23 C
আবহাওয়া
১:৩২ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ১৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » আনোয়ারায় এলএসডির মাঝে এফএমডি আতঙ্কে খামারিরা

আনোয়ারায় এলএসডির মাঝে এফএমডি আতঙ্কে খামারিরা

আনোয়ারায় এলএসডির মাঝে এফএমডি আতঙ্কে খামারিরা

।। এনামুল হক নাবিদ ।।

বিএনএ, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের আনোয়ারায় গত দুই মাসে লাস্পি স্কিন ডিজিজ বা (এলএসডি) রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক গবাদিপশু। এবার এলএসডির মাঝে আতঙ্কে ছড়াচ্ছে গবাদিপশুর আরেক সংক্রমণ জাতীয় ভাইরাস রোগ ফোরটেন মাউথ ডিজিজ বা (এফএমডি)।

এদিকে গত দুই মাসে তিনশ’র অধিক গবাদিপশুর এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়েছে বলছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসাপাতাল সূত্র। এদিকে এলএসডির প্রার্দুভাবের মাঝে এফএমডি নামের আরেক রোগে গত দুই সপ্তাহে অন্তত ৬৫টি গরু আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটিনারি হাসপাতালের এসএলও রতন কান্তি মহাজন।

এদিকে গবাদি পশুর জন্য প্রাণঘাতি না হলেও বাছুরের জন্য খুব মারাত্মক বলে মনে করেন প্রাণি চিকিৎসকরা। উপজেলায় এই দুই রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করায় উপজেলার শত শত ক্ষুদ্র খামারিরা বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটিনারি হাসপাতালের তথ্য মতে, গত দুই মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক গরু। এর মাঝে সুস্থ হয়েছে ২৫০টি। প্রতিদিন গড়ে চিকিৎসা নিতে আসে ৬ থেকে ৭টি গরু। গত দুই সপ্তাহে ফোরটেন মাউথ ডিজিজ বা (এফএমডি) রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৮০টি গরু। এই রোগের আক্রান্ত গরু চিকিৎসা নিতে আসে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪টি গরু।

আনোয়ারায় এলএসডির মাঝে এফএমডি আতঙ্কে খামারিরা
গবাদিপশুতে ফোরটেন মাউথ ডিজিজ (এফএমডি) আতঙ্ক

চিকিৎসকরা বলছেন, গত দুই মাস ধরে মহামারি আকারে ছড়াচ্ছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি)। ফলে গবাদিপশু দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। বেশ কয়েক জায়গায় কম বয়সি গরু বাছুর মারা যাচ্ছে খেতে না পেরে। এই রোগ গবাদিপশু খুব দুর্বল হয়ে পড়লে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ক্ষমে যায়। ফলে এই রোগে আক্রান্ত পশুগুলো ফের এফএমডিতে আক্রান্ত হচ্ছে।

চিকিৎসকরা আরও বলছেন, এই দুটি রোগ ভাইরাস জাতীয় রোগ। এই জাতীয় রোগে আক্রান্ত হলে সুস্থ হতে অন্তত দেড় থেকে দুই মাস সময় প্রয়োজন হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, ক্ষুরা রোগ পুরাতন হলেও ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ নামের ভাইরাস রোগটি দেশে বিগত দুই তিন বছর থেকে দেখা যাচ্ছে। এফএমডির ভ্যাকসিন খামারিরা মোটামুটি নিতে আগ্রহী হলেও ও এলএসডির ভ্যাকসিন থাকলেও খামারিরা পশুকে ভ্যাকসিন দিতে তেমন একটা আগ্রহী দেখা যায় না। ফলে একটা সময় উপজেলাজুড়েই প্রকোপ বিস্তার করে থাকে ভাইরাস সংক্রমিত এই রোগটি। তবে ক্ষুরা রোগের চিকিৎসা থাকলেও এ রোগের এখনো কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকায় আক্রান্ত গরু নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে প্রান্তিক খামারিদের।

এদিকে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, এলএসডি কম বেশি সারা বছর থাকলেও এফএমডি বর্ষাকালে বেশি দেখা যায়। একের পর এক দুইটি ভাইরাস জাতীয় রোগ একটি পশু যখন আক্রান্ত হয় তখন গবাদিপশুর জন্য এটি খুব ভয়ের কারণ।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ক্ষুদ্র খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গরুর গায়ে প্রথমে গুটি গুটি দেখা যায়। নতুবা কোনো এক জায়গায় ফোলে যায় তারপর শরীর থেকে পানি বের হয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এরপর দু-এক দিনের মধ্যেই গরুর শরীরজুড়েই গুটির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেয়ে ক্ষত থেকে রক্ত বের হয়। এ সময় গরুর শরীরে অতিরিক্ত তাপমাত্রা দেখা দেয় এবং গরু আহার ছেড়ে দেয়। অনেক সময় গরুর বুকের নিচে পানি জমে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এছাড়া ক্ষতস্থান থেকে মাংস খসে খসে পড়ে। সঠিক সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা কিংবা রোগের লক্ষণ জানা না থাকায় বেশ কিছু গরুর অবস্থা অবনতি হয়ে মৃত্যু হয়। এর মধ্যে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভিলপুর গ্রামের হারুন ও ডুমুরিয়া এলাকার আরফাত নামের দুই খামারির ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত দুইটি গরু মারা যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন, এ সময়ে সারাদেশে কম বেশি এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গবাদি পশু। আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা দিচ্ছি এ নিয়ে খামারিদের হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ এটি একটি ভাইরাস জাতীয় রোগ। সময়মত চিকিৎসা নিলে পশু সুস্থ হয়ে উঠবে। খামারিদের সঠিক সময়ে গবাদিপশুকে টিকা দিতে সচেতন হতে বলেন।

বিএনএনিউজ/বিএম

Loading


শিরোনাম বিএনএ