স্বপ্ন আজ সত্যি হলো। খুলে গেছে বাংলাদেশের অর্থনীতির আরও একটি স্বপ্নদুয়ার। চীনের সাংহাই শহরের আদলে এক নগর দুই শহর এই ভিশন নিয়ে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দৈরঘ্যের এই টানেল নির্মাণ করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। নানা প্রতিকুল পরিস্থিতিতে স্বপ্নের এই প্রকল্প এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করলেন দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেল। বঙ্গবন্ধু টানেলের মাধ্যমে নতুন একটি মাইল ফলক র্স্পশ করেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম শহর ইতোমধ্যে চীনের সাংহাই শহরের আদলে “ওয়ান সিটি টু টাউন” বা “এক নগর দুই শহর” এর মডেলে গড়ে উঠতে শুরু করেছে।
কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীর আনোয়ারা-কর্ণফুলী এখন শিল্পনগরে পরিণত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও চীন সরকার ‘জি টু জি’ অর্থায়নে টানেলটি নির্মাণ করা হয়। মোট ব্যয় প্রায় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে কর্ণফুলী নদীর দুই কিলোমিটার ভাটির দিকে টানেলের নগর প্রান্তের মুখ। টানেলটি কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে নগর প্রান্তে পতেঙ্গা নেভাল একাডেমির কাছ থেকে শুরু হয়ে পূর্ব প্রান্তে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা ও কর্ণফুলী সার কারখানার মাঝখান দিয়ে আনোয়ারা প্রান্তে পৌঁছেছে।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং এই প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন।
বঙ্গবন্ধু টানেলকে ঘিরে চট্টগ্রাম বন্দর সম্প্রসারণ, কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের বিকাশ, মাতারবাড়ী পাওয়ার হাব, মহেশখালী গভীর সমুদ্র বন্দর, টেকনাফ স্থল বন্দরকে এ পরিকল্পনার আওতায় এনে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে যুক্ত করে বিশাল অর্থনৈতিক নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। কক্সবাজার পর্যন্ত শক্তিশালী সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি করতে নেওয়া হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকার আরও একটি মেগা প্রকল্প।
বঙ্গবন্ধু টানেল ঘিরে ইতোমধ্যে কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ে প্রতিষ্ঠা হয়েছে কোরিয়ান ইপিজেড, সাদ মুসা শিল্পপার্ক। প্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে চায়না ইকোনমিক জোন। তৈরি পোষাক শিল্প-কারখানা, জাহাজ নির্মাণ, ভোজ্যতেল, মাছ প্রক্রিয়াকরণ, ইস্পাত, সিমেন্টসহ অন্তত একশ শিল্প কারখানা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনও শুরু করেছে।
বিএনএ নিউজ/ শাম্মী, ওজি, ওয়াইএইচ