27 C
আবহাওয়া
২:২৭ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » মায়ের কোলে চড়ে স্বর্ণার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ

মায়ের কোলে চড়ে স্বর্ণার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ


বিএনএ, ববি: জন্মগতভাবেই শরীরের নিচের অংশ (দুই পা) প্যারালাইজড নাজমুন্নাহার স্বর্ণার। শনিবার (২৭মে) মায়ের কোলে চড়েই “গ” ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্যরা স্ট্রেচার চেয়ারে করে স্বর্ণাকে পৌঁছে দেয় পরীক্ষা কেন্দ্রে।

বরিশালের স্বরূপকাঠিতে বেড়ে উঠা স্বর্ণা ছোটবেলা থেকেই মায়ের কোলে বসেই চলাচল করেন। মায়ের কোলে করেই স্কুল কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। স্বর্ণার স্বপ্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার।

মা মনিজা বেগম জানান “মেয়ে এমন শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হলেও ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি প্রবল আগ্রহ তাঁর।”

স্বর্ণার কাছে তাঁর সংগ্রামের কথা জানতে চাইলে বলেন, “ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহের কথা ছিল আমার। আমার বন্ধু বান্ধবরা অনেকে প্রথম প্রথম ভিন্নভাবে নিলেও আস্তে আস্তে তাঁরা আমাকে সাহায্য করত সার্বিক বিষয়ে। আমার সংগ্রামের সারথি আমার মা। মায়ের কোলে উঠেই আজকে আমার এই পর্যন্ত আসা। আমার ইচ্ছা একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার”

জানা যায়, মেধাবী নাজমুন্নাহার স্বর্ণারা তিন বোন, তিন বোনের মধ্য ছোট স্বর্ণা। পিতা বৃদ্ধ শাহাদাৎ হোসেন হাওলাদার একজন দিনমজুর। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ, মা বৃদ্ধা মনিজা বেগম গৃহিণী। স্বর্ণা ইন্টারমিডিয়েট পড়াশোনা করেছেন স্বরূপকাঠি সরকারী কলেজে। তাঁর এসএসসির রে জাল্ট জিপিএ ৪.৭৫ এবং এসএসসির রিজাল্ট জিপিএ ৪.৫৯।

মা মনিজা বেগম বলেন, ” জন্মগত ভাবেই স্বর্ণার শরীরের নিচের অংশ অচল। ছোটবেলা থেকে আমি কোলে কাঁধে করে স্কুল কলেজে নিয়ে যেতাম। আজও আমি কোলে করে তাঁকে নিয়ে এসেছি ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ানোর জন্য। স্কুল কলেজ সব জায়গায় পরীক্ষায় সে ভালো ফলাফল করত। ছোটকাল থেকেই ও পড়াশোনায় মনোযোগী। ওর বাপের বয়স হয়েছে তিনি অসুস্থ, আমারও বয়স হয়েছে আগের মত আর শক্তি নেই। সব মিলিয়ে চলছে কষ্টের ওপরে। আল্লাহ যদি মেয়েটার স্বপ্ন পূরণ করে এতেই আমাদের শান্তি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, “আজকে একজন ভর্তি পরীক্ষার্থী তাঁর মায়ের কোলে উঠে এসেছিলেন পরীক্ষা দিতে। আমরা বিএনসিসির সদস্যদের সহায়তায় স্ট্রেচারে করে কেন্দ্রে পৌঁছে দিই এবং ঐ কক্ষের শিক্ষকেরা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সার্বিক বিষয়ে সহযোগীতা করেছেন। পরীক্ষা শেষে আমরা তাঁর মায়ের কাছে পৌঁছে দিই৷ বিষয়টি নিশ্চয়ই ইতিবাচক। এতটা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অদম্য ইচ্ছা শক্তি দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীর যেন কাক্ষিত স্বপ্ন পূরণ হয় সেই আশা করছি।”

বিএনএ/ রবিউল ইসলাম,ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ