21 C
আবহাওয়া
৪:৩৮ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ১৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » অতি বৃষ্টি ও জোয়ারঃ ডুবে আছে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল

অতি বৃষ্টি ও জোয়ারঃ ডুবে আছে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল

অতি বৃষ্টি ও জোয়ারঃ ডুবে আছে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল

বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে টানা চার দিন ধরে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত দু’দিনে ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে চট্টগ্রামে। সেইসাথে নগরীর বিভিন্নস্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পাহাড়ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে গত দুইদিনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত ১০৫ পরিবারকে সরিয়ে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।তাছাড়া নগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকসহ নিচু এলাকাগুলো জোয়ারের সময় পানিতে তলিয়ে গেছে।জলাবদ্ধতায় হাটু পানিতে ডুবে আছে বাকলিয়াসহ চান্দগাঁওয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করেছে। এরআগের দিন বুধবার চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৪ মিলিমিটার। এমন টানা বৃষ্টির জেরে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামের নীচু এলাকা। এছাড়া প্লাবিত হয়েছে চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, রাউজান, কক্সবাজার বিভিন্ন উপজেলাসহ চট্টগ্রাম নগরের বেশিরভাগ এলাকা।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। পাশাপাশি মৌসুমী বায়ুর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে। লঘুচাপ ও মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় চট্টগ্রামে আজ বৃহস্পতিবারও ভারি বর্ষণ হতে পারে। পাশাপাশি পাহাড়র ধসের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত রয়েছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, লঘুচাপের প্রভাবে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।  গত দু’দিনে ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে চট্টগ্রামে।  চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত এবং নদী বন্দরকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতিভারি (৮৯ মিমির বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের আশঙ্কা রয়েছে। কর্ণফুলী নদীতে ভাটা শুরু হয়েছে বিকেল ৪টা ২২ মিনিটে, আবার জোয়ার শুরু হবে রাত ১১টা ৭ মিনিটে।

কখনো মাঝারি, কখনো ভারি বৃষ্টির কারণে তিনদিন ধরে নগরীর বিভিন্নস্থানে বিশেষ করে নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে জোয়ারের সময় নগরীর অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, নগরীর ডিসি রোড, বাকলিয়া তক্তারপুল, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, চান্দগাঁওয়ের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে।
No description available.

 

 

এদিকে ভারি বর্ষণে বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। নগরের বায়েজিদ লিংক রোডের ৫ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম পাশে এবং ব্রিজ সংলগ্ন ফুটপাতসহ কিছু অংশে দেবে গেছে। ব্রিজের নিচের অংশেও দেখা গেছে ব্যাপক ধস নামার চিহ্ন। আশপাশে তৈরি হয়েছে বড় বড় ফাটল। এছাড়া নগরের খুলশী থানার বায়তুল আমান আবাসিক এলাকায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাহাড়ের নিচে থাকা দুইটি ঘর বিধ্বস্ত হয়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,  বিভিন্ন পাহাড় থেকে ১০৫টি পরিবারকে সরিয়ে চারটি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। তাদের আল হেরা মাদ্রাসা, রউফাবাদ রশিদিয়া মাদ্রাসা, ফিরোজ শাহ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লালখান বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আনা পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্যসহায়তার পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আজ (বৃহস্পতিবার) মতিঝর্ণা, ফিরোজশাহ ও আকবরশাহ এলাকার পাহাড় থেকে ২৫ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান বলেন, নগরের লালখান বাজার এলাকার গরিবুল্লাহ শাহ এলাকায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ হতাহত হয়নি। তবে একটু দূরে ৫টি পরিবার ছিল। পাহাড়ধসের মাটি তাদের রাস্তায় পড়ে। যার কারণে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। তাই ৫ পরিবারকে আমরা নিরাপদ স্থানে নিয়ে এসেছি।

চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারি পরিচালক নিউটন দাশ বলেন, আমরা নগরীর অন্তঃত পাঁচটি পাহাড় পরিদর্শন করেছি। সেখানে অনেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন। তাদের সরে যাবার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। বিকেল ৪টার দিকে নগরীর গরীবউল্লাহ শাহ মাজার এলাকায় আমান উল্লাহ হাউজিংয়ে ছোট পাহাড় ধসে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের টিম সেখানে যায়। এর আগে সকালে আমবাগান এতিমখানা পাহাড় এবং বায়েজিদ লিঙ্ক রোডেও পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। আমান উল্লাহ হাউজিংয়ে যেখানে পাহাড় ধসে পড়েছে, সেখানে কোনো ঘর ছিল না। অদূরে একটি ঘর ছিল। সেখানে মাটি আসেনি।

বিএনএনিউজ/মনির, এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ