বিএনএ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের লইসকা বিলে নৌকাডুবির ঘটনায় ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাতেই পরিচয় নিশ্চিত হওয়া মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে প্রশাসন।
শনিবার (২৮ আগস্ট) সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ আর কোনো মরদেহ উদ্ধার হয়নি। তবে নাসরা নামের এক শিশু নিখোঁজ থাকার খবরে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নিহতরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের চিলোকূট গ্রামের আবদুল্লাহর কন্যা তাকুয়া (৮), বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের জহিরুল হক ভূইয়ার ছেলে আরিফ বিল্লাহ ওরফে মামুন ভূঁইয়া(২০), একই ইউনিয়নের গেরারগাঁও গ্রামের মালু মিয়ার স্ত্রী মঞ্জু বেগম (৬০), একই গ্রামের জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম(৪০), তার কন্যা মুন্নী বেগম(৬) ও একই ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের আবদুর রাজ্জাক ওরফে মন মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম।
আরও নিহত হয়েছেন- বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের পরিমল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জনা বিশ্বাস (৩০) ও তার কন্যা ত্রিদিবা বিশ্বাস (আড়াই বছর), একই ইউনিয়নের গেরারগাঁওয়ের আবদুল হাসেমের স্ত্রী কমলা বেগম ওরফে রওশন আরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার দক্ষিণ পৈরতলার আবু সাঈদের স্ত্রী মোমেনা বেগম (৫৫), পৌর এলাকার উত্তর পৈরতলার ফারুক মিয়ার স্ত্রী কাজলা বেগম ও পৌর এলাকার দাতিয়ারা গ্রামের হাজী মোবাশ্বের মিয়ার মেয়ে তাসফিয়া মীম (১২)।
এ ছাড়া সদর উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের মুরাদ হোসেনের ছেলে তানবীর(৮), একই ইউনিয়নের গাছতলা গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে সাজিম(৭), সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের জারু মিয়ার মেয়ে শারমীন (১৮), ময়মনসিংহ জেলার খোকন মিয়ার স্ত্রী ঝর্ণা বেগম (৫৫)। বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের কামাল মিয়ার মেয়ে মাহিদা আক্তার (৫), পত্তন ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৫৮)। বাকি ৩ জনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
নিহতের পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে।জানা গেছে, শুক্রবার বিকেল পৌনে ৬টার দিকে জেলার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ঘাট থেকে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি সদর উপজেলার আনন্দবাজার খেয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়। প্রায় ২০ মিনিট পর শেখ হাসিনা সড়কের পাশে লইসকা বিলের ভাতের খলা নামক স্থানে যাত্রীবোঝাই নৌকাটিকে বালুবোঝাই একটি ট্রলার প্রচণ্ড বেগে ধাক্কা দেয়। এতে শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নৌকাটি ডুবে যাওয়ার সময় নারী, পুরুষ ও শিশুর চিৎকারে হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ সময় অন্তত অর্ধশত মানুষ সাঁতরে পাড়ে উঠতে সক্ষম হয়। পরে পাশের গ্রামের বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। ওই সময় দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজারও মানুষ জড়ো হয়। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।