বিএনএ, মহেশখালী: দেশের প্রথম ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালীতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এর কারণে ৯৬ ঘন্টা বিদ্যুতের দেখা পাননি এলাকাবাসী। কখন দেখা মিলবে তা জানেন না গ্রাহকরা। তবে দ্রুত বিদ্যুৎ দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান মহেশখালী পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুতের খুঁটি, গাছপালা এবং অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ৯৬ ঘন্টা ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে মহেশখালী। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে যোগাযোগের ও বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ২৪ ঘন্টার অধিক ছিল নেটওয়ার্ক সমস্যা। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে মহেশখালীতে তৈরি হয়েছে মোমবাতির সংকট। বাড়ছে কেরোসিনের দামও। অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি, গাড়িভাড়া বৃদ্ধি করছে একটি অসাধু চক্র। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি কাউকে।
স্থানীয়রা আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ২০ হাজারের অধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানের বরজ ও কৃষিজমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে এনজিওকর্মীরা ও ঋণের টাকার জন্য চাপ দেওয়ায় বিপাকে পড়ছেন অনেক নিম্নআয়ের মানুষ। দ্বীপে ক্ষতির পরিমাণ দেড় কোটি টাকার উপরে হবে বলে জানান স্থানীয়রা।
জানা যায়, মহেশখালীর একটি ইউনিয়নের কিছুটা অংশ সহযোগিতা পেলেও এখনো অনেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার কোন সহযোগিতা পাননি অভিযোগ তাদের। এমন দুর্যোগে দেখা মিলেনি অনেক জনপ্রতিনিধিদের। ক্ষতিগ্রস্থদের কোন তালিকা হচ্ছে কিনা রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তথ্য দিতে পারেনি কেউ। এমন কি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। এরূপ কর্মকান্ডকে উদাসীনতা বলে দায়ী করছেন সুশীল সমাজ। এদিকে মহেশখালীর হিন্দু পাড়ায় গাছের চাপায় হারাধন নামে একজনের মৃত্যু হয় এবং কয়েকজন আহত হন।
স্থানীয় শাহ আলম, আলী আকবর ও হাসান আলী জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গাছ পড়ে আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। এখনো পর্যন্ত কোন সহযোগিতা পাননি। খুব কষ্টে দিনকাটাচ্ছি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। এখন কিভাবে নতুন ঘর তৈরি করবো তা জানিনা!
প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় মহেশখালী নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক এস.এম রুবেলের সাথে। তিনি জানান, এখনো পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের কোন তালিকা তৈরি হয়নি। অনেক পরিবার সহযোগিতা পাননি। দ্রুত তাদের সহযোগিতা দেওয়া উচিত। দূর্যোগে অনেকে অসাধু উপায় অবলম্বন করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ না থাকার কারণে মানুষের অনেক ভোগান্তি হচ্ছে। কাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে এতে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়বে।
এস.এম রুবেল বলেন, সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণে দূর্যোগের সঠিক তথ্য কেউ জানতে পারেননি। মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা দেওয়ার প্রতি জোর দেন তিনি।
মহেশখালী পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসার জানান, ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। যার কারণে সম্পূর্ণ লাইন চালু হতে ১-২ মাস সময় লাগবে। দ্রুত বিদ্যুৎ দেওয়ার চেষ্টায় একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে বলে জানান এবং গ্রাহকদের অপেক্ষা করতে বলেন।
এবিষয়ে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্যের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ না করাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিএনএ/কাইমুল ইসলাম ছোটন, ওজি