বিএনএ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের হালিশহরে কাঁচাবাজারের চাঁদা নিয়ে কথা-কাটাকাটির জের ধরে আজাদ(৩০) নামে এক যুবক খুন হয়। রোববার(২৮ মে) ভোরে নয়াবাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আজাদ পাহাড়তলী থানার নয়াবাজার নাজির বাড়ীর মোহাম্মদ লাভু ইব্রাহিমের ছেলে ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভোরে নয়াবাজার মোড়ে ৭/৮ জন সন্ত্রাসী আজাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের ছুরিকাঘাতে আজাদের পেটের নাড়িভুড়ি বেরিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আজাদকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এ দিকে আজাদকে হারিয়ে আহাজারি করছে স্বজনরা । তার স্ত্রী কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই। আমার এই দুই সন্তানের কি হবে। কোথায় যাবো আমি । আমার তো আর কেউ রইলো না। অবুঝ শিশুরা বড় হলে আমি কি জবাব দিবো।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই নুরুল আলম আশেক গণমাধ্যমকে জানান, নয়াবাজার এলাকায় ছুরিকাঘাতে আহত এক যুবককে চমেক হাসপাতালে আনার পর সকাল ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা যায়, নগরের নয়াবাজার এলাকায় চাঁদাবাজিতে বাধা দিয়েছিলেন আজাদ। পরবর্তীতে তিনি নামাজে যাওয়ার সময় পথ আটকে তাকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। এসময় গুরুতর আহত অবস্থায় আজাদকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় স্বজনরা জানতে চাইলে খুনিদের নাম (আবুল হাসনাত রাজু প্রকাশ রাজু, ফয়সাল ও ওসমান) বলেন যান আজাদ। তার জবানবন্দির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
নিহত আজাদের বড় ভাই মতিউর রহমান বলেন, আমার ভাইকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে রাজু, ফয়সাল ও ওসমানসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা। তারা সবাই প্যানেল মেয়র ও রামপুরা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুস সবুর লিটনের ভাই খোকনের অনুসারী। আমরা ভাই হত্যার বিচার চাই। শুধুমাত্র চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় তারা আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
জানা গেছে, অভিযুক্তরা সবাই কাউন্সিলর খোকনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন দোকানে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জুয়া ও মাদকের কারবার করে এলাকায় রীতিমতো ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে তারা। কাউন্সিলর লিটন ও খোকনের সাথে মূল অভিযুক্ত আবুল হাসনাত রাজুর তোলা একাধিক ছবি রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
পাহাড়তলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রোজিনা আক্তার বলেন, মৃত্যুর আগে ভিকটিম খুনিদের নাম বলে গেছেন৷ সে হিসেবে আমরা ধরে নিয়েছি এরাই খুনি। ভিকটিমের দেয়া তথ্যমতে রাজু, তার ভাই রাজীব, ওসমান ও ফয়সাল এ খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
বিএনএ/ ওজি