বিএনএ,সাভার:আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকার ধামরাইয়ের সুয়াপুর ইউনিয়নে ইউপি মেম্বার ও সংখ্যালঘুর বাড়ীসহ ৫বাড়ীতে সন্ত্রাসী তান্ডব চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে নৌকার কর্মীরা। ১৫-২০টি মোটরসাইকেল নিয়ে নৌকা প্রতীকের কর্মী রাসেল হোসেন ও পাপ্পু হোসেনের নেতৃত্বে ৩০-৩৫জন ক্যাডার এ তান্ডব চালায়।
বাড়ীঘর ব্যাপক ভাংচুর করলে বাধা দিতে আসলে নারীসহ কমপক্ষে ১৫জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে বলে নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগীরা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে ও রোববার সকালে উপজেলার সুয়াপুর উত্তরপাড়া, কুটিরচর ও শিয়ালকুল এলাকায়। এ সন্ত্রাসী তান্ডবের ঘটনায় জনমনে চরম আতংকের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
রোববার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সূয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ কফিল উদ্দিনের কর্মী মোঃ রাসেল হোসেন, মোঃ পাপ্পো হোসেন, মোঃ আব্দুল জলিল, মোঃ আওলাদ হোসেন ও মোঃ কুদরত উল্লাহর নেতৃত্বে ১৫-২০টি মোটরসাইকেলযোগে ৩০-৩৫জন ক্যাডার শনিবার রাত ৯টার দিকে সুয়াপুর গ্রামের সংখ্যালঘু কাপড় ব্যবসায়ী গোপাল সাহা, মোবাইল ব্যবসায়ী মোঃ হানিফুর রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয় সাহা এবং রোববার সকাল ১১টার দিকে শিয়ালকোল গ্রামের আব্বাস ও আবুলের বাড়ী ঘরে হামলা চালায়। ব্যাপক ভাংচুর করাকালে বাড়ীর লোকজন এসময় বাঁধা দিতে গেলে হামলাকারি নৌকার প্রতীকের কর্মীরা নারীসহ তাদরকে বেধরক মারধর করে।
এসময় কমপক্ষে ১৫জন আহত হন। রাত ৯টা থেকে ১২পর্যন্ত তিনঘন্টাব্যাপী এ সন্ত্রাসী তান্ডব চালানো হলেও কেউ এগিয়ে আসেননি ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করতে। হামলাকারিরা তাদের ইচ্ছামত তান্ডব চালিয়ে উল্লাস করতে করতে চলে যায়।
ব্যবসায়ী হানিফুর রহমান বলেন, বিষয়টি মোটেও বুঝলামনা। কি কারণে আমার বাড়ীতে হামলা চালানো হল। আমি নৌকা প্রতীকেই ভোট দেই। আগেরবার হাফিজুর রহমান সোহরাবকে ভোট দিয়েছিলাম নৌকায়। এবার নৌকা পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কফিল উদ্দিন। তাকে ভোট দেয়ার আগেই আমার বাড়ীতে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর ও আমার স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করেছে।
শিয়ালকোল গ্রামের আব্বাস আলী বলেন, নৌকার প্রতীক পেয়েই যে অবস্থা আর পাশ করলেতো মনে হয় এদের জ্বালা যন্ত্রণায় এলাকায়ও থাকা যাবেনা। আমার বাড়ীতে হামলার কারণই জানতে পারলামনা।
হানিফুর রহমান হানিফের মা বলেন, রাসেল আমার গলায় ছ্যাইন (রামদা) ধইরা কয় এখন তর সোরহাব বাবারে আইতে ক তরে বাঁচাইবার লইগা। যাওয়ার সময় বলে যদি কাউরে কছ একেবারে শেষ কইরা ফালামু। আমরা এখন ভয়ে আছি বাবা। ওরা অনেক খারাপ। আমাগো বাচাও, ওরা আবারও আসতে পারে।
ব্যবসায়ী গোপাল সাহা বলেন, আমরা সংখ্যালঘু বলে আমাদের ওপর সবাই জুলুম করে। তবে হাফিজুর রহমান সোহরাব চেয়ারম্যানের সময় আমরা বেশ ভালই ছিলাম। আমাদের ওপর কিংবা বাড়ীঘরে কোন হামলা হয়নি। এরা চেয়ারম্যান হওয়ার আগেই যে অবস্থা শুরু করেছে তাতে মনে হয় আমরা এলাকাতেই থাকতে পারবনা।
এবিষয়ে রাসেল হোসেন ও মোঃ পাপ্পো হোসেন ঘটনা অস্বীকার করে বলেন আমরা এদিকে কখনো আসেনি। আমরা তখন নৌকার নির্বাচনী মিটিংয়ে ছিলাম।
ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, সূয়াপুর থেকে পলাম মেম্বার বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। তবে বাড়িঘর ভাঙচুরের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনএ/ইমরান খান,ওজি