বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। নির্দেশনায় চট্টগ্রামের যে ৭১টি অবৈধ ইটভাটাকে এর আগে জরিমানা করা হয়েছিল সেগুলোসহ সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চট্টগ্রাম প্রশাসন ও স্থানীয় পরিবেশ অধিদপ্তরকে হলফনামার মাধ্যমে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. মজিবর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বাদীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ কামরুল হোসেন।
মনজিল মোরসেদ জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের দায়ের করা একটি রিট পিটিশনের শুনানি শেষে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে সাতদিনের মধ্যে অবৈধভাবে পরিচালিত চট্টগ্রামের সব ইটভাটা বন্ধ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া কাঠ ও পাহাড়ের মাটিকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা ইটভাটার তালিকা দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
চট্টগ্রামের প্রশাসন আদালতের নির্দেশ অনুসারে ইটভাটা বন্ধের কর্যক্রম শুরু করলেও লোহাগড়া ও চন্দনাইশ উপজেলাসহ কিছু কিছু জায়গায় ইটভাটা বন্ধ না করে শুধু জরিমানা করে। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে পদক্ষেপ না নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দু’জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জিল্লুর রহমান ও এসএম আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়। আবেদনে বলা হয়, জরিমানা করার পরেও উক্ত ইটভাটাগুলো আবারও চলছে এবং পরিবেশ দূষণ করছে।
আদালত শুনানি শেষে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালককে চট্টগ্রামের যে ৭১টি ইটভাটাকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে তা সহ লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত সব অবৈধ ইটভাটা আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বন্ধ করে আদালতে এভিডেভিট দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ২২ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছেন।
মনজিল মোরসেদ আরও জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা সম্পূর্ণ প্রতিপালিত না হওয়ায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা আদালতে ক্ষমা প্রার্থনা করে দ্রুত আদেশ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন এবং অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পুনরায় অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানান।
তিনি বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত) ২০১৯) এর ৪ ধারা অনুযায়ী, লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ইটভাটা চালানো যাবেনা। এর ব্যত্যয় হলে আইনের ১৪ ধারা অনুসারে দুই বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
কিন্তু চট্টগ্রামের স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় সেখানকার বিভিন্ন এলাকায় শত শত ইটভাটা চলছে এবং এতে করে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ১৮২টি ইটভাটা জ্বালানি হিসেবে কাঠ ও পাহাড়ের মাটি ব্যবহার করছে যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
বিএনএনিউজ/মনির