বিএনএ, সাভার : অবশেষে সাভার মডেল কলেজে শিক্ষার্থীদের অব্যাহত আন্দোলনের মুখে সমকামি শিক্ষক রমজান আলীকে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম। এসময় আন্দোলনকারি শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবিগুলো পরবর্তীতে ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে সাভার মডেল কলেজ শিক্ষার্থীদের টানা ২য় দিনের আন্দোলনের খবর পেয়ে কলেজে ছুটে আসেন ইউএনও। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ্য আলোচনা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে, রোববার সকাল থেকেই সাভার মডেল কলেজের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে প্রতিষ্ঠানটির ইসলামী বিভাগের শিক্ষক সমকামি রমজান আলীকে প্রত্যাহার করে তার স্থানে দায়িত্ব পালনকারি মো. আবু সাঈদকে বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া কলেজটির অর্থনীতি বিভাগের শোকজ করা শিক্ষক আসাদুজ্জামান জিমকেও স্বপদে বহাল রাখার পাশাপাশি জৈষ্ঠতা লঙ্ঘন করে বাংলা বিভাগের শিক্ষক দিলারা খানমকে প্রদান করা অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের অব্যাহত আন্দোলনের মুখে কলেজের শিক্ষক রমজান আলীকে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই শিক্ষক ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২০০৮ সালে ইসমাইল নামে এক শিক্ষার্থী টেস্ট পরিক্ষায় ফেল করায় তাকে বাসায় ডেকে নিয়ে বলাৎকারের চেষ্টা চালায় কলেজটির শিক্ষক রমজান আলী। এঘটনায় ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানালে সেটি বোর্ডে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বোর্ড কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এবং আরও বেশ কয়েকজন ছাত্রের সাথে একই ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ উঠায় কলেজ থেকে রমজান আলীকে চিঠি দিয়ে তার বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি কলেজে না এসে নিম্ন আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। তবে ওই মামলায় হাজিরা না দেয়ার কারণে মামলাটি খারিজ হয়ে গেলে সে পরবর্তীতে আরও একটি মামলা করেন যা বর্তমানে সুপ্রিমকোর্টে পেন্ডিং অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বোর্ডের দেয়া নির্দেশনা অমান্য করে এবং জৈষ্ঠতা লঙ্ঘন করে দ্বিতীয় বারের মতো দিলারা খানম নামে এক শিক্ষককে অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করেন। এই সুযোগে রমজান আলী কলেজে যোগদান করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে চাইলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নামেন। সোমবার দ্বিতীয় দিনের আন্দোলন চলাকালে উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিরসনের জন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে রুদ্ধধার বৈঠক করেন সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। পরে সকলের সম্মতিক্রমে অভিযুক্ত রমজান আলীকে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।
বিএনএ/ইমরান, এমএফ