বিএনএ,চট্টগ্রাম: সরকারি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করে চলছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। ৫ থেকে ৬শ’ অতিথির উপস্থিতিতে রীতিমতো সাজসাজ রব। কেউ খাচ্ছেন, কেউ বা আবার উপহার বুঝিয়ে দিয়ে পান চিবুতে চিবুতে খোশগল্পে মাতছেন। থেমে নেই আয়াসুয়োর দলও। শাড়ি লেহেঙ্গার ঝকমারি সাজে বিয়ের আনন্দে উদ্বেল তাঁরা। এতসব আনন্দ উচ্ছ্বাসের মধ্যে সবাই হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন যে, দেশব্যাপি করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় এসব অনুষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায় বিয়ে নিয়ে এই কাণ্ড ঘটেছে। দুপুর থেকেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলছিল সেখানে। বেলা বাড়তে অতিথি সমাগম বাড়ার সাথে সাথে ঘনিয়ে আসে বিয়ের ক্ষণও। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন সব ছন্দ আর আনন্দ হারিয়ে গেল। কারণ ১টার দিকে স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন চট্টগ্রামের রাউজান রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।
বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলের সামনে পুলিশের গাড়ি দাঁড়াতেই হুলুস্থুল পড়ে যায়। পুলিশ দেখে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করে দেয় সবাই। পালালেন কমিউনিটি সেন্টার কর্ণফুলী কনভেনশন হল’র ব্যবস্থাপক। বসে নেই আয়োজক ছেলে-মেয়ের মা-বাবাও। তারাও পালালেন। প্লেট, খাবারদাবার, উপহার সব ফেলে বৃষ্টির মধ্যে দৌড়ে পালাতে শুরু করেন অতিথিরা। বাদ যাননি বর রফিকুল ইসলাম এবং কনে শাহনাজ বেগমও। সুযোগ বুঝে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন তারা। উৎসবে গমগম করা একটি বিয়ে বাড়ি মুহূর্তে ভুতুড়ে বাড়িতে রূপ নেয়।
পুলিশের উপস্থিতিতে জনশূন্য কমিউনিটি সেন্টারে অনেক খোঁজাখুঁজির পর শেষে কর্ণফুলী কনভেনশন হলের ম্যানেজার জামাল উদ্দিন বাদশা এবং পাত্রীর বাবা জামাল হোসেনের খোঁজ মেলে। এরপরই তাদের আটক করা হলেও প্রথমবারের মতো মুচলেকা নিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের।
অভিযানটির নেতৃত্বে ছিলেন রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনোয়ার হোসেন শামীম। তিনি বলেন, ‘আমি ফোর্স নিয়ে যেই না কমিউনিটি সেন্টারের সামনে গাড়ি থেকে নেমেছি, সঙ্গে সঙ্গে ভেতরে শুরু হয়ে গেল হুড়োহুড়ি, ছোটাছুটি। ঢোকার পর ২-৩ মিনিটও যায়নি, হঠাৎ আবিষ্কার করি আমার সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা ছাড়া আশপাশে আর কেউ নাই। এতোগুলা মানুষ এমন ভোজবাজির মতো অদৃশ্য হয়ে গেল!’
বিএনএনিউজ/মনির