বিএনএ, সাভার, ইমরান খান: ঢাকার ধামরাইয়ে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর ধামরাই উপজেলার বালিয়া, চৌহাট, আমতা, গাংগুটিয়া, যাদবপুর, সানোড়া, সুতিপাড়া, কুশুরা, রোয়াইল ও নান্নার ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল উৎপাদন হয়।
এসব এলাকা ছাড়াও ধামরাই পৌরসভাসহ উপজেলার ভাড়ারিয়া, ধামরাই, কুল্লা, সূয়াপুর, বাইশাকান্দা ও সোমভাগ ইউনিয়নে কাঁঠালের বাগান না থাকলেও প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমবেশি কাঁঠাল গাছ রয়েছে। সেই সাথে ফলও ফলেছে আশাতীত।
সবুজে শ্যামলে ঘেরা একটি পৌরসভা ও ১৬ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ধামরাই উপজেলা। উপজেলাটিতে রয়েছে ছোট বড় নদ-নদী, খাল-বিল। রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে বাড়ির উঠান ও চারপাশে ফাঁকা জায়গা। সেই ফাঁকা জায়গার চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে ঘরোয়া পরিবেশে কাঁঠাল গাছের বাগান। উপজেলার বালিয়া, চৌহাট, আমতা, যাদবপুর, সানোড়া, সুতিপাড়া, কুশুরা, নান্নার ও গাংগুটিয়া ইউনিয়নে বিপুলসংখ্যক কাঁঠালের বাগান রয়েছে। উপজেলার এসব কাঁঠাল বাগান থেকে কৃষকরা প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার কাঁঠাল বিক্রি করে থাকেন।
ধামরাই উপজেলার সবচেয়ে বড় কাঁঠালের হাট বসে ধামরাই উপজেলার বাথুলী ও কাওয়ালিপাড়া বাজার। বাথুলী বাজারে শুক্রবার, মঙ্গলবার ও কাওয়ালিপাড়া বাজারে রবিবার, বুধবার সপ্তাহে দু’দিন হাট বসানো হয়। সপ্তাহে একদিন বৃহস্পতিবার কালামপুর হাট বসানো হয়। কালামপুর হাঁটেও কাঁঠালের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্রতিদিন বাজারে কাঁঠাল বিক্রি করা হয়।
কাঁঠাল কিনতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা আসেন এসব হাটগুলোতে। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা লকডাউন থাকায় এবার আগের মতো বেশি ব্যবসায়ী আসতে পারছে না। অন্য বছরের মতো ব্যবসায়ী আসতে পারলে আরও বেশি দামে কাঁঠাল বিক্রি হতো বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
কাওয়ালিপাড়া, বাথুলী ও কালামপুর হাঁটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব হাঁটে ছোট সাইজের কাঁঠাল (অনুমান ৩কেজি থেকে ৬কেজি ওজন) সর্বোচ্চ ৫০ টাকা, মাঝারি সাইজের কাঁঠাল (অনুমান ৭কেজি থেকে ১৫কেজি) ১৫০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। এবং বড় সাইজের কাঁঠাল (১৫কেজির ওপরে) প্রতিটি কাঁঠাল ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাওয়ালিপাড়া, বাথুলী, কালামপুর হাঁটে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল আমদানি হচ্ছে। ক্রেতাও রয়েছে পর্যাপ্ত। দামেও খুশি কৃষকরা।
চারিপাড়া গ্রামের মোঃ আজিজুল বলেন, বাড়ির সামনে দিয়ে পাকা রাস্তা। এ কারণে কাঁঠাল নিয়ে হাটে আসতে পেরেছি। দামও ভালো পেয়েছি। গ্রামের কৃষকরা রাস্তার কারণে কাঁঠাল নিয়ে হাটে আসতে পারছেন না।
বালিয়া ইউনিয়নের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, আমি প্রতিবছরই কাঁঠালের ব্যবসা করি। তুলনামূলক ভাবে এবছর কাঁঠালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ভালো লাভজনক ব্যবসা হবে বলে আশাবাদী।
বাথুলী হাঁটে পাইকারি কাঁঠাল কিনতে আসা ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ব্যবসায়ী মোঃ আবুল হোসেন বলেন, ঢাকার উত্তর বাড্ডাতে পাইকারি সরবরাহ দিতে তিনি প্রায় পাঁচশত কাঁঠাল কিনেছেন। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি।
বিএনএ/ওজি