বিএনএ যশোর: সম্প্রতি ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণীকে পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে দুইজনের বাড়ি যশোরে। তারা হরো, আলামিন (২৪) ও তানিয়া (২৩)।যশোর শহরের চাঁচড়া মধ্যপাড়া এলাকায় আলামিনের বাড়ি। আর তানিয়ার বাড়ি হচ্ছে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায়।
নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা আলামিনকে শনাক্ত করেছেন। তবে তারা জানান, আট মাস আগে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ‘আলামিন দুটি বিয়ে করেছেন। দুই সংসারে তার দুটি সন্তান রয়েছে। তাদের ফেলে তিনি ভারতে চলে যান। ভিডিওতে তাকে গোলাপি ফুলহাতা গেঞ্জি ও হাফপ্যান্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে। তার পায়ে কালো রাবারের ব্যান্ড ছিল। ভিডিওতে থাকা লাল ফুলহাতা টপস পরা মেয়েটির নাম তানিয়া। তার বাড়ি যশোরের অভয়গর উপজেলার নওয়াপাড়ায়। তানিয়া আলামিনের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভারতে নিয়ে যান।
আলামিনকে চেনেন এমন কয়েকজন ভারতে অবস্থানকারী জানান, বেঙ্গালুরুতে কোর্টলোর এলাকায় রাফি নামে একজনের ছত্রছায়ায় থাকে আলামিন, টিকটক হৃদয় বাবুসহ অন্যরা সবাই। রাফির বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা এলাকায়। তার প্রকৃত নাম আশরাফুল মণ্ডল। রাফিকে আলামিনরা ‘বস’ বলে সম্বোধন করেন।
আলামিনের বাবা ভ্যানচালক মনু মিয়া বলেন, ‘আলামিন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিনের স্বভাব ভালো না। তাদের কাছে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসতো। তারা ঘরে বসেই ইয়াবা সেবন করত। যে কারণে আট মাস আগে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। আলামিন ভারতে গেছে এবং তার বউ বাবার বাড়ি আছে। তাদের সঙ্গে পরিবারের কোনো যোগাযোগ নেই।
প্রতিবেশিরা জানিয়েছেন, নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল ও আলামিনের পরিচয় ফাঁস হওয়ার পর থেকে তার বাড়ির লোকজনও চাপের মধ্যে রয়েছেন।স্থানীয় পুলিশও বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ-খবর করছে বলে জানান তারা ।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বেলাল হোসাইন বলেন, ভারতের তরুণী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালের ঘটনা তিনি জানেন। ওই ঘটনায় জড়িত কারও বাড়ি যশোরে এমন তথ্য এখন তারা পাননি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়,গত ২১ মে ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। এই নির্যাতনের জড়িত অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া সবাই একই গ্রুপের এবং বাংলাদেশি বলে উল্লেখ করা হয়। ঘটনাটি প্রচার হওয়ার পর ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন নির্যাতনের শিকার তরুণীর বাবা। তরুণীকে পাচার করে নিয়ে যাওয়ার মূলহোতা টিকটক হৃদয় বাবুর পরিচয়ও নিশ্চিত হওয়ায় এ নিয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে খবর প্রচার হয়। তবে নির্যাতনের ভিডিওতে থাকা যশোরের আলামিন ও তার কথিত স্ত্রী তানিয়াকে শনাক্ত করেন তার প্রতিবেশী এবং পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে,ভারতের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম জানায়, নির্যাতনে জড়িত আলামিন ও তানিয়া গা ঢাকা দিয়েছে। এছাড়া ডালিম ও সবুজ নামে আরও দুই যুবক ছিল, তারাও পালিয়ে গেছে। তবে তাদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ।
বিএনএনিউজ/আরকেসি