26 C
আবহাওয়া
৯:১৭ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ১৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » জুমার দিনের গুরুত্ব ও ফজিলত

জুমার দিনের গুরুত্ব ও ফজিলত

দামেস্কের দক্ষিণে সৈয়দা জেয়নাব(র.) মাজার শহর

বিএনএনিউজ২৪ : জুমার দিন মুসলমানদের জন্য আল্লাহর একটি বিশেষ নেয়ামত, যা অসংখ্য বিশেষ আমলে ভরপুর। এই দিনের শ্রেষ্ঠ আমল হলো বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ইবাদত এবং দোয়া-দরুদ পড়ার একটি মাস্টার প্ল্যান করা। মুসলমানদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলো, শুক্রবার সকালে নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ আদায় করা।

জুমার দিনের বিশেষ আমল

 

জুমার দিনে বিশেষ কিছু আমল রয়েছে, যা মুসলমানদের পালন করা উচিত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পবিত্র কোরআনুল কারীমের তিলাওয়াত, যার প্রত্যেকটি অক্ষরে সওয়াবের বিশাল ভাণ্ডার রয়েছে। বিশেষ কিছু আয়াত রয়েছে, যেমন আয়াতুল কুরসি, সুরা ইয়াসিন, সুরা ওয়াকিয়া, সুরা মুলক, এবং সুরা দুখান, যার ফজিলত অত্যন্ত বেশি।

সুরা দুখানের তিলাওয়াত

 

হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জুমার রাতে বা দিনে সুরা দুখান পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা পাঠককে জান্নাতে একটি মহল তৈরি করে দেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি জুমার রাতে সুরা দুখান পড়বে, সকাল হওয়ার আগেই তার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।

ইবনে মারদুবিয়া সূত্রে জানা যায়, সুরা দুখান এবং সুরা ইয়াসিন পাঠ করলে পাঠক সকালে এমন অবস্থায় জাগ্রত হবে যে, তার সকল গুনাহ মাফ হয়ে গেছে।

সুরা কাহাফ তিলওয়াত : মর্যাদাপূর্ণ এই দিনের বিশেষ একটি আমল হচ্ছে সুরা কাহফ তিলওয়াত করা। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে। (আমালুল ইয়াওমী ওয়াল লাইল, হাদিস : ৯৫২)

বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা : এই দিনের আরেকটি আমল হচ্ছে নবীজির ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। এই মর্মে রাসুল (সা.) বলেন, ‘দিনসমূহের মধ্যে জুমার দিনই সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। এই দিনে সমস্ত সৃষ্টিকে বেহুশ করা হবে। অতএব তোমরা এই দিনে আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)

আমল উপস্থাপন

 

বৃহস্পতিবার রাতে সমস্ত সপ্তাহের আমল আল্লাহর সামনে উপস্থাপন করা হয় এবং এজন্য নবীজি (সা.) বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। নবীজি (সা.) বলেন, “বৃহস্পতি ও সোমবার আল্লাহর সামনে বান্দার আমল উপস্থাপন করা হয়, তাই আমি চাই আমার আমল পেশ করার সময় আমি যেন রোজা অবস্থায় থাকি।”

সোম ও বৃহস্পতিবার রোজার গুরুত্ব

 

নবীজি (সা.) বলেছেন, সোম ও বৃহস্পতিবারে আল্লাহ সব মুসলিমকে ক্ষমা করেন। তবে, যারা পরস্পর বর্জন করেছে, তাদের ক্ষমা করা হবে না। নবীজি (সা.) মুসলমানদের পরস্পরের সাথে তিন দিনের বেশি রাগ করে থাকতে নিষেধ করেছেন।

জুমার দিন ও এর গুরুত্ব

 

জুমার দিন ইসলামের সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। মহানবী (সা.) বলেছেন, “জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার একটি সময় রয়েছে।” এটি আসরের নামাজের পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়ার ১০ মিনিট আগ পর্যন্ত।

কোরআনে জুমার দিনে নামাজের গুরুত্ব উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “হে মুমিনগণ! যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত এগিয়ে যাও।” (সুরা জুমা: আয়াত ৯)

জুমার দিনের শ্রেষ্ঠ আমল

 

জুমার দিন নামাজ আদায় ছাড়া আরও কিছু আমল রয়েছে, যেমন:

১. মিসওয়াক করা।
২. ফরজ গোসল করা।
৩. উত্তম পোশাক পরা।
৪. সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৫. খুতবাহ মনোযোগের সাথে শোনা।
৬. বেচাকেনা বন্ধ রাখা।
৭. দ্রুত মসজিদে যাওয়া।
৮. সুরা কাহফ তেলাওয়াত করা।

হাদিসে এসেছে যে, “যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে, তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে।”

বেশি বেশি দরূদ ও দোয়া

 

জুমার দিনে বেশি বেশি দরূদ পড়া গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন, “জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরূদ পড়, কেননা তোমাদের দরূদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়।”

দোয়া কবুলের জন্য জুমার দিনে একটি বিশেষ মুহূর্ত রয়েছে, যা আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিবের মধ্যে।

হজরত ইবরাহিম (আ.) এর দোয়া

হজরত ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন, “হে আল্লাহ! আমাকে নামাজ প্রতিষ্ঠাকারী বানাও এবং আমার বংশধরদের থেকেও বানাও।” (সুরা ইবরাহিম: আয়াত ৪০-৪১)

জুমার দিন মুসলমানদের জন্য একটি বরকতময় দিন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিন নামাজ পড়াসহ সকল আমল যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন।

বিএনএ, এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ