বিএনএ, চট্টগ্রাম : দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়ীতে প্রথমবারের মত নোঙর ফেললো পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘ভেনাস ট্রাইয়াম্প’।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা পানামার পতাকাবাহী জাহাজটিকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব দুইজন সিনিয়র পাইলটের নেতৃত্বে টাগবোট ‘কাণ্ডারী-৮’ এর সহায়তায় মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মিত জেটিতে আনা হয়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসে।
জানা যায়, গত ২২ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার পেলাভুবন সিলেগন বন্দর থেকে মাতারবাড়ীর কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ নিয়ে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় ভেনাস ট্রাইয়াম্প । জাহাজটি ২০০৯ সালে নির্মিত একটি জেনারেল কার্গো শিপ। এটি ১২০ মিটার লম্বা ও ৯ হাজার ৬৮০ টন ওজন ক্ষমতাসম্পন্ন। এছাড়া জাহাজটির ড্রাফট সাড়ে পাঁচ মিটার। সি-শোর মেরিন প্রাইভেট লিমিটেডের জাহাজটির দেশীয় এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে এনসেইন্ট স্টিমশিপ লিমিটেড এবং স্টিবেটর হিসেবে গ্রিন এন্টারপ্রাইজ। এ জাহাজে ৩১৩ প্যাকেজে ৭৩৬ টন স্টিল স্ট্রাকটার আনা হয়েছে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য। এর মধ্যে রয়েছে বিম, কলাম, গার্ডার, টাওয়ার ইত্যাদি।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মো. আতাউল হাকিম সিদ্দিকি জানান, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেলের ড্রাফট বেশি থাকায় জোয়ারের জন্য বহির্নোঙরে অপেক্ষা না করেই জাহাজটি সরাসরি জেটিতে ভিড়তে সক্ষম হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে কর্ণফুলী নদীর জোয়ারের ওপর নির্ভর করে বহির্নোঙরে (সাগর) অপেক্ষমাণ জাহাজ জেটিতে আনা হয়। অপেক্ষার সময় বাড়লে পরিবহন ব্যয় বাড়ে আমদানিকারকদের।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, মাতারবাড়িতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মিত জেটিতে জাহাজ ভিড়ানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। যেহেতু মাতারবাড়ি পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর জলসীমা বিস্তৃত তাই সেখানে জাহাজ ভিড়লে ‘পোর্ট অব কল’ ধরা হবে চট্টগ্রাম বন্দরকেই। অর্থাৎ যাবতীয় মাসুল চট্টগ্রাম বন্দরই পাবে।
মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক এবং চট্টগ্রাম বন্দর সদস্য (প্রশাসন) মো. জাফর আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমা উপকূলের উত্তরে মীরসরাই থেকে দক্ষিণে মহেশখালি-কুতুবদিয়া পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য পোর্ট অব কল ধরা হবে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে। জাহাজ ভেড়া থেকে মাসুল আদায় পর্যন্ত সব কিছুই করবে চট্টগ্রাম বন্দর।
তিনি বলেন, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরে ৮ থেকে ১০ হাজার কন্টেইনার পরিবহনের উপযোগী জাহাজ ভেড়ানো যাবে। ফলে বাংলাদেশ ছাড়াও আমাদের প্রতিবেশী যেসব দেশের বন্দর সুবিধা নেই তারাও মাতারবাড়ী বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া কলকাতা ও সেভেন সিস্টার খ্যাত ভারতের রাজ্যগুলো আমাদের বন্দর ব্যবহারে দীর্ঘদিন ধরে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বিএনএনিউজ/মনির/জেবি