বিএনএ, চট্টগ্রাম : কক্সবাজারের ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে দ্বিতীয় দফায় স্বেচ্ছায় ৪২৭ পরিবারের আরও ১ হাজার ৭৭২ রোহিঙ্গা সোমবার বাসে করে ভাসানচরে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের বোর্ড ক্লাব থেকে তারা নৌবাহিনীর জাহাজ এলসিইউ (ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি) মাধ্যমে ভাসানচরে পৌঁছাবে। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম পর্যায়ে কক্সবাজার থেকে ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গা ভাসানচরে যায়।
সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেয় এই রোহিঙ্গারা। সন্ধ্যায় আরও কয়েকটি বাসে তারা চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করে। এর আগে এদের কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে বাসে করে এনে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠে অস্থায়ী পয়েন্টে রাখা হয়।
রাতে নগরীর পতেঙ্গা এলাকার বিএফ শাহীন কলেজে অবস্থানের পর সকালেই জাহাজযোগে এসব রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা করবে। বাংলাদেশ সরকার ১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরের পরিকল্পিত আবাসনসহ আধুনিক সব জীবন-যাত্রার ব্যবস্থা করে রেখেছে। পর্যায়ক্রমে নির্ধারিত রোহিঙ্গাদের এখানে স্থানান্তর করা হবে।
এদিকে ঢাকায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের চাপ দিয়ে স্থানান্তর করা হচ্ছে না। তারাই স্বেচ্ছায় যাচ্ছে। এ নিয়ে কোনো কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিদেশি গণমাধ্যমে জোর করে ভাসানচরে নেওয়ার যে খবর আসছে, তা সত্য নয়।
গত ২০১৭ সালের অগাস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে দেশটি থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। একই বছরের নভেম্বর মাসে কক্সবাজার থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেয় সরকার।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।বর্তমানে সেখানে ৩০৬ জন রোহিঙ্গা বসবাস করছে, যারা সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করে গত মে মাসে ফিরে এসেছিল।
বিএনএনিউজ/জেবি