বিএনএ, রাঙামাটি : পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার তিনটি সংসদীয় আসন ২৯৮, ২৯৯ ও ৩০০ নং। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তিন আসনে পুরাতন মাঝিতে ভরসা রাখছেন। এখানে পুনরায় নৌকার মাঝি হয়েছেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, দীপংকর তালুকদার ও বীর বাহাদুর ঊশৈসিং।
২৬ নভেম্বর (রোববার) বিকালে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮, ২৯৯ এবং ৩০০ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর নামও ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় তিনি খাগড়াছড়িতে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে, রাঙামাটিতে দীপংকর তালুকদারকে ও বান্দরবান আসনে বীর বাহাদুর ঊশৈসিংয়ের নাম ঘোষণা করেন।
এর আগে খাগড়াছড়ি আসনে ৮জন, রাঙামাটি আসনে ১১জন ও বান্দরবান আসনে দুইজন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
খাগগড়াছড়ি যারা মনোনয়ন ফরম নিয়েছিলেন তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সাবেক সাংসদ যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সংরক্ষিত মহিলা সাংসদ বাসন্তী চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা, মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি তাই থো অং মারমা, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ভবেশ্বর রোয়াজা নিখি ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সমীর দত্ত চাকমা।
রাঙামাটি-২৯৯ আসনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১১জন। তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজা, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী কামাল উদ্দীন, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার চাকমা, আওয়ামীলীগ নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমরেশ দেওয়ান, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জয়সেন তঞ্চঙ্গ্যা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ- রাঙামাটি জেলা সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা অমর কুমার দে, অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন স্নেহ কান্তি চাকমা, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর মতিন ও মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী।
বান্দরবান-৩০০ আসনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ২ জন। তাঁরা হলেন- পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমান।
এদিকে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর তিন পার্বত্য জেলায় আনন্দ মিছিল করেছেন নেতাকর্মীরা। রাঙামাটিতে দীপংকর তালুকদারকে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা দেওয়ায় শহরে তাৎক্ষণিক আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। একইভাবে বীর বাহাদুর ঊশৈসিংকে পুনরায় মনোনয়ন প্রদান করায় বান্দরবান শহরে আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে পুনরায় মনোনয়ন প্রদান করায় নেতাকর্মীরা খাগড়াছড়ি শহরে আনন্দ মিছিল বের করেন।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সদস্য দীপংকর তালুকদার ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন লাভ করেন এবং এর মধ্যে ২০০১ ও ২০১৪ ছাড়া বাকি চারবার নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেন। টানা সপ্তমবারের মতো তিনি এবারো নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর ১৯৯১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রত্যেক নির্বাচনে নৌকার টিকিট পেয়ে টানা ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারো তিনি টানা সপ্তমবারের মতো নৌকার মনোনয়ন নিশ্চিত করলেন। অন্যদিকে খাগড়াছড়ি আসনের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবারসহ টানা তিনবার নৌকার মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন। ২০১৪, ২০১৮ সালে তিনি টানা দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তৃতীয় বারের মতো তিনি এবারো দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন। আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনএনিউজ/কাইমুল ইসলাম ছোটন/এইচ.এম।