30 C
আবহাওয়া
১১:০৩ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » জামালপুরে মরিচের বাম্পার ফলন

জামালপুরে মরিচের বাম্পার ফলন

জামালপুরে মরিচের বাম্পার ফলন

বিএনএ,জামালপুর : জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ি, মেলান্দহ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলে এবার ৮ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে নতুন মরিচ। শ্রম মুজুরি বেড়ে যাওয়ায় এবার মরিচ চাষে উৎপাদন খরচও বেড়েছে।

কৃষকরা বলছেন, মরিচ চাষে যে খরচ হয়েছে সেটাও তুলতে পারছেন না। আর কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা বলছেন, মরিচ চাষীদের উন্নত জাতের মরিচ চাষে সহায়তা করছেন তারা।

সরিষাবাড়ির আওনা ইউনিয়নের কুলপাল চরের চাষী ইলিয়াস তিন বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তিনি জানান, অন্য বছর কৃষকের কাছ থেকে ৭৫ থেকে ৯০ হাজার টাকায় প্রতিবিঘা মরিচ ক্ষেত কিনে নেয়। এবার এখনও পাইকার আসতে শুরু করেনি। কাঁচা বেচতে না পারলে পাকা করে তুলবেন বলেও তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

কুলপাল চরের চাষী মুকুল মিয়া এ বছর চার বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা মরিচ ক্ষেত ৭৫ থেকে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যাবে বলে তিনি জানান।
কুলপাল চরের চাষী মুকুল মিয়া

সরিষাবাড়ির সাতারিয়ার মহিলা শ্রমিক কমলা, আনোয়ারা, জুলেখা, ওজুফা মরিচ ক্ষেতে কাজ করেন। তারা বলেন একজন পুরুষের চেয়ে মহিলা শ্রমিক বেশি মরিচ তুলতে পারে। ফলে মরিচ তোলার সময় তাদের শ্রমের চাহিদাও বাড়ে। কেউ দিন হিসেবে। আবার কেউ প্রতিমন চুক্তিতে ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে দেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা খরিদদাররা মরিচ কিনে স্তূপ করে রাখছে দেশের বিভিন্ন জেলায় নেয়ার জন্য। বাজারে দাম ভালো না থাকায় অনেকেই মরিচ তুলছেন না।

জামালপুর সদরের কেন্দুয়া কালিবাড়ি বাজার কাচা মরিচের জন্য বিখ্যাত। সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুদিন হাট বসে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি মরিচ কেনার জন্য এ হাটে আসেন। হাটের দিন ২ থেকে ৩শ ট্রাক কাচা মরিচ কেনা বেচা হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চাষীরা কাচা মরিচ তুলে এ হাটে বেচতে আসেন।

নাটোর থেকে মরিচ কিনতে আসা পাইকার আব্দুল আমীল বলেন, বছরের ৬ মাস এ হাট থেকে মরিচ কিনি। আবার এ অঞ্চলে শেষ হলে ওপার থেকে কিনে এনে এপারের বিভিন্ন হাট বাজারে পাইকারি বিক্রি করা হয়।

এদিকে জামালপুর সদর উপজেলার হাজিপুর, কেন্দুয়া,ভাটারা, ঘোষেরপাড়াসহ জেলার ৬ উপজেলায় মরিচের ব্যাপক চাষ হয়েছে। মরিচ চাষে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর উন্নত জাতের মরিচ চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই বাজারে আসতে শুরু করেছে কাঁচা মরিচ। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত মরিচ বাজারে এনে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

কৃষকরা বলছেন,বাজারে দাম না থাকায় খরচও উঠছে না। সার বীজ কিটনাশক গাড়িভাড়া এবং কামলা খরচ দিয়ে বাজারে যে দামে মরিচ বিক্রি হচ্ছে তাতে লোকসানে পড়ছেন। পাইকারী বাজারে প্রতিকেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। খোলা বাজারে যেখানে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। কৃষকরা জানিয়েছেন, এ বছর মরিচ চাষ করে ঋণের টাকাও পরিশোধ করতে পারবে না। তবে কৃষি কর্মকতা জানিয়েছেন, এবার জেলায় উন্নত জাতের মরিচ চাষ হয়েছে। কৃষকদের লাভবান করতে মাঠ পর্যায়ে চাষীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নিতাই চন্দ্র বণিক বলেন, এ বছর জেলায় ৮ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া ও রোগ বালাইয়ের বিষয়ে পরামর্শ পাশাপাশি সার্বক্ষণিক তদারকি করা হয়েছে। এতে ফলনও ভালো হয়েছে।

বিএনএনিউজ/ শাহীন/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ