বিএনএ, ঢাকা : বেসরকারি টেলিভিশনে ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পাদক এবং সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদের খতিব মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করার ঘটনার ৭ বছর পূর্ণ হলো আজ।
২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের বাসায় মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।এ ঘটনায় তার ছেলে মামলা দায়ের করেন।কিন্তু দীর্ঘদিনেও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে সিআইডি। সর্বশেষ গত ২৯ জুন মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে আদালত সাধারণ ছুটিতে থাকায় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সাধারণ ছুটি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী আগামী ৭ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এখন পর্যন্ত ৫২ বার সময় নিয়েছে তদন্ত সংস্থা।
মামলার বাদী নুরুল ইসলাম ফারুকীর ছেলে ফয়সাল ফারুকী বলেন, মামলায় ন্যায়বিচার পাবো এ নিয়ে আমরা এখনো আশাবাদী। সম্প্রতি আমাকে সিআইডিতে ডেকে নেওয়া হয়। মামলা সম্পর্কে তারা আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। অ্যাডিশনাল এসপি মো. জিসান মামলার তদন্ত পেয়েছেন। তারা আবার নতুনভাবে মামলার তদন্ত শুরু করতে চাচ্ছেন। আমাদের ফ্যামিলিরও সহযোগিতা চেয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এত বছর ধরে চিন্তা করছি। সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে সন্দেহ করছি না। অবশ্য অনেকবার বাবাকে ফোনে থ্রেট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেননি। কে থ্রেট দিয়েছে তাও বলেননি। পুরো পরিবার প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছি।
মামলা সম্পর্কে আসামিপক্ষের আইনজীবী জায়েদুর রহমান বলেন, মামলার তদন্ত সঠিক সময়ে শেষ না হওয়ায় আসামিদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রতি ধার্য তারিখে তাদের আদালতে হাজিরা দিতে হয়। এদের মধ্যে অনেকের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। আদালতে আসার খরচও থাকে না। এভাবেই তারা আদালতে এসে যাচ্ছেন। আর দীর্ঘ তদন্তের কারণে আদালত সম্পর্কে মানুষের মধ্যে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি বলেন, মামলার তদন্তে পুলিশ যদি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না পায় তাহলে তারা মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন। তাদের ভোগান্তির শিকার হতে হবে না। আর তারা যদি জড়িত থাকেন তাহলে তাদের বিচার শুরু হবে। কিন্তু এতদিন তাদের আদালতে তো আসতেই হচ্ছে।
ওই সময়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে হাদিসুর রহমান সাগর নামে একজনকে আটক করা হয়। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে আরো নতুন নতুন আসামি জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে কেউ দেশে আছে, আবার কেউ দেশের বাইরে।আসামির জবানবন্দি থেকে আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়।
এখন পর্যন্ত মামলার আসামি হাদিসুর রহমান সাগর, আব্দুল গাফ্ফার, মিঠু প্রধান ও খোরশেদ আলম নামে চার জন কারাগারে রয়েছে। আর ইঞ্জিনিয়ার রাকিব, তারেকুল ইসলাম মিঠু, আলেক ব্যাপারি, মোজাফ্ফর হোসেন জামিনে আছে।
বিএনএ নিউজ/সাহিদুল/এইচ.এম।