বিএনএ ঢাকা: মনোনয়ন না পেলেই একে অপরকে রাজাকার বা রাজকারপুত্র বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপরও কিছু সত্য ঘটনা রয়েছে-জানিয়ে তিনি বলেন, এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘করোনাকালীন শিল্প ও বাণিজ্য উন্নয়নে জননেত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সে সময় তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দুর্বিষহ অবস্থায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। যার সঙ্গে যার বনে না, তাকে বলে রাজাকারের ছেলে, অথবা রাজাকারের নাতি, কিংবা শান্তি কমিটির মেম্বার ছিল নানা। এসব অভিযোগ স্তূপ হয়ে গেছে পার্টি অফিস। অনুসন্ধান করে প্রকৃত লোকদেরই মনোনয়ন দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যেও কিছু ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, দলের কিছু নেতা জনগণের চেয়ে নিজের লাভ বেশি খোঁজে। একজন প্রতিনিধি, একটা কনস্টিটিউন্সির ১৩টা তাকে দেয়া হলো। একটা কেন দেয়া হলো না? অভিযোগ আসলো শান্তি কমিটির মেম্বারের ছেলে। আজকে এই বিষয়গুলো বড়ই বেদনার বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ব্যবসায়ীরা রাজনীতি করতে পারেন। রাজনীতিকে যখন ব্যবসার হাতিয়ার করা হয়, তখন সেটি রাজনীতি থাকে না। এ দেশে ব্যবসা না করেও রাজনীতিবিদ ব্যবসায়ী হয়ে যান বলে জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই করোনাকালে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন তিনি নিজের জন্য নয়, দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে রাজনীতি করেন। ভ্যাকসিন সংগ্রহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পলিসি এবং দক্ষতা সারা দুনিয়ায় প্রশংসিত হয়েছে। তিনি বিশ্বের প্রশংসিত প্রধানমন্ত্রী। একজন রাজনীতিবিদ পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে ভাবে, আর শেখ হাসিনা পরবর্তী জেনারেশন নিয়ে ভাবেন।
দেশের অবকাঠামোখাতে আওয়ামী লীগের সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা তার ম্যাজিক্যাল লিডারশিপ দিয়ে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দিয়েছেন। আজকে পাহাড়েও রাস্তাঘাটের চেহারা পাল্টে গেছে। আগামি বছর মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশের প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলার নেপথ্যে কারা জড়িত সেই ঘটনায় ‘থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে। দেশের উন্নয়নে এই সাম্প্রদায়িক শক্তি বাধা তৈরি করছে। গত ১২ বছরে কোনো ঘটনা ঘটল না কিন্তু এবার নির্বাচনে সামনে রেখে এই ধরনের ঘটনা ঘটল। সাম্প্রদায়িক শক্তি যারা একাত্তরে বাংলাদেশ চায়নি, তারা আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র করছে। তারা আবারও আগুন সন্ত্রাস, ককটেল আর পেট্রল বোমা নিয়ে ভাবছে। এই সাম্প্রদায়িক শক্তির নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। এই দলটি তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির আয়োজনে সভায় সভাপতিত্ব করেন উপকমিটির চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম আহমেদ। উপকমিটির সদস্য সচিব এবং আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও ডি-৮ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডি-৮ সিসিআই) সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম প্রমুখ।
বিএনএনিউজ/আরকেসি