বিএনএ,ডেস্ক: নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর বাকি মাত্র কয়েক দিন। (এনসিটিবি) সূত্র জানায় অষ্টম ও নবম শ্রেণির তিনটি বই এখনো ছাপা শেষ হয়নি। ফলে নতুন বছরের প্রথম দিন বই উৎসবে এই দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সব বই পাচ্ছে না।
এনসিটিবি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে এবার আগেভাগে বই ছাপা ও বিতরণ শেষ করার ঘোষণা দিয়েছিল।
এনসিটিবি সূত্র বলেছে, ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ২৭ কোটি বই মাঠপর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ৪ কোটি বই এখনো উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছায়নি। এর মধ্যে অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুই বিষয়ের প্রায় ৬০ লাখ বই ছাপানো এখনো বাকি। বইগুলো হলো ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান অনুশীলন বই এবং বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ (দুই শ্রেণির বইয়ের একই নাম)। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, এই দুই শ্রেণিতে ১০টি বিষয়ে মোট বই ১১টি করে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিষয়ে বই দুটি।
আগামী বছরের জন্য প্রাথমিকে ৯ কোটি ৩৮ লাখের বেশি এবং মাধ্যমিক স্তরে সাড়ে ২১ কোটির বেশি বই ছাপানো হচ্ছে। এসব বই ছাপানো ও বিতরণে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
২০১০ সাল থেকে শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বই উৎসব পালন করা হচ্ছে। এ দিন শিক্ষার্থীরা নতুন বই নিয়ে বাড়ি ফেরে। তবে করোনাকালে এর ব্যতিক্রম ঘটেছিল। আগামী ১ জানুয়ারিও বই উৎসব পালন করা হবে।
নির্ধারিত সময়ে সব বই ছাপানো ও বিতরণ শেষ করতে না পারার কারণ জানতে চাইলে এনসিটিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুই বিষয়ের তিনটি বইয়ের পাণ্ডুলিপি চলতি ডিসেম্বরের মাঝামাঝি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ জন্য এই তিন বইয়ের কাজ মুদ্রণকারীরা দেরিতে শুরু করেছেন। এ ছাড়া শেষ মুহূর্তে বই ছাপানো ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে বদলি করাও কাজ পেছানোর অন্যতম কারণ। তাই বছরের প্রথম দিন অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না।
এনসিটিবির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান,বইয়ের কাগজের মানে ‘আপস’ করতে রাজি না হওয়ায় এনসিটিবির সাবেক সদস্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান ও বিতরণ নিয়ন্ত্রক মো. রফিকুল ইসলামকে ১৫ ডিসেম্বর বদলি করা হয়। বই ছাপার শেষ মুহূর্তে সাধারণত কোনো কর্মকর্তাকে বদলি করা হয় না। ঘটনাটি নজিরবিহীন।
বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, যথাসময়ে পাণ্ডুলিপি না পাওয়া, দরপত্রের সিদ্ধান্ত দিতে বিলম্ব, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এবারও শতভাগ বই পাবে না শিক্ষার্থীরা। ২০১৬ সাল ও গত বছরও প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কমে কাজ নেওয়ার পর নিম্নমানের নিউজপ্রিন্টে বই ছাপানোর অভিযোগ ওঠে।এবারও অসাধু মুদ্রণকারীরা নিম্নমানের নিউজপ্রিন্টে বই ছাপিয়েছেন। এসব বই হবে নিম্নমানের। অসাধু মুদ্রণকারীদের সঙ্গে ইন্সপেকশন এজেন্টের যোগসাজশের অভিযোগ রয়েছে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, বিগত বছরের চেয়ে এ বছর বই ছাপা ও বিতরণের সার্বিক অবস্থা সন্তোষজনক। প্রাক্-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত সব বইয়ের কাজ শেষ। অষ্টম ও নবম শ্রেণির তিনটি বই কিছু উপজেলায় পৌঁছানো বাকি থাকতে পারে। ১০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই পৌঁছে যাবে।
বিএনএ,নিউজ/রেহানা