ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশে পেপাল সার্ভিস চালু করা অত্যন্ত জরুরি, বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সারদের সুবিধার্থে। যদিও কিছু নেতিবাচক প্রভাব থাকতে পারে, তবে অর্থনীতির অগ্রগতি ও বৈশ্বিক ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এই সেবার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং খাত উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ১০ লাখ ফ্রিল্যান্সার সক্রিয় রয়েছেন। তাদের সম্মিলিত বার্ষিক আয় প্রায় ১.৯ বিলিয়ন ডলার, যা প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার সমতুল্য।
ফ্রিল্যান্সারদের আয় অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং কাজের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ, একজন সফল ফ্রিল্যান্সার মাসে প্রায় ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন। তবে, গড় আয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া কঠিন, কারণ এটি ব্যক্তিভেদে এবং কাজের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়।
নিচে ৫০টি যুক্তি উপস্থাপন করা হলো, যা পেপাল চালুর পক্ষে যায়:
১. ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সরাসরি উপকারিতা:
বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা সহজেই আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের কাছ থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারবে।
লেনদেনের গতি বাড়বে, ফলে ফ্রিল্যান্সারদের সময় বাঁচবে।
ফ্রিল্যান্সাররা কম ট্রান্স্যাকশন ফি দিয়ে সহজেই টাকা তুলতে পারবে।
বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে কাজ করার সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।
দেশীয় ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত হবে।
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করা নতুনদের জন্য সহজ হবে।
আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের সাথে বিশ্বাসযোগ্য লেনদেন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।
বিকল্প পেমেন্ট মেথডের তুলনায় পেপাল অধিক জনপ্রিয় ও স্বীকৃত।
পেপাল থাকলে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের অর্থ লেনদেনের জটিলতা কমবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট, কনটেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিংসহ বিভিন্ন সেক্টরের ফ্রিল্যান্সাররা সরাসরি পেমেন্ট নিতে পারবে।
২. দেশীয় অর্থনীতির উন্নয়ন:
বৈদেশিক মুদ্রা আয় বৃদ্ধি পাবে।
দেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও মজবুত হবে।
স্থানীয় উদ্যোক্তারা আন্তর্জাতিক লেনদেনে সুবিধা পাবে।
বাংলাদেশি পণ্যের আন্তর্জাতিক বিক্রির সুযোগ বাড়বে।
ই-কমার্স খাত আরও শক্তিশালী হবে।
নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।
লেনদেনের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা বাড়বে।
ব্যাংকিং সেক্টরের ওপর চাপ কমবে।
ক্যাশলেস সোসাইটি তৈরির দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
৩. আন্তর্জাতিক লেনদেন সহজ ও নিরাপদ:
আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেস থেকে আয়ের সহজ ব্যবস্থা হবে।
ফ্রড ও স্ক্যামের আশঙ্কা কমবে।
ট্রান্সফার ফি কমবে, ফলে ফ্রিল্যান্সারদের আয় বাড়বে।
অন্যান্য বিকল্প পেমেন্ট মেথডের তুলনায় পেপাল অনেক সহজ ও দ্রুত।
আন্তর্জাতিক ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে লেনদেনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
বর্তমান ব্যাংকিং প্রক্রিয়ার তুলনায় টাকা তোলা সহজ হবে।
দেশীয় ফ্রিল্যান্সাররা আরও প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পাবে।
ক্রেডিট কার্ড ছাড়াও আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
যেকোনো সময়ে, যেকোনো স্থান থেকে টাকা লেনদেন করা যাবে।
পেপাল বাংলাদেশের ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমকে আরও আধুনিক করবে।
৪. ফ্রিল্যান্সারদের বিকল্প পেমেন্ট ব্যবস্থা সীমিত:
স্ক্রিল ও পেওনিয়ারের তুলনায় পেপাল সহজ ও গ্রহণযোগ্য।
ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেনের ঝামেলা এড়ানো সম্ভব।
অন্য বিকল্পগুলোতে অনেক বেশি ট্রান্সফার ফি দিতে হয়।
পেপাল থাকলে ফ্রিল্যান্সারদের আন্তর্জাতিক পেমেন্ট পেতে দালালের প্রয়োজন হবে না।
ব্যাংকের জটিল কাগজপত্র ছাড়াই লেনদেন করা যাবে।
ছোট ট্রান্সেকশনের ক্ষেত্রেও সুবিধা পাওয়া যাবে।
মার্কেটপ্লেসের বাইরে সরাসরি ক্লায়েন্ট থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করা সহজ হবে।
আন্তর্জাতিক অনলাইন কোর্স ও টুলস কেনা সহজ হবে।
আইটি খাতের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।
নতুন উদ্যোক্তারা সহজেই অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারবে।
৫. ডিজিটাল বাংলাদেশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন:
ফ্রিল্যান্সারদের কাজের পরিধি আরও বাড়বে।
বাংলাদেশের আইটি ও সফটওয়্যার এক্সপোর্ট বাড়বে।
বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরা সহজে দেশে টাকা পাঠাতে পারবে।
গ্লোবাল মার্কেটের সাথে আরও ভালোভাবে সংযুক্ত হওয়া সম্ভব হবে।
ফ্রিল্যান্সারদের লেনদেন স্বয়ংক্রিয় হবে।
স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে।
আন্তর্জাতিক মানের ফিনটেক সুবিধা পাওয়া যাবে।
স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম আরও শক্তিশালী হবে।
স্মল বিজনেস ও সলপ্রেনিউরদের জন্য সুযোগ তৈরি হবে।
দেশীয় অর্থনীতিতে ডিজিটাল লেনদেনের ভূমিকা আরও বাড়বে।
২০২৫ সালে এসে বাংলাদেশে পেপাল চালু করা এখন সময়ের দাবি। এটি শুধু ফ্রিল্যান্সারদের জন্য নয়, বরং গোটা দেশের অর্থনৈতিক ও ডিজিটাল উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় ও নিরাপদ পেমেন্ট গেটওয়ে হিসেবে পেপাল বাংলাদেশের আইটি, ই-কমার্স, স্টার্টআপ ও উদ্যোক্তা খাতে বিপ্লব ঘটাতে পারে। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশে পেপাল সার্ভিস চালু করা।
জয়নাল আবেদিন, চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম।
মতামতের জন্য প্রকাশক বা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক/সম্পাদক/ বার্তা সম্পাদক দায়ি নন।