22 C
আবহাওয়া
১২:১১ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে গেল সেই নবজাতক

পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে গেল সেই নবজাতক

পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে গেল সেই নবজাতক

বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীতে জন্মের পর ফুটপাতে ফেলে যাওয়া নবজাতকটির ঠাঁই হয়েছে পুলিশ কর্মকর্তা কামরুল হুদা ও ফারহানা দম্পতির ঘরে। শিশুটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘রোজাইয়া রাত্রি।’২০ লাখ টাকার বন্ড ও শর্ত সাপেক্ষে রাত্রিকে নতুন বাবা-মার কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে এই আদেশ দেন চট্টগ্রাম আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক ওসমান গণি। এসময় শিশুটিকে অভিভাবকের হাতে তুলে দেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর।

আদালত সূত্রে জানা যায়, প্রক্রিয়া শুরুর পর নিঃসন্তান দুই দম্পতি শিশুটিকে জিম্মায় নিতে আবেদন করেন আদালতে। তার মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের আরআরএফ রিজার্ভ ফোর্সের উপ পরিদর্শক (এসআই) কামরুল হুদা ও ফারহানা আক্তার রূপা দম্পতি এবং ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন। দুই দম্পতিই শিশুটিকে জিম্মায় নিতে যে কোনো পরিমাণের বন্ড দিতেও রাজি হন।

ভার্চুয়াল আদালতে দুই দম্পতির আবেদন শোনেন বিচারক। তাদের সাথে সরাসরি কথাও বলেন। ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেনের স্ত্রী আদালতে উপস্থিত না থাকলেও সস্ত্রীক আদালতে উপস্থিত থেকে একটি সন্তানের জন্য নিজেদের আকুতির কথা জানান কামরুল হুদা ও ফারহানা আক্তার রূপা।

শুনানি শেষে আগামী ৩০ মে স্থানীয় এক ব্যক্তি ও একজন উকিলসহ আদালতের সামনে শিশুটিকে সশরীরে অবস্থান নিশ্চিত করে ২০ লাখ টাকা বন্ড ও হলফ নামা তৈরির দিন ধার্য করে শিশুটিকে কামরুল হুদা ও ফারহানা আক্তার রূপা দম্পতির জিম্মায় দেন আদালত।
এ বিষয়ে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর মাহমুদ বলেন, আদালতের নির্দেশে উদ্ধারকৃত নবজাতক রোজাইয়া রাত্রিকে পুলিশের উপ-পরিদর্শক কামরুল হুদা ও ফারহানা দম্পতির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাকে দত্তক নিতে অনেক আবেদন জমা পড়েছিল। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় চট্টগ্রাম শহরে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তার কোলে তাকে তুলে দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।

গত ২৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে নগরের জিইসি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস লাগোয়া ফুটপাতে সদ্য জন্ম নেওয়া ফুটফুটে বাচ্চাটিকে দেখতে পেয়ে ৯৯৯— এ ফোন দেন মামুন নামে এক যুবক। পরে মিনিট দশেকের মধ্যেই সেখানে ফোর্স নিয়ে হাজির হন ওসি মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি দ্রুত শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে শিশুটির সার্বিক দায়িত্ব পালন করা হয়।

এরআগেও ওসি মোহাম্মদ আলমগীর আকবর শাহ থানার ওসি থাকাকালীন ২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টায় চট্টগ্রাম নগরের কর্নেলহাট এলাকার একটি ডাস্টবিনে পাওয়া যায় একটি শিশু। তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেয় পুলিশ। একুশের প্রথম প্রহরের কিছুক্ষণ আগে শিশুটিকে উদ্ধার করার কারণে তার নাম রাখা হয় ‘একুশ’। উদ্ধার থেকে শুরু করে চিকিৎসাসহ সব কাজেই সামনে থেকে ছিলেন মোহাম্মদ আলমগীর।

পরে শিশুটি তিনমাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর যখন সুস্থ হয় তখন শিশুটিকে পেতে আদালতে ১৬ জন আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে ১২ জন আবেদনকারীর উপস্থিতিতে যাচাই-বাছাই ও শুনানি শেষে আদালত শর্ত সাপেক্ষে ‘একুশ’কে শাকিলা-জাকের দম্পতির জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দেন। একই বছরের ৬ এপ্রিল প্রথম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ (শিশু আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত) জান্নাতুল ফেরদৌসের আদালতে শিশুটিকে শাকিলার কোলে তুলে দেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার দেবাশীষ কুমার রায়। এ সময় শাকিলার স্বামী চিকিৎসক জাকের ইসলাম পাশে ছিলেন।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ