32 C
আবহাওয়া
৫:৩৮ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » জিতুর বয়স ১৯ হলেও এজাহারে ১৬: র‍্যাব

জিতুর বয়স ১৯ হলেও এজাহারে ১৬: র‍্যাব

জিতুর বয়স ১৯ হলেও এজহারে ১৬: র‍্যাব

বিএনএ ডেস্ক: শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার আসামি দশম শ্রেণির ছাত্র জিতুর বয়স জেএসসি পরীক্ষার সনদ অনুযায়ী ১৯ বছর। তবে মামলার এজাহারে বয়স ১৬ বছর উল্লেখ করা হয়েছে। এমন তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মঈন জানান, বুধবার র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‍্যাব-১ ও ৪ যৌথ অভিযানে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকা থেকে জিতুকে গ্রেপ্তার করে।

বলেন, রোববার আশুলিয়া থানায় উৎপল কুমারের ভাই অসীম কুমার সরকারের করা মামলায় আসামির বয়স ১৬ বলে উল্লেখ করা হয়। ২০২০ সেশনের বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ডে তার জন্ম ২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি লেখা। এ হিসাবে বৃহস্পতিবার তার বয়স হয় ১৯ বছর ৫ মাস ১৩ দিন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ওই ছাত্রকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে জানা গেছে, স্কুলের এক ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সে অযাচিতভাবে ঘোরাফেরা করছিল। এ ধরনের আচরণ থেকে ছাত্রকে বিরত থাকতে বলেছিলেন শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার। এতে ওই ছাত্র ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রীর কাছে হিরোয়িজম দেখাতে শিক্ষক উৎপলের ওপর হামলার পরিকল্পনা করে।

গত ২৫ জুন স্কুলে ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে দশম শ্রেণির ওই ছাত্র। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিক্ষক উৎপল মারা যান। ঘটনার পরপরই ওই ছাত্র পালিয়ে যায়।

খন্দকার মঈন বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৫ জুন ওই ছাত্র ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে স্কুলে আসে। শ্রেণিকক্ষের পেছনে সেটি লুকিয়ে রাখে। কলেজ মাঠে ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালীন শিক্ষক উৎপল কুমারকে মাঠের এক কোণে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্ট্যাম্প দিয়ে অতর্কিতভাবে তাঁকে বেধড়ক আঘাত করে। ওই ছাত্র শিক্ষক উৎপলকে প্রথমে পেছন থেকে মাথায় আঘাত করে। পরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন উৎপল কুমার মারা যান।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ছাত্র এলাকায় অবস্থান করে। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় এলাকা ছাড়ে। প্রথমে বাসযোগে মানিকগঞ্জে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে রাত্রিযাপন করে। পরদিন সে তার অবস্থান পরিবর্তন করে আরিচা ফেরিঘাটে পৌঁছায় এবং ট্রলারযোগে নদী পার হয়ে পাবনার আতাইকুলাতে তার এক পরিচিতের বাড়িতে আত্মগোপন করে।

পরদিন ভোরে সে আবারও তার অবস্থান পরিবর্তন করার জন্য আতাইকুলা থেকে বাসে কাজিরহাট লঞ্চ টার্মিনালে যায়। এরপর লঞ্চে আরিচাঘাট পৌঁছায়। সেখান থেকে বাসে গাজীপুরের শ্রীপুরে ধনুয়া গ্রামে এক বন্ধুর বাড়িতে আত্মগোপন করে। সেখান থেকেই ওই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ও স্কুল চলাকালে ছাত্রীদের ইভটিজিং ও বিরক্ত করত ওই ছাত্র। স্কুল প্রাঙ্গণে সবার সামনে ধূমপান, ইউনিফর্ম ছাড়া স্কুলে আসা-যাওয়া, মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করত।’

ওই ছাত্রের নেতৃত্বে ‘দাদা’ নামে একটি কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানায় র‍্যাব। র‍্যাব বলেছে, গ্যাং সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে করে ওই ছাত্র যত্রতত্র আধিপত্য বিস্তার করত। পরিবারের কাছে তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হতো।

আল মঈন বলেন, নিহত শিক্ষক উৎপল কুমার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ২০১৩ সালে আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল এন্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন।

তিনি ওই কলেজের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন। এর ফলে তিনি বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল ইউনিফর্ম, চুল-কাটা, ধূমপান করা ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গজনিত বিষয়ে পরামর্শ দিতেন। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলাধুলা পরিচালনা করাসহ শিক্ষার্থীদের সুপরামর্শ, মোটিভেশন ও কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে সৃজনশীলতা বিকাশে ভূমিকা রাখতেন।

বিএনএ/ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ