বিএনএ, ঢাকা : রাজধানীর গুলশানের আবাসিক ফ্ল্যাটে অবস্থিত বিদেশি পণ্যের অনলাইন ব্যবসা মেসার্স আরাজ ট্রেডিংয়ে অভিযান চালিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর। অভিযানকালে ভ্যাট আইন পরিপালন না করে ব্যবসা পরিচালনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ জানায়, সামাজিক মাধ্যমে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার সংস্থার উপ-পরিচালক নাজমুন নাহার কায়সারের নেতৃত্বে গুলশান ১ এর ৩০ নম্বর রোডের ১২ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত ওই প্রতিষ্ঠানের অভিযান চালানো হয়। এ সময় দেখা গেছে, স্থানীয় গুলশান ভ্যাট সার্কেলে এই অনলাইন ব্যবসার ভ্যাট জমা দেওয়ার কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির মালিকের নাম সাজ্জাদ আলী শরীফ।
অভিযোগকারী ভ্যাট গোয়েন্দাকে জানান, ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে কতিপয় ব্যবসায়ী অনলাইনে পণ্য বিক্রি করায় শোরুমের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে ব্যবসার প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ ক্ষুন্ন হচ্ছে। এরপর অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন দেখতে পাননি ভ্যাট গোয়েন্দার দল। সংশ্লিষ্ট ভ্যাট সার্কেলে যাচাই করে দেখা যায়, ওই সার্কেলে বিগত মাসগুলোতে প্রতিষ্ঠানটির কোনও রিটার্ন জমা হয়নি। গত ৩ বছর ধরে অনলাইনে অলঙ্কার, মহিলাদের পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের ব্যবসা করছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যবসা চালানো হয়। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমেও এই অনলাইন ব্যবসার উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। অভিজাত এলাকার বাসায় তারা দীর্ঘদিন ধরে দামি ও এক্সক্লুসিভ বিদেশি পণ্য বিক্রি করছে।
অনুসন্ধানে ভ্যাট গোয়েন্দারা আরও দেখতে পান, আরাজের অধিকাংশ পণ্যই পাকিস্তানের তৈরি। ব্যাগেজ ও পার্সেলে এসব পণ্য এনে বাসায় বসে তারা অনলাইনে বিক্রি করছে। তবে ভ্যাট আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন না নিয়ে এবং কোনো মাসিক রিটার্ন জমা না দিয়ে এই ব্যবসা পরিচালনা করা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। বিদেশ থেকে আনা এসব পণ্যের তারা যথাযথ শুল্ক কর দিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ। অভিযানকালে আরাজের প্রাঙ্গন থেকে স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রির দলিলাদি জব্দ করে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ২টি ব্যাংক এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির লেনদেন সম্পন্ন করছে। ইতোমধ্যে ভ্যাট গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট ওই ২টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। এই হিসাব আমলে নিয়ে পরে ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, সংস্থার গোপন অনুসন্ধানে এ জাতীয় আরও অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ব্যবসা করছে। তারা ভ্যাটের আওতায় নেই। এ পর্যন্ত এমন ১৬টি প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পাওয়া গেছে। ভ্যাট আইন অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠানর বিরুদ্ধে ভ্যাট গোয়েন্দা কঠোর পদক্ষেপ নিবে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিএনএনিউজ/ এসকেকে/ এইচ.এম।