21 C
আবহাওয়া
৬:০১ পূর্বাহ্ণ - জানুয়ারি ৩১, ২০২৫
Bnanews24.com
Home »  অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জামায়াত সমর্থিত!

 অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জামায়াত সমর্থিত!


বিএনএ ডেস্ক : বিএনপির সঙ্গে, অন্তর্বর্তী সরকার এবং তাদের ‘প্রধান অংশীজন’ ছাত্র সমন্বয়ক এবং জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়েছে। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ত্রিমূখী বক্তব্য পাল্টা বক্তব্যের যুদ্ধ চলছে।

এই অবস্থায় মঙ্গলবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জামায়াত সমর্থিত সরকার বলে মন্তব্য করেছে বিএনপির মূখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জামায়াতীকরণ করে ফেলেছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান করা হয়েছে জামায়াতের লোকদের।

YouTube player

প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে আয়োজিত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রিজভী।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ জানুয়ারি দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শহীদ আসাদের ৫৬তম শাহাদাতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বেশকিছু বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যদি নিরপেক্ষ না থাকে, তাহলে নির্বাচনের সময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার দরকার হবে।’

মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যের বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও তাদের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে, শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য জুলাই অভ্যুত্থানে শত শত মানুষ প্রাণ দেননি।

অন্যদিকে, বিএনপি’র বক্তব্য মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন। সংস্কার ও বিচারের নামে নির্বাচন ঝুলিয়ে রাখলে দেশ আরও বড় সংকটে পড়বে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে স্বজনপ্রীতি, এলাকাপ্রীতি এমনকি যে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনটি গড়ে উঠেছিল, সেই কোটায়ও কেউ কেউ নিয়োগ পেয়েছেন—এই অভিযোগও বেশ জোরালোভাবেই আছে। অর্থাৎ একটি বিরাট অভ্যুত্থানের পরে সত্যি সত্যিই রাষ্ট্রের খোলনলচে পাল্টে দেওয়া, তথা প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের জন্য যে ধরনের শক্তিশালী সরকার গঠন করা প্রয়োজন ছিল—সেটি শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে।

সরকারের প্রধান অংশীদার হিসেবে গণ্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে এমন কিছু বিষয় সামনে এনেছে, যেগুলো এই সময়ের ‘প্রধান’ রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে তাদের দূরত্ব আরও বাড়াচ্ছে।

অনেকেই সন্দেহ করেন, ছাত্র ও সমন্বয়কদের নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক দলটিকে নির্বাচনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হতে যথেষ্ট সময় দেওয়ার জন্যি সরকার নির্বাচন বিলম্ব করতে চায়, যাতে করে আগামীতে একটি নতুন দল ক্ষমতায় আসে। কিন্তু একটি অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ-প্রভাব ও চাপমুক্ত এবং সর্বোপরি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হলে কোনো নতুন দল, বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গঠিত কোনো দল সর্বোচ্চ কতটি আসন পাবে —সেটি বিরাট প্রশ্ন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের শেষদিকে দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ যেভাবে রাস্তায় নেমেছিলেন, সেই অনুভূতি ও উত্তেজনায় ছাত্রদের গঠিত দলকে মানুষ দলে দলে ভোট দেবে—বিষয়টি এত সহজ নয়। তবে এটা ঠিক, তরুণদের একটি বিরাট অংশের সমর্থন এই নতুন দলের প্রতি থাকবে। কিন্তু সেই সমর্থন বলে তারা বিপুল সংখ্যক আসনে জয়ী হয়ে যাবে বা সরকার গঠন করে ফেলবে—সেটি ভাবার কারণ নেই।

সাম্প্রতিক নানা ঘটনায় বিএনপির একসময়ের মিত্র জামায়াতের সঙ্গেও তাদের দূরত্ব স্পষ্ট হয়েছে। এটি আরও বাড়বে। কেননা রাজনীতি ও ভোটের মাঠে এখন কার্যত আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ না থাকলে জামায়াতকে সঙ্গে নেওয়ার প্রয়োজন বিএনপির নেই।

একইভাবে জামায়াতও হয়তো ভাবছে, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপিকেও তাদের দরকার নেই। বরং তারা অন্যান্য ইসলামিক দলগুলোকে একটি প্লাটফর্মে এনে বৃহত্তর জোট করে, বিএনপির বিকল্প শক্তি হয়ে উঠবে। তার সঙ্গে ছাত্রদের গঠিত দল যদি থাকে, তাহলে সেটি আরও বড় রাজনৈতিক শক্তি হবে—তখন বিএনপি একা হয়ে যাবে। ‍এমন সমীকরণ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে জামায়াত ইসলামী।

রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। কখনও ‘ফন্দি’ কখনো ‘সন্ধি’ করে টিকে থাকতে হয়। বিএনপি, জামায়াত ইসলামী ও অন্তর্বতীকালীন সরকারের সাম্প্রতিক রাজনীতি ‘ফন্দি – সন্ধি’র বলয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে, এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সৈয়দ সাকিব 

 

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ