29 C
আবহাওয়া
৭:৪৩ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-২৯

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-২৯

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র একটি প্রামাণিক গ্রন্থ যা ১৯৭১ সালে এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সংগঠিত বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত তথ্যভান্ডার হিসাবে স্বীকৃত। ১৫ খন্ডে প্রকাশিত এ তথ্য ভান্ডারে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা সাধারণ মানুষের অজানা। বিশেষ করে এ প্রজন্ম জানেই না কত রক্ত, কত কষ্ট, নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে।

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অর্জন ও উন্নয়নে বিশ্বের বিস্ময়। বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বাঙ্গালি জাতি বিলীন হয়ে যেত! এমনটাই মনে করেন সমাজ বিজ্ঞানীরা। নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জানাতে  বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ) ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে আসছে।  বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছে। ১ মার্চ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে বাংলাদেশ স্বাধীনতার  নেপথ্যে গণ মাধ্যমের ভূমিকা, বিশেষ করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের।

আজ(২৯ মার্চ২০২২) প্রকাশিত হলো

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-২৯

২৯তম পর্ব
শরণার্থী শিবিরগুলি পরিদর্শনের পর কানাডীয় প্রতিনিধিগণ বলেন : এটা এখন পরিস্কার যে, পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে একটি জাতিকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলো। তাঁরা বলেন, এটা এই শতাব্দীর সবচে কলঙ্কজনক অধ্যায়। শুধু কানাডার জনসাধারণের নয়, বিশ্ববাসী বিশেষ করে কমনওয়েলথ দেশসমূহের মানুষের যা কিছু করণীয় আছে আমরা তা অবশ্যই তুলে ধরবো।

তাঁরা বলেন, পাকিস্তান, ভারত ও কানাডা সকলেই কমনওয়েলথের সদস্য। কমনওয়েলথের একটি সদস্যরাষ্ট্রের সমরনায়করা বাংলাদেশকে ও বাঙালী জাতিকে নিশ্চিহ্ন করবে তা কোনমতেই সহ্য করা যায়না।
কানাডীয় পরিষদের এই তিনজন সদস্য হলেন ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির মি: জর্জেস লাচাঁস, মি: এ বিউইন ও মি: হিথ নেলসন।

সম্প্রতি ভেনিজুয়েলার কারাকাস থেকে প্রকাশিত খৃষ্টীয় বিশ্বের প্রভাবশালী দৈনিক ‘দ্য রিলিজিয়ন’ পত্রিকায় বলা হয় : পাকিস্তানী হানাদাররা বাংলাদেশে যে নারকীয় বর্বরতায় লিপ্ত হয়েছে তা দেখলে যীশুখৃষ্ট নিজেও ভয়ে শিউরে উঠতেন।
পাক হানাদারদের এই পৈশাচিকতার কঠোর সমালোচনা করে ‘দ্য রিলিজিয়ন’ পত্রিকায় সম্পাদকীয় কলামে বলা হয় : পাক সামরিক সরকার বাংলাদেশের ঘটনাবলীকে ঘরোয়া ব্যাপার বলে চালাতে চেষ্টা করে বিশ্বের বুদ্ধিজীবিদেরই চূড়ান্ত অপমান করেছে। বস্তুত: এই সমস্যা একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা এবং মানববিবেকের প্রতি এটা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ।

১৪ জুলাই, ১৯৭১
….. গত ১২ জুলাইয়ে প্রকাশিত মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক-এ বলা হয় : পাকিস্তান যেদিন বাংলাদেশে সামরিক অভিযান চালানোর জন্যে সৈন্য পাঠায় সেই দিনই পাকিস্তানের মৃত্যু হয়েছে।

নিউজউইক-এ বলা হয় : ইয়াহিয়া খান সামরিক অভিযান চালানোর জন্যে বাংলাদেশে যখন সৈন্য ও সমরসম্ভার পাঠানোর কাজে ব্যস্ত ছিলো ঠিক সেই সময় পাকিস্তানের ঘরে-বাইরে সবদিক থেকেই রাজনৈতিক সমাধানের দাবী উঠছিলো। ইয়াহিয়ার সামরিক প্রস্তুতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠছিলো। দাবী উঠছিলো-পাকিস্তানের যে সঙ্কট তার সমাধান সমরসজ্জা বা সামরিক অভিযানে সম্ভব নয়। সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে। কোন রকম শর্ত আরোপ না করে গণনির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্যেই সমাধান নিহিত রয়েছে। বুলটে-বেয়োনেটে পাকিস্তানের রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান সম্ভব নয়। কিন্ত ইয়াহিয়া ও তার সামরিক চক্র ঘরে-বাইরের এই দাবী উপেক্ষা করে পাকিস্তানের গণনির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রস্তাবিত বৈঠক বাতিল করে বাংলাদেশের উপর সামরিক অভিযান চালালো।…..

নিউজউইক- উল্লেখ করে : গত সপ্তাহে ঢাকায় কয়েকজন বিদেশী কূটনৈতিক মন্তব্য করেছেন, আপোষ আলোচনার আর কোন পথই খোলা রইলো না। ইয়াহিয়ার গোঁয়ার্তুমির জন্যে আলোচনার সব পথ রুদ্ধ হয়ে গেল। আলোচনা এখন আর সম্ভব নয়। পাকিস্তান মরে গেছে এবং ইয়াহিয়া ও তার সামরিক চক্রই পাকিস্তানকে ধ্বংস করেছে।
(তথ্যসুত্র:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র – ৫ম খন্ড। পৃষ্ঠা নং ৬৬) চলবে।

পড়ুন আগের পর্ব সমূহ:
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-২৮
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-২৭

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-২৬

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-২৫

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-২৪

সম্পাদনা: এইচ চৌধুরী, গ্রন্থনায়: ইয়াসীন হীরা 

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ