27 C
আবহাওয়া
১২:১৮ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চট্টগ্রামে ঈদ বাজার ঘিরে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যবসার পরিকল্পনা

চট্টগ্রামে ঈদ বাজার ঘিরে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যবসার পরিকল্পনা

চট্টগ্রামে ঈদ বাজার ঘিরে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যবসার পরিকল্পনা

।। এনামুল হক নাবিদ ।।

বিএনএ, চট্টগ্রাম: রমজানের শুরু থেকেও ঈদ বাজার জমে ওঠার কথা থাকলেও তা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ২০ রমজান শেষে জমে ওঠেছে ঈদকে ঘিরে নিউমার্কেট, জহুর হকার মার্কেট এবং আশপাশের অন্তত ২ হাজার হকারের পসরায় কেনাকাটা। দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট উচ্চবিত্তদের মার্কেট হিসেবে পরিচিত। আর জহুর হকার্স মার্কেট মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের লোকজনের পুরোনো পরিচিত মর্কেট। এই দুই মার্কেট ঘিরেই ছোট খুপরিতে ঈদের জামা কাপড়ের পসরা সাজিয়েছেন অন্তত ২ হাজার ভাসমান হকার। তবে এর মধ্যে পুরো এলাকায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বিকিকিনি।

এদিকে ব্যবসায়ী নেতারা জানান, চট্টগ্রাম মহানগরীতে এবার ১০ হাজার কোটি টাকার বিকিকিনির পরিকল্পনা আছে তাদের। তারা বলছেন, ক্রেতাও বেশ মিলছে বিক্রিও হচ্ছে। ঈদের আগে বিক্রির এই পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়বে। জহুর হকার্স মালিক সমিতির নেতারা জানান, ৮০১টি দোকানের প্রতিটি গড়ে ২০ হাজার টাকা করে বিক্রি হচ্ছে এখন। দৈনিক অন্তত দেড় কোটি টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে। ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসবে বিক্রিও তত বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।

রোববার (৩১ মার্চ) সরেজমিন মার্কেটগুলো ঘুরে বিক্রি কেমন হচ্ছে ব্যবসায়ীদের কাছে এমন প্রশ্ন করলে জবাবে তারা বলেন, আমরা বিভিন্ন মার্কেটে খবর নিয়ে দেখেছি বিক্রি বেশ ভালই হচ্ছে। বিদেশি কাপড়ের চেয়ে দেশি কাপড়ের চাহিদা বেশি। সরবরাহ অন্য বছরের তুলনায় বেশ ভালো। তাই এখনও মনে করি ব্যবসায়ীরা বেশ ভালোই ক্রেতা পাচ্ছেন।

রোববার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জহুর হকার্স মার্কেটের প্রতিটি দোকানেই নানা ধরনের ঈদের পণ্যে ঠাসা। মোট ৮০১টি দোকান আছে এই মার্কেটে। সব ধরনের আইটেম পাওয়া যায় এই মার্কেটে। ঈদের ভরা মৌসুমে এখনও ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বাচ্চাদের জামা কাপড় পাওয়া যায় এই মার্কেটে। দামি কাপড়ও মিলছে। তবে এই মার্কেটে মহিলাদের আইটেম খুব কম জানালেন বিক্রেতারা।

নিউমার্কেট থেকে বের হতেই ফুটপাতজুড়ে প্রতি বছরের মতো এবারও হকারদের পসরা দেখা যায়। পুরো এলাকার ফুটপাত দখল করেই হকাররা পসরা সাজিয়েছেন। দোকানিরা জানান, আমাদের একবার উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ছাড় হিসাবে দোকান খুলতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাই ব্যবসা চলছে ফুটপাতে। নিউমার্কেট থেকে বের হতেই ছোট অসংখ্য খুপরি দোকান। ফুটপাথের খুপরি দোকানে বিক্রি হচ্ছে বাচ্চাদের শার্ট প্যান্ট থেকে পাঞ্জাবি পায়জামা সবকিছু।

জহুর হকার মার্কেটের সঙ্গেই নগরীর অন্যতম অভিজাত মার্কেট নিউমার্কেট অবস্থিত। এক সময় এই নিউমার্কেট ছিল চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত ক্রেতাদের প্রথম পছন্দের মার্কেট। কিন্তু সেই জৌলুস নেই। নগরীতে অত্যাধুনিক লিফট এস্কেলেটর সমৃদ্ধ শপিং মল বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতা কমে গেছে। রোববার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, মার্কেটের এক পাশে এস্কেলেটর স্থাপন করা আছে। কিন্তু বন্ধ।

দোকানিরা জানান, নিউমার্কেটের ওই এস্কেলেটর অনেক দিন ধরেই বন্ধ। পাশের লিফটগুলো সচল না। দোকানিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে ক্রেতারা আগের মতো কেন আসবে। নতুন নতুন শপিং মল হচ্ছে। ক্রেতারা এখন সেখানেই ছুটছে। এই মার্কেটের প্রথম প্রবেশ পথের সঙ্গে লাগোয়া দোকান হোসাইনস শপ। এখানে শার্ট প্যান্ট থেকে মহিলাদের সব ধরনের কাপড়ের আইটেম পাওয়া যায়।

দোকানের কর্মী মারুফ বলেন, দৈনিক ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হচ্ছে। তবে বিক্রির পরিমাণ আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না। মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় দেখা যায়, স্বর্ণের দোকানগুলো একেবারে ফাঁকা। ক্রেতার অপেক্ষায় যেন বসে আছেন বিক্রেতারা। দুয়েকটি দোকানে ক্রেতা দেখা গেলেও বেশিরভাগ ক্রেতাশূন্য। দোকানিরা বললেন, ঈদের আগে ক্রেতা সমাগম বাড়তে পারে।

চট্টগ্রাম মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী বলেন, ঈদকে ঘিরে এবার নগরীর মার্কেটগুলোতে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হবে। আমাদের সমিতির অধীনে চট্টগ্রাম মহানগরীতে মুদি দোকান থেকে কাপড়ের দোকান মিলিয়ে ৩ লাখ দোকান আছে। এর মধ্যে ছোট বড় মার্কেট মিলিয়ে কাপড়ের দোকান আছে সাত হাজারের বেশি। এসব দোকানে প্রতি বছরের মতো এবারও হাজার কোটি টাকার বিক্রির টার্গেট আছে।

বিএনএনিউজ/ বিএম

Loading


শিরোনাম বিএনএ