বিএনএ ডেস্ক: বড় বড় ঋণখেলাপিরা কি বিচারের ঊর্ধ্বে থাকবে? যারা অর্থশালী তারা কি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে? ঋণখেলাপিরা আইনের চেয়ে শক্তিশালী নয়। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক রাঘববোয়ালদের নয়, শুধু চুনোপুঁটিদের ধরতে ব্যস্ত। এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক থেকে বিসমিল্লাহ গ্রুপের ঋণ জালিয়াতির মামলায় ব্যাংকটির সাবেক কর্মকর্তা এ এস এম হাসানুল কবিরের জামিন বাতিল চেয়ে আবেদনের শুনানির সময় আদালত এ মন্তব্য করেন। ২০১৩ সালে এই মামলা হয়। কিন্তু এতোদিনে মামলাটির তদন্ত শেষ না হওয়ায় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম এ আজিজ খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বিসমিল্লাহ গ্রুপের এমডি খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ মামলা করেন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ইস্কাটন শাখার ম্যানেজার নকীবুল ইসলাম। এ মামলায় ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর ব্যাংকটির তৎকালীন ডেপুটি ম্যানেজার এএসএম হাসানুল কবীর ও জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মান্নাতুল মাওয়াসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়।
মামলায় ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর এই দুইজনকে জামিন দেন বিচারিক আদালত। পরে সেই জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে এ মামলায় পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
রোববার ওই দুই জনের জামিন বাতিল প্রশ্নে রুল শুনানিতে হাইকোর্ট দুদকের আইনজীবীদের উদ্দেশ করে বলেন, ১১০ কোটি টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ২০১৩ সালে মামলা হয়েছে। এ মামলায় এখনো কেন বিচার হচ্ছে না। এদের ধরবে কে? আপনারা ধরতেছেন চুনোপুঁটি। তখন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, অবশ্যই দুদকের ধরা উচিত। এদের ধরবে।
এসময় আদালত বলেন, কবে ধরবেন? মামলা ২০১৩ সালে। চার্জশিট ২০১৫ সালে। এরপর ফের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কোর্ট। এত বছর হয়ে গেলো। এগুলোর কি হবে? এতে বোঝা যায় কি যারা অর্থশালী পাওয়ারফুল তারা বিচারের ঊর্ধ্বে? এরা ধরাছোঁয়ার বাইরে? আপনারা বিষয়টি সিরিয়াসলি নিতে দুদক চেয়ারম্যানকে বলবেন- এ ধরনের মামলাগুলো কেন শেষ হচ্ছে না। কেন প্রতিবেদন দেয়া হচ্ছে না। নয় বছর চলে গেছে। এ সময় এক আসামির আইনজীবী বলেন, আমরা তো নিম্নস্তরের ব্যাংকার। তখন আদালত প্রশ্নে করে বলেন, মামলার প্রধান আসামি খাজা সোলায়মান কে?
জবাবে খুরশিদ আলম খান বলেন, বিসমিল্লাহ গ্রুপের। সে পলাতক। এক মামলায় তার সাজা হয়েছে। তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারে আপনার কোর্টের আদেশও আছে।
তখন আদালতে অন্য মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আসেন। আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে বলেন, দেখেন অ্যাটর্নি জেনারেল। মামলার অবস্থা। ২০১৩ সালের মামলা এখনো প্রতিবেদন দেননি। ১১০ কোটি টাকার মামলা। এরপর দুদক আইনজীবী বলেন, তারা হালনাগাদ তথ্য জানাবে।
বিএনএ/এ আর