বিএনএ, সাভার: ঢাকা জেলা বিএনপির সমাবেশ শেষে ফেরার পথে ককটেল বিষ্ফোরণ ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে ৪০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সাভার মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
এ দিকে সাভারের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারা হলেন, সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো. আক্তার হোসেন কবিরাজ (৫২), ভাকুর্তা ইউনিয়ন তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি (৪৫), উয়ালিউল্লাহ ওয়ালিদ (৩৭) ও মো. সজিব হোসেন (৩৪)।
মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন, ঢাকা জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি খন্দকার মাইনুল হাসান খান বিল্টু, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি কফিল উদ্দিন, ঢাকা জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম, সাভার থানা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইফুদ্দিন, সাভার পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বদিসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামী করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন মামলার বাদী সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল জলিল।
তবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দাবি, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত এসব মামলা গায়েবী ও গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে বিএনপির যৌক্তিক আন্দোলনকে দমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টায় সাভারের আমিনবাজারে মিরপুর মফিদ-ই-আম স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ঢাকা জেলা বিএনপি’র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন সাভার মডেল থানা পুলিশের একটি দল আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় আমিনবাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিকেলে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সমাবেশ থেকে ফেরার পথে সাভারের হেমায়েতপুরে তানিন প্লাস্টিক চেয়ার কারখানার গোডাউনের সামনের পাকা রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও চলন্ত গাড়ি ভাংচুর করে। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে পুলিশের ওই দল বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দৌড়ে পালিয়ে যান। স্থানীয়দের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে ঘটনার জন্য দায়ী হিসেবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের চিহ্নত করে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি কালো রঙের শপিং ব্যাগে ৫ টি অবিস্ফোরিত ককটেল, ৩ টি বিস্ফোরিত ককটেলের খোসা, ৯ টি কাঁচের টুকরা ও বিএনপির এক দফা দাবি সম্বলিত ব্যানার জব্দ করা হয়। পরে ওইদিন রাতেই পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল জলিল মন্ডল বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী ও সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল জলিল বলেন, আমিনবাজারে বিএনপির সমাবেশ থেকে ফেরার পথে বিএনপির নেতা-কর্মীরা হেমায়েতপুরে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের খোসা, অবিস্ফোরিত ককটেল এবং ভাঙা কাঁচের অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, বৃহস্পতিবারের ঘটনায় বিষ্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় ইতিমধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বিএনএ/ ইমরান খান, ওজি