16 C
আবহাওয়া
৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ - জানুয়ারি ১, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » আনোয়ারায় তিন মাসে ৬৯গরু চুরি, পুলিশের ব্যর্থতাকেই দুষছেন খামারিরা

আনোয়ারায় তিন মাসে ৬৯গরু চুরি, পুলিশের ব্যর্থতাকেই দুষছেন খামারিরা

আনোয়ারায় তিন মাসে ৬৯গরু চুরি, পুলিশের ব্যর্থতাকেই দুষছেন খামারিরা

।। এনামুল হক নাবিদ ।।

চট্টগ্রামে আনোয়ারা উপজেলায় গরু চুরির ঘটনা থামছেই না। প্রতিদিন কোন না কোন গ্রামে রাতের আঁধারে সংঘবদ্ধ চোর খামারে বা গৃহস্তের বাড়িতে হানা দিয়ে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে গরু। এ কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রান্তিক খামারি ও গৃহস্তরা। থানায় অভিযোগ করে চুরি হাওয়া গরু উদ্ধার বা চোর শনাক্ত করতে পারতেছেন না থানা পুলিশ। চোর ধরতে বা গরু চুরি ঠেকাতে চোখে পড়েনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা।

এর মধ্যে গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বৈরাগ ইউনিয়নের মধ্যম গুয়াপঞ্চক গ্রামে এক রাতে পৃথক তিনটি স্থান থেকে পাঁচটি গরু ও একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয়রা জানান- রাত আড়াইটার দিকে মোহাম্মদ মোরশেদের মালিকানার এম এম অ্যাগ্রো ফার্ম থেকে দুটি গরু তুলে নিয়ে যায় চোরের দল। একই এলাকার মো. রুবেলের দুটি এবং আবদুল মান্নানের তিনটি গরুও চোরের দল ট্রাকে তুলে নেয়।

এম এম অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক মোহাম্মদ মোরশেদ জানান – খামার থেকে আসা একটা শব্দ শুনে মনে হলো আমাদের গরু চুরি হচ্ছে। ঘরে জানালা দিয়ে দেখি চোর খামার থেকে গরু নিয়ে যাচ্ছে।চোরের সদস্য আমরা যাতে ঘর থেকে বাহির হতে না পারি। সেজন্য বাহির থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা চোর চোর বলে চিকিৎসা করলে এলাকাবাসী মনে করেছিল বন্যহাতির আসছে।সেই ভয়ে কেউ চোর ধরতে আসেনি।চোর চলে যাওয়ার পরে আমাদের চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন এসে চোরের সদস্যদের লাগানো লকটা খুলে দিলে আমরা ঘর থেকে বের হই। পরে আমার ভাতিজা মিজানুর রহমান ও হাবিবুল্লাহ মোটরসাইকেল নিয়ে  পাঁচ শিকদার বাড়ি এলাকায় পৌঁছালে অস্ত্রের মুখে চোরের দল তাঁদের জিম্মি করে। তারপর হাবিবুল্লাহ কিছু বলতে চাইলে হাবিবুল্লাহর মুখে অস্ত্র  ডুকিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়।তারপর হাবিবুল্লাহ পরনে লুঙ্গি ছিঁড়ে মিজানুর রহমান ও হাবিবুল্লাহ হাত,পা এবং চোখ বেঁধে রাখেন।একপর্যায়ে ট্রাকে থাকা দুটি গরু নিচে নামিয়ে মিজানের মোটরসাইকেলটি গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। এ ছাড়া হাবিবুল্লাহর মুঠোফোনটিও কেড়ে নেয় তারা।

আ,নোয়ারা ডেইরী ফার্মার্স এসোসিয়েশনের সূত্র মতে গত আড়াই মাসে ৬৯টি গরু, ৬টি ছাগল চুরি হয়েছে আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে।

ভুক্তভোগী হলেন- মোঃ আবু তাহেরের ৪টি,বিলপুরের গ্রামের মোঃ তারেকের ২ টি,মোঃ জসীমের ৬টি,আবদুল শুক্করের ২টি,রেহেনা বেগমের ১টি গরু এবং ৬টি ছাগল,সাজ্জাদ হোসেন ১টি,শেলী আকতারের ১টি,মদন শাইরের ৩টি,জাহানারা বেগমের ৩টি, বারখাইন ইউনিয়নের সাদ্দাম হোসেনের ৭টি, শিলাইগড়া গ্রামের শাকিলের ২টি, মালঘর বাজারের হেলাল এর ২টি,অজ্ঞাত ৫টি, এছাড়া অক্টোবর মাসে ২৫টি গরু চুরি হয়েছে।

চুরি ঠেকাতে ৫ই নভেম্বর উপজেলা প্রশাসন ,থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি প্রদান করেছে আনোয়ারা ডেইরী ফার্মার্স এসোসিয়েশন। এসময় আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ মনির হোসেন গরু চুরি ঠেকাতে নানান প্দক্ষেপের কথা বললেও কার্যত কিছুই করা হয়নি।

খামারিরা অভিযোগ করে জানান, এ ব্যাপারে পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন ফল পাচ্ছেন না তারা। এখনও পর্যন্ত চুরি হয়ে যাওয়া কোন গরু উদ্ধার হয়নি। গরু চুরি রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথাযথ প্রদক্ষেপ কামনা করেন ক্ষুদ্র খামারি ও কৃষকরা।

আনোয়ারা ডেইরি ফার্মার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তানভীর হাসান জানান-গরু চুরি নিয়ে অসহায় আনোয়ারার ছোট থেকে বড় সব খামারি। এবার চুরি ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন ,থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে আনোয়ারা ডেইরী ফার্মার্স এসোসিয়েশনের পক্ষে থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। চুরি এবং সশস্ত্র ডাকাতি ঠেকাতে খামারিদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি মূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন –  গত ২ মাসে কোন গরু চুরির ঘটনা ঘটেনি।তবে সম্প্রতি গত সোমবার গুয়াপঞ্চক গ্রামে চুরির ঘটনায় আমরা একটা মামলা নিয়েছি।ঘটনার সাথে জড়িত গাড়িটা আমরা জব্দ করতে পেরেছি। ২ মাস আগে বিলপুরে একটা চুরির ঘটনা ঘটেছিল।এর পর থেকে আমরা মোটামুটি কন্ট্রোল করতে পারছি। গত সোমবার চোরেরা ২টি গরু নিয়ে গিয়েছে এবং ৩টা গরু নিয়ে যেতে পারেনি আমরা সেগুলো উদ্ধার করে মালিকের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। আমরা আশা করি এই রকমের আর কোন ঘটনা ঘটবে না।আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় সাহসি অভিযান পরিচালনা করছি।চুরি ঠেকানোর জন্য আমরা কার্যকরী আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বিএনএনিউজ/ নাবিদ/ আরএস /এইচমুন্নী 

Loading


শিরোনাম বিএনএ