29 C
আবহাওয়া
৬:৩৬ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ১৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বিএসআরএমকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের আল্টিমেটাম

বিএসআরএমকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের আল্টিমেটাম

বিএসআরএমকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের আল্টিমেটাম

বিএনএ,চট্টগ্রাম: ইস্পাত শিল্প প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলসের (বিএসআরএম) কারখানায় গভীর নলকূপের কারণে পানি সংকটে পড়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ১০ গ্রামের মানুষ। পানির জন্য গ্রামের মানুষের মাঝে হাহাকার চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ফলে সুপেয় পানি তীব্র সংকটে পড়া এলাকাবাসীর সঙ্গে মাঠে নেমেছেন স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও।

এসময় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন তীব্র পানি সংকট সৃষ্টির দায়ে বিএসআরএম কারখানাকে রড উৎপাদন বন্ধ করার দুই মাসের আল্টিমেটাম দেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এখন থেকে বিএসআরএম ফ্যাক্টরিতে কোন প্রকার স্ক্যাপ (কাঁচামাল) প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। কারখানা বন্ধ রেখে আগামী দুই মাসের মধ্যে ফেনী নদী থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি এনে কারখানা চালু করতে পারে। আগামী ১ বছরের মধ্যে জনবসতি এলাকা থেকে কারখানা সরিয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে স্থানান্তর করতে হবে। নয়তো এখানে কারখানা চলবে না। আমরা কোন শিল্প এখানে চাই না। জনগণের ক্ষতি করে শিল্প আমাদের দরকার নাই।

রোববার (৩০ মে) সকালে বারইয়ারহাট পৌরসভার সোনাপাহাড়স্থ বিএসআরএম মূল ফটকের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পানি সংকটে থাকা হাজার হাজার মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওই এলাকার সাংসদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, মিরসরাইয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শিল্প জোন করে দিয়েছে। ১২শ’ একরের এতো বিশাল অর্থনৈতিক অঞ্চল থাকতে বাইরে কোন শিল্প কারখানা হতে আমরা দিবো না। আমি বলতে চাই যত শিল্প কারখানা আছে আগামী ১ বছরের মধ্যে সবগুলোকে শিল্প জোনে আসতে হবে।

তিনি বলেন, মিরসরাই কৃষিপ্রধান এলাকা। বিএসআরএম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো এখানে এসে ধীরে ধীরে পাহাড় দখল করে বিশাল কারখানা গড়ে তুলেছে। শিল্প কারখানা আমাদের প্রয়োজন আছে। সেজন্য মিরসরাইয়ে ইকোনমিক জোন করা হয়েছে। এ এলাকায় কোনো শিল্প কারখানা থাকলে তা ইকোনমিক জোনে স্থানান্তরিত হোক। তারা কারখানা প্রতিষ্ঠা করার আগে বলেছিল- ফেনী নদী থেকে পানি এনে তা পরিশোধন করে ব্যবহার করবে। কিন্তু তা না করে ১০-১২টি গভীর নলকূপ বসিয়ে তারা কাজ চালাচ্ছে। গভীর নলকূপ বসানোর কারণে এলাকার মানুষ পানি পাচ্ছে না। সব শুকিয়ে গেছে।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেন, বিএসআরএম বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে আতাঁত করে পাহাড়ি ছরা দখল করে নিয়েছে। পাহাড় কেটেছে, পানি বন্ধ করে রেখেছে। কৃত্রিমভাবে তারা এ পানি সংকট সৃষ্টি করেছে। বিএসআরএম এর কোন স্ক্রাপ গাড়ি কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, অনেকদিন ধরেই আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের পানির কষ্টের কথা শোনা যাচ্ছে। নলকুপের পানি নেই। অনেকে গভীর নলকুপ বসাতে গিয়েও পানি পাচ্ছে না। পেলেও কিছুদিন পর দেখা যাচ্ছে, পানি শেষ! পরে জানা গেলো, বিএসআরএম শক্তিশালী মেশিন বসিয়ে তলদেশের পানি তুলে নিচ্ছে! বিএসআরএম যেন এলাকার তলদেশের পানি উত্তোলন বন্ধ রাখে, মানুষ যেন সুপেয় পানির হাহাকার থেকে মুক্তি পায়। আজকের মানববন্ধনে এই দাবিগুলোই জোরালো হয়েছে। এই আন্দোলন চলতে থাক। হোক প্রতিবাদ।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন মিরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকনসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ।

বিএসআরএম’র পানি উত্তোলনের কারণে পানি সংকট দেখা দিয়েছে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর ইউনিয়ন ও বারইয়ারহাট পৌরসভা এলাকায়। এছাড়া করেরহাট, ধুম, ওসমানপুর ইউনিয়নের আংশিক এলাকায়ও পানি উঠছে না।

স্থানীয়রা জানান, রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম গভীর নলকূপ থেকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ৮টি পাম্প বসিয়ে অবৈধভাবে পানি উত্তোলনের ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে পুরো উপজেলাজুড়ে। উপজেলার ১নং করেরহাট, ২নং হিঙ্গুলী, ৩নং জোরারগঞ্জ, ৪নং ধুম, ৫নং ওসমানপুর, ৬নং ইছাখালী, ৭নং কাটাছরা, ৮নং দূর্গাপুর এবং ১১নং মঘাদিয়া ও ১৬নং সাহেরখালী থেকে অবৈধভাবে গভীর নলকূপ থেকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পাইপ ও টিউবওয়েল দ্বারা বেশ কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে পানি উত্তোলন করে আসছে।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ