স্পোর্টস ডেস্ক : সাকিব আল হাসানের রংপুরকে হারিয়ে স্বপ্নের ফাইনালে ফরচুন বরিশাল। রাইডার্সদের স্বপ্নভঙ্গ করে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে তামিম বাহিনী। পহেলা মার্চ বিপিএল এবারের আসরের ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হবে তারা।
বুধবার(২৮ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হয় রংপুর রাইডার্স আর ফরচুন বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করে রংপুর ৭ উইকেটে ১৪৯ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ১৮.৩ ওভারেই জয় নিশ্চিত করে তামিম ইকবালের দল।
মাঠে নামার আগেই টসে হেরে পিছিয়ে পড়ে রংপুর, আর মাঠে নামার পর শুরুতেই তাদের থেকে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন সাইফুদ্দীন। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা রংপুরকে দ্বিতীয় ওভারেই ব্যাকফুটে ঠেলে দেন এই পেসার৷ জোড়া উইকেট তুলে নেন তিনি।
প্রথম বলেই শেখ মেহেদীকে মুশফিকের ক্যাচ বানান সাইফ, ৫ বলে ২ রান করেন তিনি৷ শেষ বলে সাকিবও অনুসরণ করেন একই পথ। উইকেটের পেছনে মুশফিককে ক্যাচ দেন ৪ বলে ১ করে। রংপুর শিবির যেন চুপসে যায় এক নিমিষে। ১০ রানে ২ উইকেট হারায় তারা।
রনি তালুকদারকে ফেরান মায়ার্স। পঞ্চম ওভারে ১২ বলে ৮ রানে ফেরেন রনি। দলকে পথ দেখানোর চেষ্টা করেন জিমি নিশাম। নিকোলাস পুরানকে নিয়ে ধরার চেষ্টা করেন হাল। তবে পেরে উঠেননি। মিরাজের বলে পুরান ফিরলে ভাঙে ৩০ রানের জুটি। ১২ বলে ৩ করেন এই ক্যারিবীয়।
এরপর শুরু হয় জেমস ফুলারের আঘাত। ৯.১ ওভারে দারুণ ছন্দে থাকা জিমি নিশামকে ফেরান তিনি। তার ব্যাটে আসে ২২ বলে ২৮ রান। আর ১৫তম ওভারে জোড়া আঘাত আনেন তিনি, এবার নাবিকে (১২) ও নুরুল হাসান সোহানকে ফেরান ১৪ রানে। তাতে ভেঙে যায় রংপুরের ইনিংসের মেরুদণ্ড, ৭৭ রানে ৭ উইকেট হারায় তারা।
সেখান থেকেই শুরু হয় শামিম ঝড়। ওবেদ ম্যাকয়ের এক ওভারেই নেন ৩ ছক্কায় ২৬ রান! ২০ বলে পূরণ করেন ফিফটি। যা ছুঁয়েছেন সতীর্থ সাকিবের সাথে যৌথভাবে আসরের সবচেয়ে কম বলে৷ শেষ পর্যন্ত ২৪ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। আবু হায়দার রনির সাথে যোগ করেন ৩৩ বলে ৭২ রান।
বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবালকে ফেরান আবু হায়দার রনি। ৮ বলে ১০ করে ফেরেন তিনি। একই ওভারে মেহেদী মিরাজকেও (৮) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রনি।
তবে বিপদ বাড়তে দেননি মুশফিকুর রহিম ও সৌম্য সরকার। সৌম্য ১৮ বলে ২২ রানে ফিরলেও দলের সংগ্রহ পৌঁছায় তখন ১০ ওভারে ৩৯ রান। কাইল মায়ার্স পাঁচে নেমে শুরু থেকেই ছিলেন আগ্রাসী, ১৪ বল খেলেই যোগ করেন ২৮ রান। ফারুকী এসে থামান মায়ার্স ঝড়, ১৪.৩ ওভারে দলীয় ১১৯ রানে ফেরেন মায়ার্স।
তবে দলের জয় নিশ্চিত করেই ফেরেন মুশফিক। ডেভিড মিলারকে নিয়ে দলকে তুলে দেন ফাইনালে। মুশফিক ৩৮ বলে ৪৭ ও মিলার অপরাজিত থাকেন ১৮ বলে ২২ রানে।
বিপিএলের প্রথম আসরে ২০১২ সালে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে ফাইনালে হারে বরিশাল বার্নার্স।
এরপর ২০১৫ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে হেরে রানার্স আপ হয় বরিশাল বুলস।
২০২২ সালে অষ্টম আসরেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে হেরে যায় ফরচুন বরিশাল।
এবার ১০ম আসরের ফাইনালেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে পেল ফরচুন বরিশাল। বিপিএলে এনিয়ে তৃতীয়বার ফাইনালে দেখা হচ্ছে বরিশাল-কুমিল্লাকে।
অতীতে দুইবারের দেখা কুমিল্লার বিপক্ষে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করে বরিশাল। এবার হয়তো সেই আক্ষেপ ঘুচাতে চাইবে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন দলটি।
কুমিল্লা অতীতের নয় আসরের মধ্যে রেকর্ড চারবার শিরোপা জিতে নেয়। এবার তারা টানা তিন এবং পঞ্চম শিরোপার স্বপ্ন দেখছে।
এসজিএন/ হাসনা