28 C
আবহাওয়া
৪:৩৫ পূর্বাহ্ণ - জুন ১৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-১৩৭ (টাঙ্গাইল-৮)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-১৩৭ (টাঙ্গাইল-৮)


বিএনএ,ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম।  আজ থাকছে টাঙ্গাইল -৮ আসনের হালচাল।

YouTube player

টাঙ্গাইল -৮ আসন 

টাঙ্গাইল-৮ সংসদীয় আসনটি সখীপুর ও বাসাইল উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ১৩৭ তম আসন।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির হুমায়ুন খান পন্নি বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৮ শত ৬১ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ২৯ হাজার ৬ শত ৬০ জন। নির্বাচনে বিএনপির হুমায়ুন খান পন্নি বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬১ হাজার ৩ শত ৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের কাদের সিদ্দিকী।  নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৫৯ হাজার ৮৯ ভোট।

৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: বিএনপির হুমায়ুন খান পন্নিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি, ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। ভোটারবিহীন এই নির্বাচনে বিএনপির হুমায়ুন খান পন্নিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সপ্তম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের কাদের সিদ্দিকী বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।  নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৪ হাজার ২ শত ৬৩ জন।  ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৬০ হাজার ১ শত ২৯ জন।  নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাদের সিদ্দিকী বিজয়ী হন।  নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৩ শত ৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির কামরুজ্জামান খান।  ধানের শীষ প্রতীকে  তিনি পান ৩৫ হাজার ৩ শত ৪৩ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচন: কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী বিজয়ী হন

২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।  নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৬৫ হাজার ৮ শত ১৪ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭ শত ৩২ জন। নির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী বিজয়ী হন।  গামছা  প্রতীকে  তিনি পান ৮০ হাজার ৫ শত ৫৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম খান।  নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৫৪ হাজার ৫ শত ৫ ভোট।

নবম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের শওকত মোমেন শাহজাহান বিজয়ী হন

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৭০ হাজার ৯ শত ৮৩ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৪২ হাজার ১ শত ৩৩ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শওকত মোমেন শাহজাহান বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮ শত ৭০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির আহমেদ আযম খান।  ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬৫ হাজার ৫ শত ২১ ভোট।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের শওকত মোমেন শাহজাহান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শওকত মোমেন শাহজাহান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।

নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার দুসপ্তাহের মধ্যেই শওকত মোমেন শাহজাহানের মৃত্যু হয়। শূন্য আসনে উপনির্বাচনে তার ছেলে অনুপম শাহজাহান জয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

একাদশ সংসদ নির্বাচন: নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোয়াহেরুল ইসলাম বিজয়ী হন

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬ শত ৪৬ জন।  ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৮৩  হাজার ৭ শত  ৫৫ জন।

নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৫ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের জোয়াহেরুল ইসলাম, ধানের শীষ প্রতীকে জাতীয় ঐক্যের শরিক, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের কুড়ি সিদ্দিকী, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির কাজী আশরাফ সিদ্দিকী, আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফি সরকার ও হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আব্দুল লতিফ মিয়া প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

নির্বাচনে  আওয়ামী লীগের জোয়াহেরুল ইসলাম বিজয়ী হন।  নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ৭ হাজার ৬ শত ৭৯ ভোট।  তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের কুড়ি সিদ্দিকী। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৭১ হাজার ১ শত ৪৪ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পঞ্চম ও ষষ্ঠ সংসদে বিএনপি, সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ, এবং অষ্টম সংসদে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ বিজয়ী হয়।

দৈবচয়ন পদ্ধতিতে জরিপ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর টাঙ্গাইল-৮ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, টাঙ্গাইল-৮ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৫৪.৭৪% ভোটার।  প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪৫.৫৭%, বিএনপি ৪৭.৩৫%, জাতীয় পাটি ৪.৮৭%,  স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ২.২১%  ভোট পায়।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৮.৩৯% ভোটার।  প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৬২.৬৪%, বিএনপি ২২.০৭%, জাতীয় পাটি ১২.৭৯%, জামায়াতে ইসলামী ১.৬১%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য  ০.৮৯% ভোট পায়।

২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭১.০০% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৮.৮৮%, ৪দলীয় জোট ২৭.০৯%, জাতীয় পার্টি ০.৬৯%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৪৩.৩৪%  ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৮.৮৯% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৫৫.৮৯%, ৪দলীয় জোট ২৭.২০%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১৬.৯১%  ভোট পায়।

টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম প্রকাশ ভিপি জোয়াহের।  দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন।  এছাড়া আরও মনোনয়ন চাইবেন সাবেক সংসদ সদস্য ও সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনুপম শাহজাহান জয়, সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত সিকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য অধ্যক্ষ সাঈদ আজাদ, ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট আতাউল মাহমুদ, বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সরকার মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ফারুক ।

এই আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারেন সাবেক সংসদ সদস্য কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। এবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটভূক্ত হতে পারে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। সেক্ষেত্রে কপাল পুড়তে পারে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর।

বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মোহাম্মদ হাবিব ও সাবেক ছাত্রদল নেতা কৃষিবিদ দেওয়ান শফি শাওন।

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, টাঙ্গাইল ৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনটি একক কোন দলের ঘাঁটি নয়।  ১৯৭৩ সালের প্রথম দিক থেকে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদে কখনো আওয়ামী লীগ,কখনো বিএনপি, কখনো জাতীয় পার্টি  আবার কখনো কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এই আসনে প্রতিনিধিত্ব করেন। বর্তমান সংসদ সদস্য তৃনমূল থেকে উঠে আসা জোয়াহেরুল ইসলাম। ছাত্র রাজনীতি শেষে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।  এছাড়া সখীপুর ও বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে  তিনি বেশ জনপ্রিয়।  পাঁচ মিশালী এই  আসনে দলীয় ভিত ও ব্যক্তি ইমেজ বড় ফ্যাক্টর। এ আসনে সবচেয়ে বেশি ব্যক্তি ইমেজ রয়েছে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযুদ্ধকালীন কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান কাদের সিদ্দিকীর। মুক্তিযুদ্ধের সময় সখীপুরেই ছিল তার বাহিনীর হেডকোয়ার্টার। দলের সাংগঠনিক ভিত্তি তেমন শক্তিশালী না হলেও কাদের সিদ্দিকীর ব্যক্তি ইমেজ ও তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে তার  যোগাযোগ রয়েছে। ফলে এই আসনে বিএনপি আওয়ামী লীগের মাথা ব্যথার কারণ কাদের সিদ্দিকী।

বিএনপির আহমেদ আযম খান ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। শুধু রাজনীতি নয়, জিয়া পরিবারের আয়কর আইনজীবী হওয়ায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই তার সমর্থকরা মনে করছেন কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে তার দলীয় মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে জাতীয় সংসদের ১৩৭ তম সংসদীয় আসন টাঙ্গাইল-৮ আসনটিতে কে রাজত্ব করবেন তা নির্ভর করছে জাতীয় রাজনীতির সমিকরণের ওপর।

বিএনএ/ শিরীন, রেহানা, ওজি, ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ