেল আহমেদ, বিজ্ঞান সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট, ঢাবি শাখার সেক্রেটারি আহনাফ খান সাঈদ, যুগ্ম সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনএ/মোছাদ্দেক, এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ