17 C
আবহাওয়া
৯:৩০ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ

বিএনএ ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পিতা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, বাঙালি জাতীয়তাবাদের স্বপ্নদ্রষ্টা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। বাবা-মায়ের জ্যেষ্ঠকন্যা শেখ হাসিনা মধুমতিপাড়ের শান্ত, সুনীল গ্রামটিতে বেড়ে ওঠেন।

১৯৫৪ সালে পরিবারের সঙ্গে ঢাকা আসেন তিনি। ১৯৬৫ সালে আজিমপুর গার্লস বালিকা বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় বিশিষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনার বিয়ে হয়।

২৫ মার্চ কাল রাতে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার পর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের কারাগারে রাখা হলো। দুই ভাই মুক্তিযুদ্ধে গেছেন। মা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, বোন রেহানা ও ছোট্ট রাসেলসহ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পাকিস্তানিদের হাতে বন্দি ছিলেন শেখ হাসিনা। বন্দি অবস্থায় তার পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বাবার দেয়া নামে ছেলের নাম রাখলেন জয়। দেশ স্বাধীন হলো। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটিকে গড়তে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানিদের পুড়িয়ে দেয়া প্রিয় স্বদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়তে চাইলেন জাতির জনক। বাংলার মানুষকে ভালো রাখতে চাইলেন। সেইসঙ্গে সদ্য স্বাধীন দেশে ষড়যন্ত্রও শুরু হলো। পঁচাত্তরে স্বামীর সঙ্গে জার্মানিতে গেলেন শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছোট বোন রেহানাকেও নিয়ে যান। সেখানে থাকা অবস্থায় খবর পান পরিবারের সবাইকে নৃশংসভাবে খুন করেছে বিপথগামী কিছু সেনা সদস্য।

এরপর শুরু হয় নির্বাসিত জীবন। ১৯৮১ তে আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে দেশে ফেরেন তিনি। তখনও শুকায়নি বঙ্গবন্ধুর রক্তের দাগ। দুঃসহ সেই স্মৃতিকে সঙ্গী করেই পাহাড়সম দায়িত্ব নিয়ে গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে নামেন শেখ হাসিনা। একদিকে স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষু, অপরদিকে দলে বিভক্তি। দিন গড়িয়ে রাত কেটেছে পথে, ছুটে বেরিয়েছেন দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। কখনও পায়ে হেঁটে কখনো ট্রাক কিংবা ট্রেন, সব মিছিলেই ক্লান্তিহীন বঙ্গবন্ধু কন্যা। ৮১ থেকে শুরু হওয়া নতুন এক সংগ্রামে তৃণমূলের মধ্যমণি হয়ে ওঠেন তিনি। লাখো কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতাসীনদের ভিত নাড়িয়ে দিছেন বারবার।

এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তার নেতৃত্বেই রাজপথ কেঁপেছে। স্বৈরাচারের পতনের পর গণতন্ত্রের অভিযাত্রা শুরু হয়। ক্ষমতায় যেতে না পারলেও থামেনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ভোট ভাতের লড়াই। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে ২১ বছর পর ক্ষমতায় আনেন শেখ হাসিনা। সবহারা একজন শেখ হাসিনা বাবার মতোই বাংলার মানুষের ভাগ্যেন্নয়নে দিনরাত পরিশ্রম করতে থাকেন। সব সূচকে এগোতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু আবারও ছন্দপতন। ২০০১ সালে সূক্ষ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে বিএনপি-জামায়াত জোট। সারাদেশে কায়েম হয় সন্ত্রাসের রাম রাজত্ব। আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহস যোগান শেখ হাসিনা।

বোমা বন্দুকে কখনও পিছু হটেননি শেখ হাসিনা। অন্তত ১৯ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে প্রতিবারই প্রিয় নেত্রীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন দলের কর্মীরা।এক এগারোর সেনা সমর্থিত সরকার যখন  শেখ হাসিনাকে কারারুদ্ধ করে তখন কর্মীরাই জীবন বাজি রেখে তাদের প্রিয় নেত্রীকে মুক্ত করে আনেন।

২০০৮ সালে আবারও ক্ষমতায় আসে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। এবার অন্যরকম লড়াই শুরু করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। রাজনীতির অভিধানে যুক্ত করলেন উন্নয়নের গণতন্ত্র। জাতির পিতার স্বপ্নের সফল বাস্তবায়নের দিকে মনোযোগী হন তিনি। আগুন সন্ত্রাস, হেফাজতের তাণ্ডব মোকাবেলা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জাতির পিতার খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করে বাঙালিকে কলঙ্কমুক্ত করেন শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু কন্যার উন্নয়ন দর্শনের মূলে বাংলার মানুষ। কারণ বাবার মতো বাংলার মানুষই যে তার একমাত্র আপনজন। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রোরেল, কর্ণফুলি টানেল, একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল- সবই তার অবদান। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, মাছ উৎপাদনে চতুর্থ। দেশের একজন মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকে সে স্বপ্নও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন তিনি। করোনার থাবায় যখন গোটা বিশ্ব পর্যুদস্ত তখন শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপের কারণে শিল্প এবং মানুষ বাঁচলো।

তার রাজনৈতিক সত্ত্বাটিও অসাধারণ। সবসময় নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছেন তিনি। সকল সংকট ও আঘাত রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করেছেন। কখনো ষড়যন্ত্র বা অপকৌশল আশ্রয়  নেননি। রাষ্ট্রীয় ও সরকারি শতব্যস্ততার মধ্যেও তৃণমুলের কর্মীদের খোঁজ নেন তিনি। উন্নয়ন অগ্রযাত্রার সব অর্জনের রাজমুকুট তাই কর্মীদের উৎসর্গ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

পিতার কাছ থেকে পাওয়া নিখাঁদ দেশপ্রেম ও রাজনৈতিক বুৎপত্তি তাকে অমিত সক্ষম করেছে। ধৈর্য্যশীলতা, স্মরণশক্তি, কৃতজ্ঞতাবোধ, নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যথার্থ সিদ্ধান্ত প্রদান করে কীংবদন্তীর নেতায় পরিণত হয়েছেন শেখ হাসিনা।

বিএনএনিউজ/আরকেসি

 

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ