বিএনএ,ঢাকা: তরুণরা চাকরি পেয়ে যাতে দেশের ভেতরে থাকতে পারেন সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার(২৯ ডিসেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আগামি বছর থেকেই অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হবে।জাতির পিতার যে স্বপ্ন ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সে লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।অগণতান্ত্রিক ধারার সরকার ক্ষমতায় ছিল বলেই স্বাধীন দেশ হওয়ার পরও উন্নয়ন হয়নি।স্বাধীন দেশ হয়েও বহির্বিশ্বের কাছে হাত পাতা, খুবই লজ্জাজনক অধ্যায় ছিল।স্বাধীন দেশকে কেউ অবহেলার চোখে দেখলে এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক। যেহেতু গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা ছিল না, হত্যা কু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছিল এবং স্বৈরশাসকরা বার বার ক্ষমতা এসেছিল, ওই ক্ষমতাটা ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে বন্দি ছিল যে কারণে উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকেনি। সেখান থেকে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার কারণে উন্নয়নের ধারা সচল হয়েছে। সাধারণ মানুষ তার সুফল পাচ্ছে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে দেশ সেবার সুযোগ দেয়ায় জনগণের প্রতি পুনরায় কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, তারা পরপর তিনবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া সম্ভব হয়েছে।সরকার যেমন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা নিয়েছে তেমনি ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১০ বছর মেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনাও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পরবর্তীতে ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত পৃথক প্রেক্ষিত পরিকল্পনা এবং শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন,২০২১ থেকে ’৪১ এই সময়ের মধ্যে দেশকে কিভাবে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আরও কয়েকটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করতে হবে।যার মধ্যে ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার।আওয়ামী লীগ সরকারে থাকুক বা ভবিষ্যতে যারাই আসবে তারা যদি এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, তাহলে, বাংলাদেশ একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা বলে জানান সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।মঙ্গলবারের এনইসি সভায় অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চূড়ান্ত করা হয়েছে বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২০২০ থেকে ২০২৫ এই ৫ অর্থবছরে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০২৫ শেষে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫১ শতাংশে উন্নীত হবে, সেইসঙ্গে চরম দারিদ্র ৭ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসবে।আর ২০২৫ সাল পর্যন্ত দেশে-বিদেশে ১ কোটি ১৩ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানান এম এ মান্নান।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৫ অর্থবছর শেষে জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান দাড়াবে ৪২ শতাংশ এবং কৃষিখাতের ১০ শতাংশ। পরিকল্পনায়, করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনরোদ্ধার, রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের নানা কৌশলও অন্তর্ভুক্ত আছে।
বিএনএনিউজ/আরকেসি