বিএনএ, ঢাকা: মিয়ানমারে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় রাখাইন রাজ্যে এক বছরের ও বেশি সময় ধরে বিদ্রোহী ও জান্তা বাহিনীর অব্যাহত সংঘর্ষ চলছে, যার প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশেও। বিশেষ করে বান্দরবানের ঘুমধুম ও তমব্রু সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
অন্যদিকে এসব রাজ্যের অনেক মানুষ পালিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতে আশ্রয় নিচ্ছে। কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের মিয়ানমারের ওপারে গোলাগুলি ক্রমে বেড়েই চলেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সীমান্ত এলাকায় দিনরাত গোলাগুলির শব্দ শুনা যাচ্ছে।
২৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে টেকনাফের হোয়াইক্যং উলুবনিয়া সীমান্তের মিয়ানমারের ওপারের মর্টারশেল ও গোলাগুলির শব্দ এপারে ভেসে আসতে থাকে। ফলে সীমান্ত এলাকার লোকজন ভয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে থাকে। বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড উলুবনিয়া গ্রামে নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বসতঘরে টিনের দরজা ছিদ্র হয়ে ঘরে ঢুকে পড়ে একটি গুলি। পরে বিজিবির সদস্যরা খবর পেয়ে এসে গুলিটি নিয়ে যায়।’ এ খবর দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজনের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
২৮ জানুয়ারি সকালেও সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি শব্দ শুনতে পেয়েছে, দূরে আগুনের ধোয়াও দেখেছে বলে জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা। সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় যেকোনো ধরনের গোলার ব্যবহার করার আগে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদানের রীতি রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তে এসব গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও বাংলাদেশের সঙ্গে কোনরকম তথ্য আদান-প্রদান করা হয়নি।
টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনেছি মিয়ানমার থেকে এপারে উলুবনিয়া সীমান্তের একটি বসতঘরে গুলি এসে পড়েছে। গোলাগুলির এ ঘটনায় স্থানীয়দের নিরাপদে থাকার জন্য বলা হয়েছে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল মোস্তফা লালু বলেন, ‘টেকনাফের হোয়াইক্যং উলুবনিয়া,তুলাতুলি ও কানজরপাড়া সীমান্তের মিয়ানমারের ওপারে সপ্তাহজুড়ে চলছে প্রচুর গোলাগুলি। ভয়ে কেউ বাড়ি-ঘরে থাকতে পারছেন না। চিংড়ি ঘেরেও যাচ্ছেন না। এর আগে ২০২২ সালে ২৮ আগষ্ট দুপুর আড়াইটার দিকে বান্দরবান জেলার নাইক্ষংছড়ির তমব্রু সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ড থেকে আধা কিলোমিটার ভেতরে উত্তর পাড়ার কাছে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া দুটি মর্টার শেল এসে পড়েছিল।
এ দিকে রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’
বিএনএ/ওজি/এইচমুন্নী