বিএনএ , রাবি : ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ২৫টি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন। শনিবার (২৭ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
কর্তৃপক্ষের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে: প্রক্টর কর্তৃক ক্যাম্পাসে ও সংলগ্ন এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা, ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর তাদের করণীয় নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয় তৎপরতা অব্যাহত রাখা, একাডেমিক পর্যায়ে সভার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে পরীক্ষা পূর্ববর্তী সময় থেকে পরীক্ষাচলাকালীন নিরাপত্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ সভা সম্পন্ন করা, সিটি মেয়রের নেতৃত্বে রাজশাহীর সুধীজন, সাংস্কৃতিক কর্মী, শহর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী, মেস মালিক, পরিবহণ মালিক সমিতি এবং অটোরিক্সা মালিক-শ্রমিক সমিতির সাথেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মতবিনিময় সম্পন্ন, অসাধুচক্রের সদস্যদের তাৎক্ষণিক শাস্তি বিধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করা, ভর্তি-পরীক্ষা চলাকালে রাবি চিকিৎসাকেন্দ্র পরিচালিত একটি মেডিকেল টিম কাজ করবে। সার্বক্ষণিকভাবে ৪টি অ্যাম্বুলেন্সও থাকবে। এছাড়াও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন পরিচালিত ২ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম এবং ২টি অ্যাম্বুলেন্স চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করবে।
পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ১১টি ওয়াটারপ্রুফ টেন্টসহ শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) অভিভাবকদের বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি টেন্টে অভিভাবকদের বসার জন্য ২০০টি করে চেয়ার থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণভাবে ব্যবহারের জন্য ১২টি স্থানে ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকছে। বিষয়টি প্রচারের জন্য ক্যাম্পাসের ১০টি স্থানে সহজে দৃশ্যমান ব্যানার ও নির্দেশিকা থাকবে।
এছাড়াও বিএনসিসি/রোভার স্কাউট/রেস্তারগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ১১টি হেল্পডেস্কের মাধ্যমে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সহযোগিতা প্রদান করবে। এসব হেল্পডেস্কে পানির ব্যবস্থাও থাকবে। ভর্তি-পরীক্ষা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সকল ধরনের প্রচারণামূলক লিফলেট বিতরণ নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানানো হয়।
পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন আবাসিক হলে সীমিত আকারে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও নারী অভিভাবকদের অবস্থানের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম ৯০ নম্বর বাসায় সীমিত ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনোরূপ হয়রানি ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড এবং দোকানগুলোতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও খাদ্যের অতিরিক্ত মূল্য আদায় করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে, পরীক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো রকমের গুজবের (সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হলেও) বিষয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা জারি থাকবে
ভর্তি পরীক্ষা সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাবি প্রশাসন। এসবের মধ্যে আছে: সকাল ৮টার পর ক্যাম্পাসে কোনো প্রকার ভারী যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। ব্যক্তিগত গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন কাজলা ও বিনোদপুর গেট দিয়ে প্রবেশ করে মেইন গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কৃষি ও চারুকলা অনুষদে যাওয়ার ক্ষেত্রে মন্নুজান হল, বেগম খালেদা জিয়া হল, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন, তুঁত বাগান সংলগ্ন রাস্তাটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে, শারীরিক প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা সকল রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে রাবি উপাচার্য আরও বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি এবং অসদুপায় অবলম্বন একটি আলোচিত বিষয়। এ বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে থাকি। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায় যে, কখনও কখনও অসাধুচক্র ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী কিংবা তাদের অভিভাবকের নিকট থেকে ভর্তির সুযোগ করে দেয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ নিয়ে থাকে। এজন্য তারা কখনও কখনও শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় কাগজপত্র জমাও রাখে এবং রেজাল্ট শিটে নাম দেখেই অর্থ দাবি করে। প্রকৃতপক্ষে ঐ সকল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী নিজ যোগ্যতায় ভর্তির সুযোগ পেয়েও প্রতারণার শিকার হয়। সংশ্লিষ্ট সকলকে এমন প্রতারণার খপ্পরে না পড়ার জন্য সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানাচ্ছি।”
বিএনএ/ সৈয়দ সাকিব,ওজি